কিডনি রোগের চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত
শেয়ার বাজার ডেস্ক: রক্তের সাধারণ একটি পরীক্ষা ২০ বছর আগে বলে দেবে আপনি কিডনির কোন রোগের ঝুঁকিতে রয়েছেন কিনা। এক গবেষণায় এমনটা বলা হয়েছে। আমেরিকান সোসাইটি নেফ্রোলজি থেকে প্রকাশিত জার্নালে এমন আবিষ্কারের কথা বলা হয়েছে। এ গবেষণা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরে অবস্থিত জন হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক।
গবেষনায় বলা হয়েছে, যদি কারো দেহে ‘মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ’ উচ্চ মাত্রায় উপস্থিত থাকে তাহলে তার কিডনির জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি শতকরা ২৫ ভাগ কমে যায়। যাদের দেহে এ উপাদানটি কম তাদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি বেশি। এ পরীক্ষাটি করা হয়েছে ৯ হাজার মানুষের ওপর। তাতে দেখা গেছে যেসব ব্যক্তির দেহে মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ রয়েছে উচ্চ পরিমাণে তাদের জন্য সুখবর। এর ফলে কিডনির জটিল রোগ মোকাবিলায় নতুন পথ দেখাতে পারে।
উল্লেখ্য, ফুসফুস ও ন্তন ক্যান্সারে যে পমিাণ মানুষ মারা যায় তার চেয়ে বেশি মানুষ মারা যান কিডনি রোগ সিকেডি’তে। এসব রোগে যারা আক্রান্ত তাদের জন্য ধূমপান, উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার, চিনিযুক্ত খাবার, প্রচুর পরিমাণে মদ পান, উচ্চ মাত্রায় ব্যাথানাশক ব্যবহার করা এড়িয়ে চলা উচিত।
শুধু ইংল্যান্ডে এ রোগে আক্রান্ত ১৮ লাখ মানুষ। তবে এখনও সেখানে এ রোগে আক্রান্ত অনেক মানুষ আছেন, যাদের দেহে পরীক্ষা চালানো হয় নি। কিডনি যখন রক্ত থেকে কম পরিমাণ বর্জ্য উপাদান আলাদা করে তখনই কিডনি অসুস্থ বলে ধরা হয। এক্ষেত্রে শক্তি উৎপাদনকারী মাইটোকন্ড্রিয়া সেই সমস্যা সমাধান করতে পারে বলে বিশ্বাস করেন গবেষকরা।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ২ কোটি ৬০ লাখ মানুষ অর্থাৎ প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে শতকরা ১৩ ভাগ মানুষ কিডনি রোগ সিকেডি’তে আক্রান্ত। কিডনি রোগের নানাবিধ কারণ আছে। এক্ষেত্রে মাইটোকন্ড্রিয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। তাই কিডনিকে সুস্থ রাখতে মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ কি ভূমিকা রাখতে পারে তা বিশ্লেষণ করে দেখেছেন।
জন হপকিনস বিশ্বদ্যিালয়ের গবেষকরা মোট ৯০৫৮ জন রোগির ওপর তাদের গবেষণা চালিয়েছেন গড়ে ১৯.৬ বছর ধরে। তাতেই মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ’র ওই ভূমিকা ধরা পড়ে। এক্ষেত্রে রোগিদের বয়স, লিঙ্গ, জাতি, গোত্র, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্ত চাপও হিসাবের আওতায় নেয়া হয়। গবেষক দলের একজন ড. আদ্রিয়েন টিন বলে, তাদের এ গবেষণা কিডনি রোগের চিকিৎসায় নতুন মোড় এনে দিতে পারে। ঠেকানো সম্ভব সিকেডি।
এ রোগ চিকিৎসার পিছনে বছরে ইংল্যান্ডের স্বাস্থ্য বিভাগকে ১৪০ কোটি পাউন্ড খরচ করতে হয়, যেখানে উন্নত ডায়াগনোসিস ও আগেভাগে তা চিকিৎসায় এই বিপুল অর্থ বাঁচানো সম্ভব। যদিও বর্তমানে কিডনি রোগ নির্ধারণ ও তা পর্যবেক্ষণের জন্য চিকিৎসা পদ্ধতি আছে কিন্তু নতুন এই আবিষ্কার একজন মানুষ আক্রান্ত হওয়ার ২০ বছর আগেই বলে দেবে সে এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে কি না। সূত্র: ইন্টারনেট।
শেয়ারবাজারনিউজ/রু