আজ: বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২০ অগাস্ট ২০১৬, শনিবার |

kidarkar

পাঠ প্রস্তুতি দ্বাদশ শ্রেণি : বাংলা দ্বিতীয় পত্র

031719hsc_student_kalerkantho_picশেয়ারবাজার ডেস্ক: প্রশ্ন : ব্যাকরণিক শব্দশ্রেণি বলতে কী বোঝো? ব্যাকরণিক শব্দ কত প্রকার ও কী কী? উদাহরণসহ লেখো।  উত্তর : ব্যাকরণগত অবস্থনের ভিত্তিতে বাংলা ভাষার শব্দসমূহকে যে কয় ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে, তাকেই ব্যাকরণিক শব্দশ্রেণি বলে। ব্যাকরণিক শব্দ আট প্রকার। যথা—

ক. বিশেষ্য : যে শব্দ দ্বারা কোনো ব্যক্তি, বস্তু, স্থান, জাতি, গোষ্ঠী, সমষ্টি, গুণ বা অবস্থার নাম বোঝায় তাকে বিশেষ্য বলে। যেমন—থালা, বাটি, টাকা, ঢাকা, ছাগল, বাঁশ, মাছ, দয়া, মায়া, সততা।

খ. সর্বনাম : বিশেষ্যের পরিবর্তে যে শব্দ ব্যবহৃত হয়, তাকে সর্বনাম বলে। যেমন—উর্মি একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। সে এসএসসিতে জিপিএ ৫ পেয়েছে। কলেজে তার উপস্থিতি নিয়মিত। তাকে সব শিক্ষক আদর করেন। এখানে সে, তার, তাকে সর্বনাম।

গ. বিশেষণ : যে শব্দ দ্বারা বিশেষ্য, সর্বনাম ও ক্রিয়ার দোষ, গুণ, অবস্থা, সংখ্যা, পরিমাপ ইত্যাদি প্রকাশ পায়, তাকে বিশেষণ বলে। যেমন— নীল আকাশ, সবুজ বাংলা, প্রথম স্থান, দশ কেজি, শান্ত নদী।

ঘ. ক্রিয়া : যে শব্দ দ্বারা কোনো কিছু করা, হওয়া, ঘটা ইত্যাদি বোঝায় তাকে ক্রিয়া বলে। যেমন—অনয় কাঁদছে। শিউলি ফুল তুলছে। বৃষ্টি হবে।

ঙ. ক্রিয়া বিশেষণ : যে শব্দ বাক্যের ক্রিয়াকে বিশেষিত করে, তাকে ক্রিয়া বিশেষণ বলে। যেমন—গাড়িটি দ্রুত চলতে শুরু করল। অনিম জোরে হাঁটে। সামিয়া গুনগুনিয়ে গান গাইছে।

চ. আবেগ শব্দ : যে শব্দ বাক্যের অন্য শব্দের সঙ্গে সম্পর্ক না রেখে স্বাধীনভাবে মনের বিশেষ ভাব বা আবেগ প্রকাশ করে, তাকে আবেগ শব্দ বলে। যেমন—হায়! এটা তুমি কী করলে! উঃ! কী অবস্থা! বাহ্! কী সুন্দর দৃশ্য।

ছ. যোজক : যে শব্দ একটি বাক্যাংশের সঙ্গে অন্য একটি বাক্যাংশ অথবা বাক্যস্থিত একটি শব্দের সঙ্গে অন্য একটি শব্দের সংযোজন, বিয়োজন বা সংকোচন ঘটায়, তাকে যোজক বলে। যেমন—সারা দিন বৃষ্টি হলো তবুও গরম গেল না। তুমি খাবে আর তামান্না পড়বে। ব্যাগটা শক্ত করে ধরো, নইলে পড়ে যাবে।

জ. অনুসর্গ : যে শব্দ কখনো স্বাধীনরূপে, আবার কখনো বা শব্দবিভক্তির ন্যায় ব্যবহৃত হয়ে বাক্যের অর্থ প্রকাশে সাহায্য করে, তাকে অনুসর্গ বলে। যেমন—দিনের পরে রাত আসে। রান্নার জন্য রাঁধুনি ব্যাকুল।

প্রশ্ন : বিশেষ্য কাকে বলে? উদাহরণসহ বিশেষ্যের শ্রেণিবিভাগ আলোচনা করো।

উত্তর : বিশেষ্য : যে শব্দ দ্বারা কোনো ব্যক্তি, বস্তু, স্থান, জাতি, গোষ্ঠী, সমষ্টি, গুণ বা অবস্থার নাম বোঝায়, তাকে বিশেষ্য বলে। যেমন—থালা, বাটি, টাকা, ঢাকা, ছাগল, বাঁশ, মাছ, দয়া, মায়া, সততা।      কী ধরনের নাম বোঝাচ্ছে তার ওপর ভিত্তি করে বিশেষ্যকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা—

১। সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য : যে বিশেষ্য দ্বারা সুনির্দিষ্টভাবে কোনো কিছুর নাম বোঝায়, তাকে সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন—নজরুল, যমুনা, দোয়েল, আষাঢ়, বঙ্গভাষা ইত্যাদি।

২। সাধারণ বিশেষ্য : যে বিশেষ্য দ্বারা সামগ্রিকভাবে একটি শ্রেণিকে বোঝায়, তাকে সাধারণ বিশেষ্য বলে। যেমন—মানুষ, কবি, নদী, পাখি, মাস, ভাষা ইত্যাদি।      নানা মানদণ্ডে সাধারণ বিশেষ্যের শ্রেণীকরণ করা হয়ে থাকে।      যেমন—ইন্দ্রিয়গ্রাহ্যতা অনুসারে—

ক. মূর্ত বিশেষ্য : ইন্দ্রিয় দ্বারা যে বস্তুর ঘ্রাণ নেওয়া যায় কিংবা যাকে দেখা, পরিমাপ করা বা স্পর্শ করা যায়, তাকে মূর্ত বিশেষ্য বলে। যেমন—রুটি, বাটি, বেগুন, ফুল ইত্যাদি।

খ. ভাব বিশেষ্য : ইন্দ্রিয় দ্বারা যার ঘ্রাণ নেওয়া, দেখা, পরিমাণ করা, স্পর্শ করা যায় না অর্থাৎ নিবস্তুক অবস্থা ও মনোগত ভাব বোঝায়, তাকে ভাব বিশেষ্য বলে। যেমন—রাগ, ক্ষমা, আনন্দ, বেদনা ইত্যাদি।

গণনযোগ্যতা অনুসারে—      ক. গণন বিশেষ্য : যে বিশেষ্যকে সংখ্যা দিয়ে গণনা করা যায় এবং যার বহু বচন করা চলে, তাকে গণন বিশেষ্য বলে। যেমন—ফল, গরু, হাঁস, মুরগি, মাছ, চেয়ার, টেবিল ইত্যাদি।

খ. পরিমাপ বিশেষ্য : যে বিশেষ্যকে সংখ্যা দ্বারা গণনা করা যায় না, কিন্তু পরিমাপ করা চলে, তাকে পরিমাপ বিশেষ্য বলে। যেমন—লবণ, তেল, চিনি, আটা, ডাল, চাল ইত্যাদি।

গ. সমষ্টি বিশেষ্য : যে বিশেষ্য দ্বারা কোনো দল বা গোষ্ঠীর একক বা সমষ্টি বোঝায়, তাকে সমষ্টি বিশেষ্য বলে। যেমন—ছাত্র, জনতা, পুলিশ, মালিক, শ্রমিক, সভা, সমিতি, সংসদ, শ্রেণি, ঝাঁক, দল ইত্যাদি।  সজীবতা অনুসারে—

ক. সজীব বিশেষ্য : যে বিশেষ্য দ্বারা কোনো জীবন্ত ও সক্রিয় সত্তার সাধারণ শ্রেণিকে বোঝায়, তাকে সজীব বিশেষ্য বলে। যেমন—ইঁদুর, বিড়াল, বানর, সিংহ, বাঘ ইত্যাদি।

খ. অজীব বিশেষ্য : যে বিশেষ্য দ্বারা কোনো ধারণাযোগ্য ও ইন্দ্রিগ্রাহ্য কিংবা নির্জীব বস্তু বোঝায়, তাকে অজীব বিশেষ্য বলে। যেমন—বাড়ি, গাড়ি, শাড়ি, বই, খাতা, কালি, কলম, আকাশ ইত্যাদি।

প্রশ্ন : বিশেষণ কাকে বলে? উদাহরণসহ বিশেষণের শ্রেণিবিভাগ আলোচনা করো।

উত্তর : যে শব্দশ্রেণি দ্বারা বিশেষ্য, সর্বনাম ও ক্রিয়ার অর্থ বিশদ বা সীমিত করে তার দোষ, গুণ, অবস্থা, সংখ্যা, পরিমাণ ইত্যাদি প্রকাশ করা হয়, তাকে বিশেষণ বলে। যেমন—নীল আকাশ, চটপটে ছেলে।

বিশেষণকে প্রধানত তিনটি মানদণ্ডের ভিত্তিতে শ্রেণীকরণ করা হয়। যথা—

১. অর্থগতভাবে  ২.বু্ৎপত্তিগতভাবে   ৩. অন্বয়গতভাবে

১. অর্থগতভাবে বিশেষণ প্রধানত দুই প্রকার। যথা—      ক. নামবিশেষণ : যে বিশেষণ বিশেষ্য বা সর্বনামকে বিশেষিত করে, তাকে নামবিশেষণ বলে। যেমন—সবাই পাকা ফল খেতে পছন্দ করে। সবার বড় সে, কিন্তু কাজে খুব অলস।

খ. ভাববিশেষণ : যে বিশেষণ অপর কোনো বিশেষণকে বিশেষিত করে, তাকে ভাববিশেষণ বলে। যেমন—তিনি খুব ভালো মানুষ।

২. ব্যুত্পত্তিগতভাবে বিশেষণ প্রধানত দুই প্রকার। যথা—

ক. সিদ্ধ বিশেষণ : যে বিশেষণকে ব্যাকরণগতভাবে আর কোনো ক্ষুদ্রতর অংশে রূপান্তর বা বিভক্ত করা যায় না, তাকে সিদ্ধ বিশেষণ বলে। যেমন—ভালো, মন্দ, সোজা, বাঁকা, উঁচু, নিচু, লাল, নীল, হলুদ, বেগুনি, টক, ঝাল ইত্যাদি।

খ. সাধিত বিশেষণ : যে বিশেষণকে ব্যাকরণগতভাবে আরো এক বা একাধিক ক্ষুদ্রতর অংশে রূপান্তর বা বিভক্ত করা যায়, তাকে সাধিত বিশেষণ বলে। যেমন—চলন্ত বাস, ডুবন্ত নৌকা, উড়ন্ত পাখি, মেঘলা সকাল, ফুটন্ত পানি ইত্যাদি।

৩. অন্বয়গতভাবে বিশেষণ প্রধানত দুই প্রকার।      যথা— ক. সাক্ষাৎ বিশেষণ : যে বিশেষণ সরাসরি বাক্যের বিশেষিত শব্দের আগে বসে, তাকে সাক্ষাৎ বিশেষণ বলে। যেমন—গভীর জল, নীল শাড়ি, লাল জামা, সবুজ মাঠ, ছোট বাবু ইত্যাদি।

খ. বিধেয় বিশেষণ : যে বিশেষণ বাক্যের বিধেয় অংশে বসে, তাকে বিধেয় বিশেষণ বলে। এ ধরনের বিশেষণের পর বাক্যে সাধারণত আর কোনো বিশেষ্য থাকে না। যেমন—ছেলেটি খুব দুষ্ট। বাবা এখন অসুস্থ। আমটি খুব মিষ্টি।

৪. সংখ্যাবাচক বিশেষণ : যে বিশেষণ দ্বারা গণনা ও পরিমাপ সংক্রান্ত ধারণা প্রকাশ করা হয়, তাকে সংখ্যাবাচক বিশেষণ বলে। সাত সমুদ্র, দশম শ্রেণি, পহেলা বৈশাখ, এক পোয়া।

শেয়ারবাজারনিউজ/মা

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.