এক কোম্পানিতেই ১১০ টাকা প্রিমিয়ামসহ সাড়ে ১৬ কোটি টাকা বিনিয়োগ!
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: পুঁজিবাজারে তালিকা বহির্ভুত ইউনিকর্ন ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শেয়ারে অভিহিত মূল্য ১০০ টাকার সাথে আরও ১১০ টাকা করে প্রিমিয়াম দিয়ে মোট ১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার বিনিয়োগ করেছে সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানি এলআর গ্লোবাল পরিচালিত পাঁচটি মেয়াদি (ক্লোজ-এন্ড) মিউচ্যুয়াল ফান্ড।
ইউনিকর্ন ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রতিটি শেয়ার ২২০ টাকা দরে কিনেছে এলআর গ্লোবাল পরিচালিত পাঁচ ফান্ড।
আইপিও পূর্ববর্তী প্লেসমেন্ট শেয়ার কেনার মাধ্যমে এ টাকা বিনিয়োগ করা হয়। সম্প্রতি প্রকাশিত ফান্ডগুলোর আর্থিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, এলআর গ্লোবাল পরিচালিত এমবিএল ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড প্রি-আইপিও প্লেসমেন্ট বাবদ ইউনিকর্ন ইন্ডাস্ট্রিজের ২ কোটি ২০ লাখ টাকার শেয়ার, এলআর গ্লোবাল ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড ৬ কোটি ৮২ লাখ টাকার শেয়ার, এআইবিএল ফার্স্ট ইসলামিক মিউচ্যুয়াল ফান্ড ২ কোটি ২০ লাখ টাকার শেয়ার, গ্রীণডেল্টা মিউচ্যুয়াল ফান্ড ২ কোটি ৮৬ লাখ টাকার শেয়ার এবং ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিকর্ন ইন্ডাস্ট্রিজের ২ কোটি ৪২ লাখ টাকার শেয়ার কিনেছে।
উল্লেখ্য, বিধি ৫৫(১) অনুযায়ী, মিউচ্যুয়াল ফান্ডের অর্থ কেবলমাত্র স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজ, প্রাথমিক সিকিউরিটিজ ও অর্থবাজারে হস্তান্তরযোগ্য সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করা যাবে। তবে কমিশনের সম্মতিতে প্রাথমিক সিকিউরিটিজ ইস্যুকারী কোনো কোম্পানির প্লেসমেন্ট শেয়ারে তা বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের প্রথমার্ধে শেয়ারবাজারে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের অর্থের ৭৫ শতাংশ বিনিয়োগের বিধান করা হয়। পরবর্তীতে বিনিয়োগের ন্যূনতম সীমা ৭৫ থেকে কমিয়ে ৬০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে এলআর গ্লোবালের সিনিয়র অপারেটিং পার্টনার আদেল আহমেদ শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে বলেন, আমরা নিয়ম মেনেই কোম্পানিটিতে বিনিয়োগ করেছি।
এদিকে, ইউনিকর্ন ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার উচ্চ প্রিমিয়ামে কেনার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন রয়েছে কিনা জানতে চাইলে বিএসইসি’র কোন কর্মকর্তাই এ বিষয়ে সদুত্তর দেননি।
কি আছে ইউনিকর্ন ইন্ডাস্ট্রিজে: ইউনিকর্ন ইন্ডাস্ট্রিজ মূলত প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং কোম্পানি। কোম্পানিটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সোহাইল হুমায়ুন। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদে কারা রয়েছেন এ প্রসঙ্গে কোন তথ্য দেওয়া হয়নি।
কোম্পানিটির ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ইউনিলিভার, জিএসকে, রেকিট বেনকিজার, কোহিনূর কেমিক্যাল প্রভৃতি স্বনামধন্য কোম্পানির পণ্যের মোড়ক প্রস্তুত করে। তবে কোম্পানিটির আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে ওয়েবসাইটে কোন তথ্য দেওয়া হয়নি। এ প্রসঙ্গে জানার জন্য কোম্পানিটির ওয়েবসাইটে দেওয়া টিএনটি নাম্বারে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে সবগুলো নাম্বারই অচল পাওয়া যায়।
এ প্রসঙ্গে পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ ড. আবু আহমেদ বলেন, সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানিটির বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। তারা এর আগেও বিনিয়োগকারীদের টাকা নিয়ে তামাশা করেছে। উচ্চ প্রিমিয়াম দিয়ে তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানিতে সাধারন বিনিয়োগকারীদের টাকা বিনিয়োগ খুবই দু:খজনক।
শেয়ারবাজারনিউজ/আ