লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত হতে পারে সিভিও পেট্রোকেমিক্যালের
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: কনডেনসেট (গ্যাসের উপজাত) বাজারে ছেড়ে দিয়ে জ্বালানি তেল ভেজাল করার অভিযোগ উঠেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল রিফাইনারি লিমিটেডের বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগের কারণে প্রথম পর্যায়ে জ্বালানি তেলের উপজাত কনডেনসেট বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে পেট্রোবাংলা। অবশ্য অভিযোগ প্রমাণিত হলে সিভিও পেট্রোকেমিক্যালের লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করা হবে। বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল পেট্রোবাংলার কাছ থেকে কনডেনসেট (গ্যাসের উপজাত) কেনে। কনডেনসেট পরিশোধন করে এর থেকে পেট্রল, অকটেন ও অন্যান্য জ্বালানি তেল উৎপাদন করে বিপিসি (বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন) এর কাছে বিক্রি করে। কিন্তু অভিযোগ আছে সিভিও পেট্রাকেমিক্যাল পেট্রল পাম্প মালিকদের সঙ্গে যোগসাজশে ক্রয় করা কনডেনসেট পরিশোধন (রিফাইন) না করেই পুরোটাই ভেজাল আকারে পাম্পগুলোতে বিক্রি করে দিচ্ছে। এই ভেজাল তেল ব্যবহার করায় গাড়ির ইঞ্জিন নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই বিকল হয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি দুষণ হচ্ছে পরিবেশও।
জ্বালানী মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের জুলাই মাস থেকে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত পেট্রোবাংলা থেকে সিভিও পেট্রো ক্রয় করেছিল ১৯ হাজার টন কনডেনসেট। আইন অনুযায়ী পুরোটাই বিপিসি’র কাছে বিক্রি করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও তারা বিক্রি করেছে মাত্র ৭৯২ টন (৯ লাখ ৯০ হাজার লিটার) পেট্রল। বাকি ১৮ হাজার ২০৮ টন কনডেনসেটের হিসাব নেই। ক্রয় করা কনডেনসেট দিয়ে অন্য কোনো জ্বালানি তৈরি করেছে কিনা সে সংক্রান্তও কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি।
মন্ত্রণালয়ের তদন্তে সিভিও পেট্রোর বিরুদ্ধে পেট্রোবাংলার কাছ থেকে ৪৪ টাকায় কনডেনসেট ক্রয় করে তা কোনো রকম পরিশোধন ছাড়াই ভেজাল আকারে পেট্রল, অকটেন ও ডিজেল বলে পেট্রল পাম্পের কাছে ৭০-৭২ টাকা দরে বিক্রি করে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর এর পুরো টাকাই প্রতিষ্ঠানটির উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পকেটে গিয়েছে বলে তদন্তে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মন্ত্রণালয়ের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে জানান, সিভিও পেট্রোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে সিভিও পেট্রোর কাছে জ্বালানি তেলের উপজাত কনডেনসেট বিক্রি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করা হবে বলে জানান তিনি।
জানতে চাইলে সিভিও পেট্রোর উপব্যবস্থাপনা পরিচালক নিজাম উদ্দিন বলেন, জ্বালানি মন্ত্রণালয় যেভাবে অভিযোগ করছে তা পুরোপুরি সঠিক নয়। তদন্ত শেষ হওয়ার আগে আমাদের কনডেনসেট সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু বিধিবিধান অনুসরণ করেই আমরা যাবতীয় কাজ করেছি। আমাদের বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা সাময়িক। আশা করছি খুব শিগগিরই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেবে কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, রিফাইনারিগুলো পেট্রোবাংলার কাছ থেকে প্রতি লিটার কনডেনসেট ক্রয় করে ৪৪ টাকা করে। আর বর্তমানে প্রতি লিটার পেট্রল ৭৮ টাকা ও ডিজেল বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা করে। অভিযোগ আছে- কতিপয় অসাধু রিফাইনারি পেট্রোবাংলার কাছ থেকে ৪৪ টাকায় কনডেনসেট ক্রয় করে তা কোনো রকম পরিশোধন ছাড়াই ভেজাল আকারে পেট্রল, অকটেন ও ডিজেল বলে পেট্রল পাম্পের কাছে ৭০-৭২ টাকা দরে বিক্রি করে দিচ্ছে।
শেয়ারবাজারনিউজ/আ