আজ: বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৪ জুন ২০১৬, মঙ্গলবার |

kidarkar

ব্লেন্ডিং প্ল্যান্ট করবে মেঘনা পেট্রোলিয়াম

megnaশেয়ারবাজার রিপোর্ট: সরকারী দ্বিতীয় কোম্পানি হিসেবে ব্লেন্ডিং প্ল্যান্ট স্থাপন করতে যাচ্ছে মেঘনা পেট্রোলিয়াম। লুব্রিকেন্ট উৎপাদন ও উৎপাদনে স্বংসম্পূর্ণ হতেই এ উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। অত্যাধুনিক এ প্ল্যান্টটি চট্টগ্রামে স্থাপন করা হবে। এ লক্ষ্যে প্রাথমিক প্রস্তুতি গ্রহন চলছে।
কোম্পানি সূত্র জানা যায়, প্রাথমিকভাবে বার্ষিক ১২ হাজার টন লুব্রিক্যান্ট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন একটি প্লান্ট স্থাপন করা হবে। পরবর্তীতে চাহিদা বাড়া সাপেক্ষে প্লান্ট সম্প্রসারণেরও পরিকল্পনা রয়েছে। মেঘনা পেট্রোলিয়ামের রিজার্ভের অর্থ থেকে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এ ব্যাপারে কোম্পানি সচিব মোঃ কামরুল হাসার শেয়ারবাজারনিউজ ডট কমকে জানান, ‘প্ল্যান্ট তৈরীর বিষয়টি এখনো একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন আসার আগ পর্যন্ত কোনো কার্যক্রম হবে না’।

মেঘনা পেট্রোলিয়ামের উপমহাব্যবস্থাপক (অর্থ ও পরিকল্পনা) মো. জসিম উদ্দিন জানান, ‘মেঘনা পেট্রোলিয়ামের ব্যবসার বড় অংশই লুব্রিক্যান্ট অয়েল। বর্তমানে আমরা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) থেকে তা কিনে বিপণন করে থাকি। লুব্রিক্যান্টের বর্ধনশীল বাজারে ব্যবসা সম্প্রসারণ করতেই নিজস্ব ব্লেন্ডিং প্লান্ট স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে’। পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন হলে কোম্পানির বিক্রি ও মুনাফা বাড়বে বলে আশাবাদী তিনি।
তিনি আরো বলেন, ‘পরিচালনা পর্ষদের নীতিগত সিদ্ধান্তের পর লুব্রিক্যান্ট স্থাপনের বিষয়টি একেবারেই প্রাথমিক অবস্থায় রয়েছে। লুব্রিক্যান্ট প্লান্ট স্থাপনে যোগ্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বাছাইয়ের জন্য পত্রিকায় একটি বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে। কোনো প্রতিষ্ঠান বাছাই করা গেলে তাদের মতামতের ভিত্তিতে প্রকল্পের আকার, ব্যয় ও সময়সীমা ঠিক করে টেন্ডার নোটিস দেয়া হবে। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), বুয়েট, পরিবেশ অধিদপ্তর, বিএসটিআই, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সব নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন নিয়ে কাজ শুরু করা হবে। তবে দুই বছরের মধ্যে একটি প্লান্টের কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে’।
জানা যায়, রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি তেল পরিশোধন ও সরবরাহকারী কোম্পানিগুলো ১৩ ধরনের জ্বালানি পণ্য উত্পাদন করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা আমদানি করা তেল পরিশোধন ও তা বিক্রি করে থাকে। অন্য পণ্যের তুলনায় লুব্রিক্যান্ট বিক্রিতে কোম্পানিগুলোর মুনাফার হার বেশি। বিপিসি ছাড়া বর্তমানে শুধু ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টসের নিজস্ব ব্লেন্ডিং প্লান্ট রয়েছে। অন্য কোম্পানিগুলো বিপিসি কিংবা ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টস থেকে কিনে লুব্রিক্যান্ট বিপণন করে থাকে। ফলে তাদের মুনাফার হারও কিছুটা কম।
পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েলের বার্ষিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে লুব্রিক্যান্ট বিক্রিতে ১০ থেকে ১৭ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা এসেছে এসব কোম্পানির। গত বছর দেশে ১৭ হাজার ৮৬৯ টন লুব্রিক্যান্ট বিক্রি কয়েছে কোম্পানি তিনটি। এর মধ্যে শীর্ষে থাকা মেঘনা পেট্রোলিয়াম লুব্রিক্যান্ট বিক্রি করেছে ৮ হাজার ৬৪৬ টন। লুব্রিক্যান্ট পরিশোধন ও বিক্রিতে এ কোম্পানির মুনাফা ছিল ৪০ কোটি ১৫ লাখ টাকা, যা মেঘনা পেট্রোলিয়ামের মোট (গ্রস) মুনাফার ১৪.০৫ শতাংশ। ওই সময়ে লুব্রিক্যান্ট বিক্রিতে দ্বিতীয় স্থানে থাকা যমুনা অয়েল পণ্যটি থেকে মুনাফা করেছে ১৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। লুব্রিক্যান্ট বিক্রির পরিমাণ ৪ হাজার ৭৮৬ টন। একই সময়ে প্রায় চার হাজার টন লুব্রিক্যান্ট বিপণন করে ১৩ কোটি টাকার বেশি মুনাফা করে পদ্মা অয়েল। লুব্রিক্যান্টে তাদের মুনাফার মার্জিন ছিল ১০.২৫ শতাংশ। ২০১৫ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরে ১০৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে মেঘনা পেট্রোলিয়াম। সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১৮.৮০ পয়সা। চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে এ কোম্পানির ইপিএস হয়েছে ১৩.০৭ টাকা। ৩১ মার্চ শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৭৭.২৯ টাকা।
গত ১৩ জুন ডিএসইতে মেঘনা পেট্রোলিয়াম শেয়ারের দর ১ দশমিক ৩ শতাংশ কমে সর্বশেষ ১৬৭.৩০ টাকায় লেনদেন হয়। দিনভর দর ১৬৭.২০ টাকা থেকে ১৬৯ টাকার মধ্যে ওঠানামা করে। গত এক বছরে এর সর্বনিম্ন দর ছিল ১৩৪.৫০ টাকা ও সর্বোচ্চ ২১৪ টাকা। ২০০৭ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত মেঘনা পেট্রোলিয়ামের অনুমোদিত মূলধন ৪০০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ১০৮ কোটি ২২ লাখ টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ৬৯৮ কোটি ১২ লাখ টাকা। মোট শেয়ার ১০ কোটি ৮২ লাখ ১৬ হাজার ১০৮টি। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ৫৮.৬৭ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়াগকারী ২৬.৬৭ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে রয়েছে বাকি ১৪.৬৬ শতাংশ শেয়ার।

শেয়ারবাজারনিউজ/ওহ/ম.সা

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.