আজ: বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৩ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৮ জুন ২০১৬, মঙ্গলবার |

kidarkar

পর্যবেক্ষকের কারণে ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে: মার্কেন্টাইল ব্যাংক

marcantile bankশেয়ারবাজার রিপোর্ট: পরিচালনা পর্ষদে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্যবেক্ষক থাকায় ব্যাংকের বৈদেশিক বাণিজ্যসহ অন্যান্য কর্মকাণ্ড পরিচালনা ও সম্প্রসারণে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে দাবি করেন মার্কেন্টাইল ব্যাংকের চেয়ারম্যান এম এস আহসান। তাই পর্ষদ থেকে পর্যবেক্ষক প্রত্যাহারের জন্য সম্প্রতি গভর্নর ফজলে কবিরের কাছে আবেদন করেছেন।

উল্লেখ্য, মার্কেন্টাইল ব্যাংক পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত।

২০১৪ সালের ৫ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক মার্কেন্টাইল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেয়। প্রধানত ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের অভাবে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয় বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সংক্রান্ত আদেশে উল্লেখ করে। এ ছাড়া ব্যাংকটির কিছু আর্থিক সূচক যেমন খেলাপি ঋণের হার বৃদ্ধি, নিট আয় কমে যাওয়া, ঋণ ও অগ্রিমের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণে ঘাটতি থাকা এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতাও পর্যবেক্ষক নিয়োগের অন্যতম কারণ বলে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়।

মার্কেন্টাইল ব্যাংকের আবেদনে বলা হয়েছে, মার্কেন্টাইল ব্যাংকে পর্যবেক্ষক নিয়োগের ফলে ব্যাংকের সকল প্রকার বৈদেশিক বাণিজ্যসহ ও অন্যান্য কর্মকাণ্ড পরিচালনা ও সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে এক ধরনের নেতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বোর্ডে পর্যবেক্ষক থাকায় ব্যাংক এডিবি ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের ক্রেডিট লাইনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে করপোরেট গ্রাহককে কাঙ্ক্ষিত সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের বৈদেশিক মুদ্রায় দীর্ঘমেয়াদি ঋণের জন্য মনোনীত হওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হচ্ছে না। এ অবস্থা বজায় থাকলে ভবিষ্যতে গ্রাহকদের মধ্যে আস্থাহীনতা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছে ব্যাংক।

ব্যাংকটি জানিয়েছে, গত বছর তাদের আমানত বেড়েছে ১০ শতাংশ। ঋণ বেড়েছে ৮ শতাংশ। আমদানি বাণিজ্য বেড়েছে ১২ শতাংশ। রফতানি বাণিজ্য বেড়েছে ২০ শতাংশ। অবশ্য ব্যাংকেরই তথ্যে দেখা যাচ্ছে, গত বছর পরিচালন মুনাফা কমেছে ৯ শতাংশ।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ব্যাংকটির মূল সমস্যা ব্যবস্থাপনায়, সুশাসনের অভাব তা রয়েই গেছে। অন্যদিকে খেলাপি ঋণ বেড়েছে। উপার্জন হারও আগের অবস্থায় আসেনি। এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি একই যুক্তি দেখিয়ে মার্কেন্টাইল ব্যাংক পর্যবেক্ষক প্রত্যাহারের আবেদন করলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে আরও কিছুদিন পর্যবেক্ষণে রাখার পক্ষে মত দেওয়া হয়। পরিচালনা পর্ষদে দুটি গ্রুপ স্পষ্ট। সেটা এখনও আছে। ফলে পর্যবেক্ষক প্রত্যাহার করার মতো পরিবেশ পরিচালনা পর্ষদ সৃষ্টি করতে পারেনি। ব্যাংকটির বিভিন্ন আর্থিক সূচক বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৪৮৩ কোটি টাকা, যা ওই সময়ের বিতরণ করা ঋণের ৪.১৯ শতাংশ। চলতি বছরের মার্চ শেষে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৬৮৮ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৫.৩৬ শতাংশ।

পর্যবেক্ষক ব্যাংকের পর্ষদ সভা, নির্বাহী কমিটির সভা ও অডিট কমিটির সভায় উপস্থিত থাকেন। এসব সভায় যেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়, তার ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে মতামত দিয়ে থাকেন।

এদিকে পর্যবেক্ষক নিয়োগের সময় ব্যাংকটির শেয়ারদর ছিল ১৩ টাকা। বর্তমানে ব্যাংকটির শেয়ারদর ১০ টাকা।

২০১৩ সালে ব্যাংকটি শেয়ারহোল্ডারদের ২০ শতাংশ ডিভিডেন্ড দেয়। কিন্তু এর পরের বছর ব্যাংকটির মুনাফা আশঙ্কাজনকহারে কমে যায়। তাই পরের বছরগুলোয় ডিভিডেন্ডের আকার অর্ধেকে নেমে আসে।

তবে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ব্যাংকটির ইপিএস ভাল অবস্থানে রয়েছে। তিন মাসে ব্যাংকটির ইপিএস হয়েছে ০.৫৯ টাকা। যা এর আগের বছর একই সময়ে ছিল ০.০৪ টাকা।

৩১ ডিসেম্বর, ২০১৫ নিরীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যাংকটির দীর্ঘমেয়াদি ঋণমান ‘এএ-’ এবং স্বল্প মেয়াদি ঋণমান ‘এসটি-২’।

শেয়ারবাজারনিউজ/আ

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.