বিবি’র রিপোর্ট: শক্তিশালী অবস্থানে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: শেয়ার দরের তুলনায় মুনাফা দেওয়ার হিসেবে এগিয়ে আছে দেশের পুঁজিবাজার। বরাবরের মত সর্বশেষ প্রান্তিকেও উপমহাদেশের বড় অর্থনীতির দেশের তুলনায় ডিভিডেন্ড ইয়েল্ডের পরিমাণে এগিয়ে আছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। ভারত, শ্রীলংকা এমনকি উন্নত দেশের কাতারে চলে আসা থাইল্যান্ডের তুলনায় বাংলাদেশে বিনিয়োগে মুনাফার হার বেশি পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় এমন তথ্যই উঠে এসেছে। দেশের কেন্দ্রিয় ব্যাংক এ সমীক্ষায় এশিয়ার পুঁজিবাজার তথ্য পর্যালোচনা উপাত্ত হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানা যায়।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি ২০১৬ অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকে দেশের পুঁজিবাজারের ডিভিডেন্ড ইয়েল্ডের পরিমান ৩.৮৯ যা উপমহাদেশের বড় দুই পুঁজিবাজার ভারত ও শ্রীলংকার তুলনায় অনেকটাই বেশি। সর্বশেষ প্রান্তিকে ভারত ও শ্রীলংকার ডিভিডেন্ড ইয়েল্ডের পরিমাণ হয়েছে ১.৪৬ ও ২.৪৮। বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ প্রত্যাশার তুলনায় শেয়ারদর অনেক নীচে থাকায় ডিভিডেন্ড ইয়েল্ডের পরিমাণ বেশি প্রতীয়মান হচ্ছে। অন্যদিকে বাজার বিশ্লেষকদের মতে, দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করার জন্য এখনই সেরা সময়। তাই অপেক্ষাকৃত কম বিনিয়োগেই অধিক মুনাফা করা সম্ভব। বিশ্লেষকরা বলছেন, যথাযথ প্রচার-প্রচারণা ও উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচীর মাধ্যেমে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ানো সম্ভব হত। এমনকি এর প্রভাব এর মধ্যেই বাজারে পড়তে শুরু করেছে।
এমনকি, শেয়ারপ্রতি মূল্য আয় অনুপাতের (পিই রেশিও) বিচারেও উপমহাদেশের দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান শক্তিশালী। ভারত, শ্রীলংকা ও থাইল্যান্ডের তুলনায় বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের পিই রেশিও কম অর্থাৎ বাজার পরিস্থিতি অধিক বিনিয়োগ উপযোগী। অর্থবছরের উল্লেখিত প্রান্তিকে ডিএসই’র সার্বিক পিই রেশিও’র পরিমাণ ছিল ১৪.৮০। যেখানে একই সময় ভারতের ১৯.১২, শ্রীলংকার ১৫.২৯ ও থাইল্যান্ডের পিই রেশিও ছিল ২০.১১।
কোম্পানির শেয়ারদরের সঙ্গে বাৎসরিক ডিভিডেন্ড দেওয়ার অনুপাতকে ডিভিডেন্ড ইয়েল্ড বলে উল্লেখ করা হয়। অর্থাৎ, বাজারে কোম্পানির শেয়ারদর কমলে অথবা ডিভিডেন্ড দেওয়ার পরিমাণ বাড়লে ডিভিডেন্ড ইয়েল্ড বাড়বে। এ হিসেবে ভারত কিংবা শ্রীলংকায় না করে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করা হলে বিনিয়োগকারীরা অপেক্ষাকৃত কম বিনিয়োগে বেশি মুনাফা করতে পারবেন। এর প্রভাবে সর্বশেষ এ প্রান্তিকে দেশের পুঁজিবাজারে বিদেশী বিনিয়োগের পরিমাণও আগের তুলনায় ১০০ কোটি টাকার অধিক পরিমাণে বেড়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ২০১৫-২০১৬ হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত বিদেশি এবং প্রবাসীরা এক হাজার ৫০ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছেন। এর আগে দ্বিতীয় প্রান্তিকে অর্থাৎ অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এ তিন মাসে ৮২০ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছিলেন। সুতরাং দ্বিতীয় প্রান্তিকের তুলনায় তৃতীয় প্রান্তিকে বিদেশিদের শেয়ার কেনা ২৮ শতাংশ বেড়েছে।
অন্যদিকে, পিই রেশিও কম থাকায় তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর অতিমূল্যায়িত হয়নি বলে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। এমন অবস্থায় বিনিয়োগ বোর্ডের আন্তরিক উদ্যোগ পুঁজিবাজারে নতুন বিনিয়োগের ক্ষেত্র তৈরী করতে পারবে বলে মনে করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সূত্রগুলো।
শেয়ারবাজারনিউজ/ওহ/আ