জুন ক্লোজিংয়ের কবলে বিনিয়োগকারীরা: ফায়দা লুটছে কোম্পানিগুলো
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক,বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্যান্য কোম্পানিগুলোর হিসাব বছর জুন ক্লোজিং করতে হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) এরকম নির্দেশনা পাওয়ার পর থেকে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো তাদের হিসাব বছর জুন ক্লোজিং করার ঘোষণা দিচ্ছে। এর মধ্যে যেসব কোম্পানি ইতিমধ্যে ডিভিডেন্ড ঘোষণা করে বার্ষিক সাধারণ সভার (এজিএম) তারিখ দিয়েছে তারা ঘোষিত ডিভিডেন্ড ঠিক রেখে এজিএম স্থগিত করছে। যদিও অনেক কোম্পানি ক্যাশ ডিভিডেন্ড পাঠিয়ে দিয়েছে বা ক্যাশ ডিভিডেন্ড অন্তবর্তীকালীন ডিভিডেন্ড হিসেবে বিবেচনা করছে কিন্তু স্টক ডিভিডেন্ড পেতে বিনিয়োগকারীদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির এজিএম হওয়ার আগ পর্যন্ত। আর স্থগিতকৃত এজিএম পরবর্তীতে কবে অনুষ্ঠিত হবে তা জানার জন্য অন্তত আরো দুই থেকে তিনমাস অপেক্ষা করতে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, কোম্পানিগুলো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ১২ মাসের হিসাব অনুযায়ী। কিন্তু ১৮ মাসের হিসাব তৈরিতে বিনিয়োগকারীদের আরো বেশি ডিভিডেন্ড পাওয়ার কথা থাকলেও কোম্পানিগুলো এর কোনো ইঙ্গিত দিচ্ছে না। যদিও একাধিক কোম্পানি ক্যাশ ডিভিডেন্ডকে অন্তবর্তীকালীন ডিভিডেন্ড হিসেবে ঘোষণা দিয়ে বিনিয়োগকারীদের আশা জাগিয়ে রেখেছে। কিন্তু ১২ মাসের জন্য ঘোষিত স্টক ডিভিডেন্ড ১৮ মাসের জন্যই নির্ধারিত হবে কিনা এ বিষয়ে কোনো সুষ্পষ্ট ব্যাখ্যা দিচ্ছে না কোম্পানিগুলো।
এতে এই জুন ক্লোজিংয়ের কবলে পড়ে বিনিয়োগকারীরা প্রাপ্য ডিভিডেন্ড থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অন্যদিকে বেশিরভাগ কোম্পানি বাড়তি ডিভিডেন্ড না দিয়ে নিজেদের ফায়দা হাসিল করা যায় কিনা সে কলাকৌশল রপ্ত করছে।
উল্লেখ্য, এনবিআরের নির্দেশনা অনুযায়ী পুঁজিবাজারের ৮৮টি কোম্পানি রয়েছে যাদের হিসাব জুন ক্লোজিং করতে হবে। ব্যাংক,বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ছাড়া ডিসেম্বর ক্লোজিং রয়েছে এমন কোম্পানির সংখ্যা ৭৩টি। এছাড়া মার্চ ক্লোজিং ৫টি, এপ্রিল ক্লোজিং ২টি, জুলাই ক্লোজিং ১টি, আগস্ট ক্লোজিং ১টি, সেপ্টেম্বর ক্লোজিং ৫টি এবং অক্টোবর ক্লোজিং রয়েছে ১টি কোম্পানি।
ডিসেম্বর ক্লোজিং ৭৩ কোম্পানি হলো: আরামিট সিমেন্ট, কনফিডেন্স সিমেন্ট, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, মেঘনা সিমেন্ট, আরএকে সিরামিক, শাইন পুকুর সিরামিক, আজিজ পাইপস, বিডি ল্যাম্পস, বিডি থাই, বিএসআরএম স্টীল, বিএসআরএম লিমিটেড, গোল্ডেন সন, কেএন্ডকিউ, কেডিএস এক্সেসরিজ, মুন্নু জুট, রংপুর ফাউন্ড্রি, সিঙ্গার বাংলাদেশ, ব্যাটবিসি, বিচ হ্যাচারী, ন্যাশনাল টি, আরডি ফুডস, বিডি ওয়েল্ডিং, জিবিবি পাওয়ার, খুলনা পাওয়ার, লিন্ডে বাংলাদেশ, মবিল যমুনা, সামিট পূর্বাঞ্চল পাওয়ার, সামিট পাওয়ার, ইউনাইটেড পাওয়ার, ইনটেক অনলাইন, ইনফরমেশন সার্ভিস, আরামিট, বার্জার পেইন্টস, বেক্সিমকো, জিকিউ বলপেন, ন্যাশনাল ফিড, সামিট এ্যালায়েন্স পোর্ট, এ্যাপেক্স ফুটওয়্যার, বাটা সু, লিগ্যাসী ফুটওয়্যার, গ্রামীণ ফোন, বিডি সার্ভিস, ইউনিক হোটেল, এসিআই, এসিআই ফর্মূলেশন, এ্যাকটিভ ফাইন কেমিক্যালস, এএফসি এগ্রো, এমবী ফার্মা, বেক্সিমকো ফার্মা, বেক্সিমকো সিনথেটিক, গ্লোবাল হ্যাভী কেমিক্যাল, গ্ল্যাক্সোস্মিথ ক্লাইন, ইবনে সিনা, জেএমআই সিরিঞ্জ, ওরিয়ন ফার্মা, রেকিট বেনকিজার, রেনেটা, সালভো কেমিক্যাল, ওয়াটা কেমিক্যাল, আর্গন ডেনিমস, সিএমসি কামাল, ফ্যামিলিটেক্স, জেনারেশন নেক্সট, রিজেন্ট টেক্সটাইল, আরএন স্পিনিং, সাফকো স্পিনিং, শাশা ডেনিমস, সোনার গাঁ টেক্সটাইল, স্কয়ার টেক্সটাইল, তসরিফা ইন্ডাষ্ট্রিজ, তুংহাই নিটিং এবং জাহিন স্পিনিং মিলস লিমিটেড।
এছাড়া মার্চ ক্লোজিং কোম্পানিগুলো হলো: নাভানা সিএনজি, ম্যারিকো, স্কয়ার ফার্মা, এ্যাপেক্স স্পিনিং, স্টাইল ক্রাফট। এপ্রিল ক্লোজিং জিপিএইচ ইস্পাত এবং সায়হাম কটন। জুলাই ক্লোজিং ইস্টার্ন হাউজিং এবং আগস্ট ক্লোজিং হচ্ছে আফতাব অটো। এছাড়া সেপ্টেম্বর ক্লোজিং কোম্পানিগুলো হচ্ছে: এস আলম কোল্ড রোল্ড, জেমিনি সী ফুড, এনভয় টেক্সটাইল, এইচ আর টেক্সটাইল এবং ম্যাকসন্স স্পিনিং। এছাড়া অক্টোবর ক্লোজিং কোম্পানিটি হলো সিনো বাংলা ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড।
শেয়ারবাজারনিউজ/ম.সা