ঋণের বোঝা কমাতে ফেক্টরি বিক্রি করছে লাফার্জ সিমেন্ট
শেয়ারবাজার ডেস্ক: বিশ্বের বৃহত্তম সিমেন্ট তৈরির সংস্থা লাফার্জ-হোলসিমের ভারতীয় শাখা লাফার্জের ব্যবসার একাংশ আসছে দেশীয় সংস্থা নিরমা-র ঝুলিতে।
সুইৎজারল্যান্ডের বহুজাতিকটি লাফার্জ ইন্ডিয়ার ব্যবসার একটি অংশ বেচে দিচ্ছে সাবান ও রাসায়নিক প্রস্তুতকারক নিরমাকে। হাতবদলের অঙ্ক প্রায় ৯,৪০০ কোটি টাকা (ভারতীয় রুপি)। দু’পক্ষের চুক্তিও হয়েছে। এ বার অপেক্ষা ভারতীয় প্রতিযোগিতা কমিশনের অনুমোদন পাওয়ার। তার পরেই লাফার্জের হাত ধরে সিমেন্ট ব্যবসায় জোরালো ভাবে পা রাখবে নিরমা।
তবে লাফার্জ ইন্ডিয়ার ব্যবসার হাতবদল হলেও ভারতের বাজারে আগামী দিনে সিমেন্ট বাজারে জোরালো ভাবেই উপস্থিত থাকবে লাফার্জ-হোলসিম। কারণ, এখানে তাদের অন্য দুই শাখা সংস্থা, এসিসি এবং অম্বুজা সিমেন্ট ব্যবসা করবে পূর্ণ শক্তি নিয়ে। নিরমার হাতে যাওয়া লাফার্জ ইন্ডিয়ার সিমেন্ট ব্যবসার অন্যতম বৃহৎ দুই প্রতিযোগী হিসেবেই। এই দুই সংস্থার মোট সিমেন্ট উৎপাদন ক্ষমতা বছরে ৬ কোটি টন।
কারসনভাই পটেল ১৯৬৯ সালে পথ চলা শুরু করেছিলেন একাই। ৪৭ বছর পেরিয়ে এসে ভারত ও আমেরিকায় ১২টি কারখানা রয়েছে আমদাবাদের সংস্থা নিরমা লিমিটেডের। তৈরি হয় সাবান, ডিটারজেন্ট, নুন, সোডা অ্যাশ, কস্টিক সোডা, ডিটারজেন্ট, সার ইত্যাদি। কর্মী সংখ্যা ছাড়িয়ে গিয়েছে ১৮ হাজার। ব্যবসার পরিমাণও পেরিয়েছে ৭৩০০ কোটি টাকা। এ বার লাফার্জ ইন্ডিয়ার ৩টি সিমেন্ট তৈরির কেন্দ্র ও ২টি পেষাই কেন্দ্রও ঢুকে পড়বে তাদের ঝুলিতে। সব মিলিয়ে এগুলির উৎপাদন ক্ষমতা বছরে প্রায় ১.১০ কোটি টন।
বিবৃতিতে লাফার্জ ইন্ডিয়ার দাবি, হাতবদলের প্রধান কারণ, লাফার্জ-হোলসিমের ঘাড়ের উপর চেপে থাকা বিপুল ঋণের বোঝা ছাঁটাই। সেই সঙ্গে রয়েছে লাফার্জ ও হোলসিমের সংযুক্তির সময় তাদের সামনে শর্ত হিসেবে রাখা ব্যবসা বিলগ্নিকরণের লক্ষ্য। দুই সংস্থা মিশে যাওয়ায় প্রতিযোগিতার পরিবেশ যাতে নষ্ট না হয়, তার জন্য শর্ত দেওয়া হয়েছিল যে, সারা বিশ্বে প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা-বিক্রি করতে হবে তাদের।
৯০টি দেশে ব্যবসা ছড়িয়ে থাকা লাফার্জ-হোলসিমের সিইও এরিক ওলসেনের দাবি, ‘‘নিরমার সঙ্গে চুক্তি বিশ্ব জোড়া বিলগ্নিকরণ প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এর হাত ধরে সব মিলিয়ে লক্ষ্যমাত্রার দুই-তৃতীয়াংশে পৌঁছলাম আমরা।’’ তাঁর দাবি, চলতি বছরের মধ্যে বাকিটুকুও সেরে ফেলা যাবে। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই তাদের ব্যবসা বিক্রি সম্পূর্ণ দক্ষিণ কোরিয়ায়। অল্প পরিমাণ অংশীদারি বিক্রির জন্য চুক্তি হয়েছে সৌদি আরবেও। এরিকের দাবি, নিরমা তাঁদের শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ মেনেই ব্যবসা চালাবে।
শেয়ারবাজারনিউজ/আ