একনেকে ১ হাজার ৯৫ কোটি টাকার ৬ প্রকল্প অনুমোদন
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: এক হাজার ৯৫ কোটি টাকার ৬ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৬৭৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৪২০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ব্যয় হবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ অনুমোদন দেয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা সচিব তারিক-উল-ইসলাম এবং সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সিনিয়র সদস্য ড. শামসুল আলম।
পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, শাহপরীর দ্বীপ বাঁধ নির্মাণের সময় বাঁধের পাড় মজবুত করে বেধে গাছ লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি জানান, এখন থেকে গৃহ নির্মাণের বড় প্রকল্পের পাশাপাশি ছোট ছোট প্রকল্প হাতে নেয়া হবে। বর্তমানে ১২০০ থেকে প্রকল্পের সংখ্যা ১৫০০ হবে। পিছিয়ে পড়া মানুষদের অর্থনীতির মূল স্রোতে নিয়ে আসতে এসব ছোট প্রকল্প হাতে নেয়া হচ্ছে। যাতে প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখতে পারে।
তিনি বলেন, কামার, কুমার, বেঁদে জেলে, নাপিত, কাঠমিস্ত্রি, মিষ্টির কারিগর ও বাঁশ বেতের যারা কাজ করে তাদের জন্য প্রকল্প নেয়া হবে।
সভায় আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেল সংযোগ নির্মাণ (বাংলাদেশ অংশ) প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৭৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা।
জানা গেছে, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সঙ্গে রেল সংযোগ স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে ১৫ কিলোমিটার রেল লাইন নির্মাণে ব্যয় হবে হাজার কোটি টাকার বেশি। চলতি অর্থবছর এ রেললাইন নির্মাণের কাজ শুরু হবে। ২০১৯ সালে নির্মাণ কাজ শেষ করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ভারত থেকে ৪২০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা অনুদান পাওয়া যাবে। ব্রড গেজ ও মিটার গেজ দুই মাধ্যমেইে দুই দেশের মধ্যে রেললাইনটি নির্মাণ করা হবে। বাংলাদেশের দিকে প্রথম স্টেশন হবে গঙ্গাসাগর। গঙ্গাসাগর থেকে আখাউড়ার মধ্যে বর্তমান স্টেশনের পাশ দিয়ে তৈরি হবে নতুন রেল লাইন। এছাড়া ত্রিপুরা রাজ্যের দিকে ৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করবে ভারত। আগরতলা রেলওয়ে স্টেশন থেকে বের হয়ে নিশ্চিন্তপুর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে এ রেলপথ। নিশ্চিন্তপুরে হবে সীমান্ত ষ্টেশন ও রেল ইয়ার্ড।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের সময় আগরতলা-আখাউড়া রেল সংযোগ প্রকল্পের বিষয়ে অনুলিপি চূড়ান্ত হয়েছিল। ভারতের পক্ষে এতে সই করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। গত বছরের জুনে ঢাকা সফরকালে এই প্রকল্পে অর্থায়নের আশ্বস দিয়েছিলেন ভারতের বর্তমাণ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ১৯৪৭ সালের দেশভাগের সময়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ত্রিপুরার রেল সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে, ভৈরব রিভার বেসিন এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭২ কোটি ৮২ লাখ টাকা। কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার শাহপরীর দ্বীপে পোল্ডার নং-৬৮ এর সী-ডাইক অংশে বাঁধ পুন:নির্মাণ ও প্রতিরক্ষা কাজ বাস্তবায়ন প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা।
চট্রগ্রাম জেলার বাপাউবোর আওতায় উপকূলীয় অঞ্চলের পোল্ডার নং ৬১/১ (সীতাকুন্ড), ৬১/২ (মীরসরাই) ও ৭২ (সন্দ্বীপ) এর বিভিন্ন অবকাঠামোসমূহের ভাঙ্গন প্রতিরোধ, নিস্কাশন এবং সেচ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য পুনর্বাসন প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা। নগর ভিত্তিক প্রান্তিক মহিলা উন্নয়ন (২য় পর্যায়) প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা। ঢাকার শেরেবাংলা নগরস্থ বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয় কমপ্লেক্স ৮ থেকে ১১তলা নির্মাণ (৩য় পর্ব) প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৭ কোটি ১৩ লাখ টাকা।
শেয়ারবাজারনিউজ/আ