আলোচনার বাইরে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: ব্যাপক আলোচনায় থাকতে থাকতেই আলোচনার টেবিল থেকে হারিয়ে গেছে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ইস্যু। দেশের পুঁজিবাজারকে শিল্প বিনিয়োগবান্ধব করে গড়ে তুলতে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল সহায়ক হবে বলে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালানোর পরও এ নিয়ে আগ্রহী হয়নি অধিকাংশ সম্পদ ব্যবস্থাপক প্রতিষ্ঠান।
দেশের পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ভেঞ্চার ক্যাপিটালের নীতিমালা অনুমোদন করার পর বেশকিছু অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি ভেঞ্চার ক্যাপিটালের ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে ওঠে। এর মধ্যেই দুই-একটি কোম্পানি অভিযোগ করে, ভেঞ্চার ক্যাপিটালের লাইসেন্স দেওয়ার ব্যাপারে নিয়ন্ত্রক সংস্থা আন্তরিক নয়। একটি কোম্পানি এর মধ্যেই দাবী করে বসে রাষ্ট্রয়াত্ব একটি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ভেঞ্চার ক্যাপিটালের লাইসেন্সের বিনিময়ে মোটা অঙ্কের অর্থ দাবী করছে। ফলে আগ্রহী বেশকিছু অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি ভেঞ্চার ক্যাপিটালের লাইসেন্স নেওয়ার জন্য এগোয়নি। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ৪টি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি অলটারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট রুলসের অধীনে ভেঞ্চার ক্যাপিটালের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, দেশের ভেঞ্চার ক্যাপিটাল লাইসেন্স নেওয়া কোম্পানিগুলো ইতিমধ্যে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড প্রাইভেট ইক্যুইটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ভিসিপিইএবি) নামে একটি সংগঠনও প্রতিষ্ঠা করে। অথচ কর্মকান্ডের প্রশ্নে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
এ প্রসঙ্গে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মোঃ সাইফুর রহমান শেয়ারবাজারনিউজ ডট কমকে বলেন, ‘চারটি কোম্পানি ভেঞ্চার ক্যাপিটালের লাইসেন্স নিয়েছে বলে জানি। এখন পর্যন্ত কোনো ফান্ড গঠনের প্রস্তাব এসেছে বলে শুনিনি। তবে কোম্পানিগুলোকে লাইসেন্স গ্রহনের দুই বছর পর্যন্ত ফান্ড গঠনের সময় দেওয়া হয়েছে। ফান্ড গঠনের জন্য প্রক্রিয়াগত কিছু সময় হয়ত প্রয়োজন হবে। তাই এখনো কেউ আবেদন করেনি’।
এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট পুঁজিবাজারে বিশ্লেষক ও অর্থনীতিবিদ ড.আবু আহমেদ শেয়ারবাজারনিউজ ডট কমকে বলেন, ‘আমাদের দেশের পুঁজিবাজারে এখনো এ ধরনের পণ্য আনার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত নয়। তারপরও বিএসইসি বাজার স্থিতিশীল করতে এসব পণ্য আনতে চাচ্ছে এটা প্রশংসনীয়। তবে বাস্তবায়ন করতে কতটা সময় লাগবে তার ওপর নির্ভর করছে সাফল্য’।
ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম বা কোম্পানি নির্দিষ্ট উদ্দেশে তহবিল বা ফান্ড উত্তোলন করে৷ সাধারণত বিত্তশালীদের এই ফান্ডে বিনিয়োগ করার জন্য উত্সাহিত করা হয়৷ ঝুঁকি বেশী থাকার কারণে সাধারণ এবং খুচরা ব্যবসায়ীদের আহ্বান করা হয়না৷ যেহেতু ফান্ড বা তহবিল সংগ্রহ করে বিনিয়োগের জন্য, এজন্য তারা ব্যবস্থাপনা ফি নিয়ে থাকে৷ ভেঞ্চার এর মেয়াদ ৫ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত হয়৷ ভেঞ্চার ফান্ডে যারা বিনিয়োগ করে তাদের লিমিটেড পার্টনার বা এলপি বলে, আর যারা ফান্ড ব্যবস্থাপনা ও বিনিয়োগ করে তাদের জেনারেল পার্টনার বা জিপি বলে৷ ভেঞ্চার ফার্ম বিনিয়োগের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়৷ এই বিনিয়োগ সাধারণত ৩ থেকে ৮ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে৷ বিনিয়োগ পার্টনারশীপের মাধ্যমে হয় তাই মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে সুবিধাজনক সময়ে ফার্ম সে শেয়ার বিক্রি করে বা সমঝোতার মাধ্যমে ভেঞ্চার ক্যাপিটালকে একক মালিকানা বা অন্য কোন ব্যক্তি বা ফার্মের সাথে আবার পার্টনারশীপ করতে পারে৷ উদ্যোক্তাদের শেয়ারের পরিমান বেশি থাকায় তাদের অধিকারকেই প্রাধাণ্য দেওয়া হয়।
শেয়ারবাজারনিউজ/ওহ