আজ: বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৬ জুন ২০১৬, রবিবার |

kidarkar

যুক্তরাষ্ট্রে বাজার হারাচ্ছে তৈরি পোশাক

bgmeaশেয়ারবাজার রিপোর্ট : যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানগুলো সবচেয়ে বেশি পোশাক কেনে চীন থেকে। দেশটির বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের অবস্থান পঞ্চম। এ অবস্থান আরো নিচে নেমে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ইউএস ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (ইউএসএফআইএ)। এর কারণ হিসেবে বাংলাদেশ থেকে পোশাক ক্রয়ে ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানগুলোর আগ্রহ কমে আসার কথা জানিয়েছে সংস্থাটি।

চলতি সপ্তাহে ‘২০১৬ ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি বেঞ্চমার্কিং স্টাডি’ শীর্ষক একটি পর্যালোচনা প্রতিবেদন প্রকাশ করে ইউএসএফআইএ, যেখানে ক্রেতাদের অনাগ্রহের বিষয়টি ওঠে আসে।

ইউএসএফআইএর সহযোগিতায় এ পর্যালোচনা কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন ইউনিভার্সিটি অব ডেলাওয়ারের ফ্যাশন অ্যান্ড অ্যাপারেল স্টাডিজের সহকারী অধ্যাপক ড. শেং লু।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন ছাড়া মার্কিন প্রতিষ্ঠানের কাছে জনপ্রিয় দুই উৎস দেশ হলো ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশ। এ দুই উৎস থেকে ক্রয় প্রবৃদ্ধি আগামী দুই বছরও অব্যাহত থাকবে। তবে এর গতি হবে অনেক স্লথ।

তাজরীনে অগ্নিকাণ্ড ও রানা প্লাজা ধসের মতো বড় দুই শিল্প দুর্ঘটনার পর বিশ্বব্যাপী প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বাংলাদেশের সুনাম, যার ফলে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা স্থগিত করে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সরকারের এ সিদ্ধান্তে প্রভাবিত না হয়ে দেশটির ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানগুলো তখন জানিয়েছিল, বাংলাদেশ থেকে পোশাক ক্রয় অব্যাহত রাখবে তারা।

কিন্তু ইউএসএফআইএর পর্যালোচনা বলছে, এখন সেই প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসতে শুরু করেছে মার্কিন ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানগুলো। এ পর্যালোচনা জরিপে অংশ নেয়া উত্তরদাতাদের মাত্র ২২ দশমিক ৫ শতাংশ বলেছেন, আগামী দুই বছরে বাংলাদেশ থেকে পোশাক ক্রয় বাড়াবেন তারা। অন্যদিকে ৬০ শতাংশের বেশি উত্তরদাতা জানিয়েছেন, তারা ভিয়েতনাম থেকে ক্রয় বাড়াবেন। অথচ ২০১৪ ও ২০১৫ সালের পর্যালোচনা জরিপে যথাক্রমে ৬৫ ও ৪২ শতাংশ উত্তরদাতা বাংলাদেশ থেকে ক্রয় বাড়ানোর কথা বলেছিলেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রফতানি প্রবৃদ্ধিতে সম্ভাবনাময় পাঁচ শীর্ষ দেশের মধ্যে আছে বাংলাদেশ। জনপ্রিয়তা অব্যাহত থাকলেও বাংলাদেশকে অনেক প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। ফলে বাংলাদেশ নিয়ে প্রবল উত্সাহে ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। আর চীনের বিকল্প গন্তব্য হিসেবে অবস্থান সুসংসহত করতে বাংলাদেশকে আরো প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হয়ে নিজেদের সামর্থ্য প্রমাণ করতে হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি) চুক্তি করেছে। স্বাভাবিকভাবেই এ চুক্তির আওতায় থাকা ভিয়েতনামের কাছ থেকে ক্রয় বাড়াতে উদ্যোগী হচ্ছেন মার্কিন ক্রেতারা। বাংলাদেশ থেকে ক্রয় বাড়ানোর উত্সাহে ঘাটতির আরেকটি কারণ দেশটির অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক মন্দা। মার্কিন ক্রেতাদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে আমাদের কমপ্লায়েন্স ব্যবস্থাপনা ও মূল্য সক্ষমতার দিকে আরো মনোযোগ দিতে হবে বলে আমি মনে করি।’

কারখানা মালিকদের উল্লেখ করা মূল্যচাপের বিষয়টিও সমর্থন করছে ইউএসএফআইএর ওই সমীক্ষা। ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক ক্রেতাদের ব্যবসার বড় প্রতিবন্ধকতার মধ্যে রয়েছে উত্পাদন খরচ বা সোর্সিং কস্ট বৃদ্ধি। সমীক্ষায় অংশ নেয়া ৮০ শতাংশ উত্তরদাতাই উত্পাদন খরচ বা সোর্সিং কস্টকে ব্যবসার সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা ও উদ্বিগ্ন হওয়ার বিষয় মনে করেছেন। ২২ শতাংশ উত্তরদাতা উন্নয়নশীল দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতাকে প্রতিবন্ধকতা মনে করেন। এছাড়া মুদ্রার অবমূল্যায়নকে প্রতিবন্ধকতা মনে করেন ২৪ শতাংশ উত্তরদাতা।

শেয়ারবাজারনিউজ/আ

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.