আজ: শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ইং, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২১ অগাস্ট ২০১৬, রবিবার |

kidarkar

৬০৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করতে হবে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জকে

Strategicশেয়ারবাজার রিপোর্ট: ব্যবস্থাপনা থেকে মালিকানা পৃথককরণ অর্থাৎ ডি-মিউচ্যুয়ালাইজেশনের অন্যতম প্রধান শর্ত উভয় স্টক এক্সচেঞ্জকে স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার বা কৌশলগত বিনিয়োগকারী খুঁজে বের করা। এর জন্য আর মাত্র ৪ মাস সময় রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে কৌশলগত বিনিয়োগকারীর কাছে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জকে সম্মিলিতভাবে ৬০৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করতে হবে।

প্রসঙ্গত, ডিএসইর বর্তমান পরিশোধিত মূলধন এক হাজার ৮০৩ কোটি টাকা। এ হিসাবে কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের কাছে স্টক এক্সচেঞ্জটিকে অভিহিত মূল্যে প্রায় ৪৫১ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করতে হবে। গত তিন বছরে কৌশলগত বিনিয়োগকারী খুঁজে না পেলেও ডিএসই প্রিমিয়ামসহ শেয়ার বিক্রির দিবাস্বপ্ন দেখছে। অন্যদিকে সিএসই পরিস্থিতি জেনে মাটিতেই পা রাখছে। তাই তারা অভিহিত মূল্যে ১৫৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকারও বেশি শেয়ার বিক্রি করবে। এর বাইরে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ তালিকাভুক্তির মাধ্যমে ৩৫ শতাংশ করে শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিক্রি করবে।

ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইন অনুযায়ী দেশের স্টক এক্সচেঞ্জগুলোকে কৌশলগত বিনিয়োগকারীর কাছে তাদের সংরক্ষিত ২৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করতে হবে। ২০১৩ সালে কার্যকর হওয়া ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইন অনুযায়ী ৩ বছরের মধ্যে দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জকে স্ট্র্যাটেজিক ইনভেস্টর (কৌশলগত বিনিয়োগকারী) খুজে বের করতে হবে, আর তার মেয়াদ শেষ হবে চলতি বছরের ডিসেম্বরে।

কৌশলগত বিনিয়োগকারী হবে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদিত দেশি বা বিদেশি কোনো স্টক এক্সচেঞ্জ, কোনো বিনিয়োগ ব্যবস্থাপক কোম্পানি, বিনিয়োগ ব্যাংক বা কোনো স্বনামখ্যাত আর্থিক প্রতিষ্ঠান।

যদিও নির্ধারিত সময় প্রায় শেষ হয়ে এলেও কৌশলগত বিনিয়োগকারী ইস্যুতে এখনও কোন অগ্রগতি না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বিএসইসির চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন বলেন, আইন অনুযায়ী কমিশন সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কিন্তু ন্যূনতম অগ্রগতি ছাড়া সময় বাড়ানো অত্যন্ত দু:খজনক। তাই নির্ধারিত সময়ের শেষে স্টক এক্সচেঞ্জের ‘কৌশলগত বিনিয়োগকারী খুঁজে পাইনির’ মতো কথা মেনে নেওয়া হবে না। অন্তত আগামী ডিসেম্বরের আগে শেয়ার কেনাবেচার জন্য সমঝোতা চুক্তি করতে হবে।

এর আগে গত বছরের ৯ ডিসেম্বর একটি চিঠিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) উভয় স্টক এক্সচেঞ্জকে পরের এক বছরের মধ্যে কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রির নির্দেশ দিয়েছিল। তবে এ বিষয়ে খুব বেশি অগ্রগতি হয়নি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কৌশলগত বিনিয়োগকারী খুঁজে পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছেন খোদ দুই স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালনা পর্ষদ বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। তবে এরই মধ্যে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভারত, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশের স্টক এক্সচেঞ্জ, ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকসহ শীর্ষ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। গত দুই বছরের এসব আলোচনা ও সফর থেকে এখন পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত ফল আসেনি।

তবুও ডিএসইর নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাজেদুর রহমান আশাবাদী। সম্প্রতি তিনি দেশি কয়েকটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তিনি জানান, কৌশলগত বিনিয়োগকারী খুঁজে পাওয়া তার প্রধান লক্ষ্য এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

ডিএসই জানায়, নেদারল্যান্ডসভিত্তিক বিশ্বখ্যাত পরামর্শক ও নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান কেপিএমজির সিনিয়র পরামর্শক ও আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক খালিদ রহিম কৌশলগত বিনিয়োগকারী খুঁজে পেতে ডিএসইকে প্রস্তাব দিয়েছেন। এ ছাড়া ক্রিস্টিয়ানো নামের জার্মানির এক পরামর্শকও এ কাজে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছেন। লন্ডনভিত্তিক আর্নেস্ট অ্যান্ড ইয়ং এলএলপির সঙ্গেও আলোচনা চলছে।

তবে ডিএসইর একাধিক পরিচালক মনে করেন, এ নিয়ে খুব বেশি তাড়াহুড়া করা উচিত নয়। তাড়াহুড়া করতে গিয়ে কম দামে বিদেশিদের কাছে স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানা ছাড়তে হলে তা দেশের জন্যই ক্ষতির কারণ হবে। ডিএসইর ব্যবসা এখনও ভালো নয়। দৈনিক লেনদেন ৪০০ কোটি টাকার নিচে। ৩০০টিরও কম কোম্পানির শেয়ার নিয়ে বাজার পরিচালিত হচ্ছে। এখনও স্টক এক্সচেঞ্জটির মুনাফার বড় অংশ আসে সঞ্চিত অর্থের সুদ থেকে।

শেয়ারবাজারনিউজ/রু/আ

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.