ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বীমা খাতের ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে ৩ কোটি টাকার বেশি ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ উঠেছে। গত ২০১২ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত সময়ে এ পরিমান ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোড (এনবিআর)।
সম্প্রতি কোম্পানিটিকে এ বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে এনবিআর। আগামী দুই মাসের মধ্যে ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্সকে নোটিশের জবাব দেয়ার নির্দেশ রয়েছে বলে এনবিআর সূত্রে জানা গেছে।
নোটিশে বলা হয়, বৃহৎ করদাতা ইউনিট, মূল্য সংযোজন কর, ঢাকার কর্মকর্তারা গত ২ নভেম্বর ২০১৫ তারিখ ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির হেড অফিস আকষ্মিক পরিদর্শন করেন। এসময় প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করা হয়। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির কম্পিউটারে রক্ষিত তাদের ব্রাঞ্চ ওয়াইজ বিজনেস সামারি প্রিন্ট করে নিরীক্ষার জন্য ‘মূসক-৫’ এর মাধ্যমে আটক করা হয়।
প্রতিষ্ঠানটির ব্রাঞ্চ ওয়াইজ বিজনেস সামারিতে দেখা যায়, ২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোম্পানিটির মোট প্রিমিয়ামের পরিমাণ ২৪৪ কোটি ৯৭ লাখ ২ হাজার ৩৮২ টাকা। অব্যাহতি প্রাপ্ত প্রিমিয়িামের পরিমাণ ৮৩ কোটি ৪৬ লাখ ৯৮ হাজার ১২৪ টাকা।
বিজনেস সামারিতে প্রদর্শিত মোট প্রিমিয়াম ২৪৪ কোটি ৯৭ লাখ ২ হাজার ৩৮২ টাকা হতে দাখিলপত্রে প্রদর্শিত অব্যাহতি প্রাপ্ত প্রিমিয়াম ৮৩ কোটি ৪৬ লাখ ৯৮ হাজার ১২৪ টাকা বাদ দিলে মূসক আরোপযোগ্য প্রিমিয়ামের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৬১ কোটি ৫০ লাখ ৪ হাজার ২৫৮ টাকা।
এই প্রিমিয়ামের ওপর ১৫% হারে মূসকের পরিমাণ ২৪ কোটি ২২ লাখ ৫০ হাজার ৬৩৮.৭০ টাকা। কিন্তু দাখিলপত্র অনুযায়ি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ উক্ত সময়ে মূসক পরিশোধ করেছে ২০ কোটি ৬৭ লাখ ৯৩ হাজার ২৭৪.৫০ টাকা। অর্থাৎ ৩ কোটি ৫৪ লাখ ৫৭ হাজার ৩৬৪.২০ টাকা মূসক বাবদ কম পরিশোধিত হয়েছে।
কর কর্তৃপক্ষের ওই নোটিশে ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্সের রাজস্ব ফাঁকির এ কার্যক্রমকে মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ এর ৬, ৩২ ও ৩৫ ধারা ও মূল্য সংযোজন কর বিধিমালা, ১৯৯১ এর বিধি ১৭, ২২, ২৩ ও ২৪ এর লঙ্ঘন এবং একই আনের ধারা ৩৭ এর উপ-ধারা (২) এ দফা (গ) ও দফা (ড) এ বর্ণিত অপরাধ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে কোম্পানিটি এনবিআরের এমন অভিযোগের সাথে একমত নয়। এ বিষয়ে ইস্টল্যান্ডের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) আব্দুল হামিদ বলেন, এনবিআর যে আয়ের ওপর মূসক ফাঁকির অভিযোগ এনেছে সেটা ছিল আমাদের কো-ইন্স্যুরেন্স। কো-ইন্স্যুরেন্স গুলো সাধারণত একাধিক কোম্পানি করে থাকে এবং এখানে একটি লিডার কোম্পানি থাকে। ইন্স্যুরেন্সের কাজটা লিডার কোম্পানি নেয় এবং এর দায় পার্সেন্টেজ অনুযায়ী সহযোগী কোম্পনিগুলোকে ভাগ করে দেয়। একই ভাবে কো-ইন্স্যুরেন্সের মাধ্যমে যে পরিমান প্রিমিয়াম আয় হয় তা থেকে লিডার কোম্পানি ভ্যাট পারিশোধ করে এবং ২.৫ শতাংশ হাড়ে সার্ভিস চার্জ নেয়। এরপর যা থাকে সহযোগী কোম্পানিগুলোকে সেই পার্সেন্টেজ অনুযায়ী প্রিমিয়াম দেয়া হয়। আর আমরা সেসব কো-ইন্স্যুরেন্সের সহযোগী প্রতিষ্ঠাণ হিসেবে কাজ করি এবং আমাদের লিডার কোম্পানি মুসক পরিশোধ করেছে। তার সব ডাটা আমাদের কাছে রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমাদেরকে এ বিষয়ে যে পরিমান সময় দেয়া হয়েছে তার অনেক আগেই জবাব দিব। সব ডাটা আমরা রেডি করছি এবং খুব জোড় ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে আইনজিবীর দ্বারা এ বিষয়ে জবাব দেয়া হবে।
শেয়ারবাজারনিউজ/রু