আজ: শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১০ অগাস্ট ২০১৬, বুধবার |

kidarkar

সাবধান! এই কান্ডটি করলেই ৯০ লক্ষ টাকা জরিমানা

facebook-binodon69শেয়ারবাজার ডেস্ক: ফেসবুকে অন্য কাউকে অপমান করে কোনও কমেন্ট করা বা কিছু পোস্ট করা অত্যন্ত সাধারণ ঘটনা। কারোর উপর রাগ হলে বা বিরক্তি বোধ করলে অনেকেই সেই ক্ষোভ উগরে দেন ফেসবুক কমেন্ট কিংবা স্টেটাসে। অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দা ডেভিড স্কটও তেমনটাই করেছিলেন। কিন্তু তার পরিণাম যে এমন ভয়াবহ হবে তা তিনি কল্পনাও করেননি।

৭৪ বছরের কেনেথ রথ ছিলেন একটি কলেজের উপ-অধ্যক্ষ। চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পরে স্ত্রী এবং নাতি-নাতনিদের সঙ্গে মিলে নিউ সাউথ ওয়েলসে দু’টি মোটেল খুলে ব্যবসা শুরু করেছিলেন তিনি। দিব্যি সুখেই কাটছিল জীবন। কিন্তু সমস্ত কিছু গোলমাল করে দেয় ইলেকট্রিশিয়ান ডেভিড স্কটের কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট। সেই পোস্টগুলিতে স্কট দাবি করেন, নিজের মোটেলগুলিতে জেলপালানো আসামীদের ঠাঁই দিচ্ছেন রথ, তাছাড়াও শিশুদের দিয়ে চালানো হচ্ছে যৌন ব্যবসা।

এই পোস্ট দেখে হতভম্ব হয়ে যান রথ। কারণ নিজের মোটেলে মাঝেমধ্যে গৃহহীন মানুষদের আশ্রয় দিলেও, অপরাধীদের আশ্রয় দেওয়া কিংবা শিশুদের দিয়ে মধুচক্র চালানোর কথা তিনি ভাবতেই পারেন না। তাছাড়া স্কট নামের এই ব্যক্তিকে তিনি কস্মিনকালেও চেনেন না। কিন্তু ফেসবুকের অন্য ব্যবহারকারীরা তো সেকথা জানেন না। ফলে ক্রমশ রথের মোটেল দু’টিতে লোক আসার সংখ্যা কমতে থাকে। তারপর শুরু হয় ফোনে হু‌মকি এবং গালাগালের বন্যা। মানসিকভাবে বিধ্বস্ত রথ ফেসবুকেই কাতর আবেদন রাখেন স্কটের কাছে যে, তিনি যেন তাঁর প্রতি অবমাননাকর ওই কথাগুলো প্রত্যাহার করেন, এবং মিথ্যে বলার জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে নেন। কিন্তু বৃদ্ধের অনুনয়ে মন গলেনি স্কটের। তিনি তাঁর পোস্টটি প্রত্যাহার তো করেনইনি, উল্টে রথের স্ত্রীকে কারা যেন ফোন করে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া শুরু করে।

এই সামাজিক অবমাননা সহ্য করতে পারেননি রথ। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে মাস ছয়েক শুয়ে থাকতে হয় রথকে। তাঁর পরিবার বাড়ি ছেড়ে দিয়ে অন্যত্র বসতি গড়েন। কিন্তু বাড়ি বদলালেও মনের জোর হারাননি রথের পরিবার। রথের স্ত্রী-পুত্র স্থির করেন, এবার রুখে দাঁড়ানো উচিৎ। তাঁরা নিউ সাউথ ওয়েলসের আদালতে স্কটের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন।

আদালত গোটা বিষয়টি পর্যালোচনা করার পরে সিদ্ধান্ত নেয়, স্কটের যাবতীয় অভিযোগ ভিত্তিহীন। স্কটকে আদালত দোষী সাব্যস্ত করে। পাশাপাশি তাঁর ফেসবুক পোস্টের জন্য রথ এবং তাঁর পরিবারকে যে চরম শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন ভোগ করতে হয়েছে, তার জন্য তাঁদের ক্ষতিপূরণ বাবদ দেড় লক্ষ অস্ট্রেলিয়ান ডলার দিতে স্কটকে নির্দেশ দেয় আদালত। টাকার অঙ্কে পরিমাণটা ৯০ লক্ষ টাকারও বেশি।

আদালতে যখন স্কটকে জিজ্ঞাসা করা হয়, কেন তিনি রথের বিরুদ্ধে ওই অবমাননাকর পোস্টগুলি করলেন ফেসবুকে, স্কট জানান, তিনিও রথকে চেনেন না। কিন্তু লোকমুখে শুনেছিলেন, রথের মোটেলগুলিতে অবৈধ কাজকর্ম চলছে। স্রেফ তারই ভিত্তিতে ফেসবুকে ওই পোস্টটি তিনি করে দেন। কিন্তু চিন্তাভাবনা না করেই ফেসবুকে কাউকে অপমান করার যে এরকম ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে, তা তিনি দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি।

শেয়ারবাজারনিউজ/মা

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.