আজ: শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ইং, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৬ অগাস্ট ২০১৬, মঙ্গলবার |

kidarkar

ইসলামী ধারার ব্যাংকিং ব্যবসায় ভাটা

ramitance_bbশেয়ারবাজার রিপোর্ট: দেশে ইসলামী ধারার ব্যাংকিং ব্যবসার মুনাফায় ভাটা নেমেছে। এমন পরিস্থিতিতে তিন মাসের ব্যবধানে ইসলামী ধারার ৮ টি ব্যাংকে মুনাফার প্রবৃদ্ধি কমেছে গড়ে প্রায় ৬০ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালের ডিসেম্বর শেষে ইসলামী ধারার এই ব্যাংকগুলো মুনাফা বা আয় করেছিল ২ হাজার ৬২৪ কোটি টাকা। চলতি বছরের মার্চ শেষে এই ব্যাংকগুলো মুনাফা করেছে মাত্র ১ হাজার ৭১ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী মুনাফার প্রবৃদ্ধি কমেছে ৫৯.১৬ শতাংশ। যা টাকার অংকে ১ হাজার ৫৫২ কোটি টাকা।

এ প্রসঙ্গে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল মান্নান শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে বলেন, ডিসেম্বর প্রান্তিকের তুলনায় মার্চ প্রান্তিকে এমনিতেই ব্যাংকগুলোর মুনাফা কম থাকে। তবে এ সময়ও ইসলামী ব্যাংকে আগের তুলনায় মুনাফা কমেনি, বরং বেড়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গবেষণা বিভাগের তৈরি করা এই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ৮টি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ব্যাংকের বাইরে আরও ১৭টি বাণিজ্যিক ব্যাংক সাধারণ ব্যাংকিংয়ের পাশাপাশি ইসলামী ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালের মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি ২৫টি ব্যাংক ১ হাজার ১২টি শাখার মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। এর মধ্যে ৮টি ব্যাংক পুরোপুরি ইসলামী ব্যাংকিং করছে ৯৬৬টি শাখার মাধ্যমে। ৯টি বাণিজ্যিক ব্যাংক সাধারণ ব্যাংকিংয়ের পাশাপাশি ২১ ইসলামী শাখা এবং ৮টি বাণিজ্যিক ব্যাংক সাধারণ ব্যাংকিংয়ের পাশাপাশি ২৫ ইসলামী উইন্ডোর মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। আর এইসব ব্যাংক চলছে সুদভিত্তিক ব্যাংক ব্যবস্থার জন্য প্রণীত আইন দিয়েই।

বর্তমানে বাংলাদেশে ৮টি ইসলামী ব্যাংক পূর্ণাঙ্গভাবে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। এগুলো হলো ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, এক্সিম ব্যাংক লিমিটেড, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেড ও আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক লিমিটেড।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য মতে, শরিয়াহ অনুযায়ী পরিচালিত ইসলামী ব্যাংকগুলো মার্চ পর্যন্ত মুনাফা করেছে ৯৫৪ কোটি টাকা। তিন মাস আগে এই ব্যাংকগুলো মুনাফা করেছিল ২ হাজার ৪০৮ কোটি টাকা। এই হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে ৮ ইসলামী ব্যাংকের গড়ে মুনাফার প্রবৃদ্ধি কমেছে ৬০.৩৮ শতাংশ। একইভাবে ৯টি সাধারণ বাণিজ্যিক ব্যাংকের ২১টি ইসলামী শাখায় লেনদেন করে মুনাফা হয়েছে মাত্র ৯২ কোটি টাকা। তিন মাসের ব্যবধানে এই শাখাগুলোর মুনাফার প্রবৃদ্ধি কমেছে ৫০.৪৭ শতাংশ।  এর বাইরে ৮টি সাধারণ বাণিজ্যিক ব্যাংকের ২৫টি ইসলামী ব্যাংকিং উইন্ডোর মাধ্যমে লেনদেন করে মুনাফা হয়েছে মাত্র ২৪ কোটি টাকা। তিন মাসের ব্যবধানে এই ২৫টি ইসলামী শাখায় মুনাফার প্রবৃদ্ধি কমেছে গড়ে ১৪ শতাংশ।

অবশ্য এ ব্যাংকগুলোর মুনাফা আগের তুলনায় কমে গেলেও আমানত বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তৈরি করা প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৬ সালের মার্চ পর্যন্ত পুরো ব্যাংক খাতের মোট আমানতের মধ্যে ২২ শতাংশ আমানত রয়েছে ইসলামী শাখাগুলোতে। একইভাবে মোট ঋণের ২৩ শতাংশেরও বেশি পরিমাণ ঋণ বিতরণ করেছে এই ইসলামী ব্যাংকগুলো। এছাড়া মোট রেমিটেন্সের ৩০ শতাংশ এসেছে ইসলামী ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোতে মোট আমানত রয়েছে ১ লাখ ৬৬ হাজার ২৭ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে ছিল ১ লাখ ৪৬ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। এক বছরে আমানতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩.১৫ শতাংশ। এছাড়া, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত এই ব্যাংকগুলো মোট বিনিয়োগ করেছে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৪০২ কোটি টাকা। এক বছর আগে বিনিয়োগ ছিল ১ লাখ ২৬ হাজার ৭০৯ কোটি টাকা। এক বছরে বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৭.৯১ শতাংশ।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত সময়ে পুরো ব্যাংক খাতে অতিরিক্ত তারল্য রয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ২৯৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংকগুলোতে অতিরিক্ত তারল্য রয়েছে ৯ হাজার ৫৬৩ কোটি টাকা।

শেয়ারবাজারনিউজ/আ

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.