ইকোনমিক জোন করার লাইসেন্স পেলো মেঘনা গ্রুপ
শেয়ারবাজার ডেস্ক: দেশের প্রথম প্রাইভেট সেক্টরে অর্থনৈতিক অঞ্চল বা ইকোনমিক জোন করার লাইসেন্স পেয়েছে মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাষ্ট্রিজ। সরকারের প্রস্তাবিত ১০০ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে সর্বপ্রথম লাইসেন্স পেয়েছে মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ড্রাস্ট্রিজের সহযোগী প্রতিষ্ঠান মেঘনা ইকোনমিক জোন লিমিটেড। ইকোনমিক জোনটি মেঘনা নদীর তীরে মেঘনা ঘাটে স্থাপন করা হবে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) কার্যালয়ে মঙ্গলবার ২৩ আগস্ট দুপুরে বেজা চেয়ারম্যান পবন চৌধুরীর কাছ থেকে অর্থনৈতিক অঞ্চলের লাইসেন্স নেন মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল।
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন তরান্বিত করতে ১৫ বছরের মধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এর মাধ্যমে এক কোটি লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি, ২০২১ সালের মধ্যে চার হাজার মার্কিন ডলার রপ্তানি আয় ও দুই হাজার মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে বেজা এরই মধ্যে আটটি প্রতিষ্ঠানকে ১০টি প্রাইভেট অর্থনৈতিক অঞ্চল করার পূর্ব-যোগ্যতা লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে পবন চৌধুরী বলেন, ‘দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বেজা প্রাইভেট সেক্টরকে গুরুত্ব দিচ্ছে। আমরা মনে করি দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে বড় কোনো পরিবর্তন আনলে প্রাইভেট সেক্টরের মাধ্যমেই সম্ভব। এ জন্য দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের স্বল্প সময়ে বিনিয়োগ সেবা দিতে ও হয়রানি বন্ধে ওয়ানস্টপ সেবা চালু করছে বেজা।’
বেজা চেয়ারম্যান আরো বলেন, ‘প্রস্তাবিত ১০০ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে প্রথম লাইসেন্স পেল মেঘনা ইকোনমিক জোন লিমিটেড। পূর্ব-যোগ্যতার (প্রি-কোয়ালিফিকেশন) শর্ত পূরণ করে লাইসেন্স পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এর আগে ২০১৫ সালের ১৮ অক্টোবর পূর্ব-যোগ্যতা লাইসেন্স দেওয়া হয়। বেজার ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন এবং এক কোটি লোকের কর্মসংস্থানের আরো একটি মাইলফলক স্পর্শ করল।’
মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল বলেন, ‘এরই মধ্যে আমাদের অর্থনৈতিক জোনে বেশ কয়েকটি বিদেশি প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগের প্রস্তাব করেছে। এরই মধ্যে এক হাজার ৭০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ এসেছে। এ বছরের শেষে আরো দুই হাজার ৮৮০ কোটি টাকার বিনিয়োগ আসবে বলে আশা করছি।’
মোস্তফা কামাল আরো বলেন, এ অর্থনৈতিক অঞ্চলে মোট প্লট হবে ১২৭টি। এর মধ্যে মেঘনা গ্রুপের মেঘনা পাল্প অ্যান্ড পেপার মিলস, এমপিপি পাওয়ার প্লান্ট, মেঘনা এডিবল অয়েলস রিফাইনারি, সোনারগাঁও ফ্লাওয়ার মিলস, মেঘনা পিভিসি প্লান্ট, ফ্রেশ এলপিজি বটলিং প্লান্টের কাজ দ্রুতগতিতে চলছে।’
মেঘনা গ্রুপের দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চলে ২৫ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে বলে জানান মোস্তফা কামাল।
কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়, মেঘনা অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৪০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন একটি পাওয়ার প্লান্ট, নিজস্ব পানি সরবরাহের ব্যবস্থা, তিতাস থেকে সরবরাহকৃত গ্যাস সংযোগসহ অর্থনৈতিক অঞ্চলের সব সর্বাধুনিক আনুষঙ্গিক ব্যবস্থা রয়েছে। এ সবই অর্থনৈতিক অঞ্চল থেকে সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীদের সরবরাহ করা হবে।
এ ছাড়া পানি শোধনাগার প্লান্ট, নোংরা পানি অপসারণ, তরল বর্জ্য পরিশোধনাগার প্লান্ট, কঠিন বর্জ্য অপসারণ ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাসহ সব পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থা থাকবে।
বেজা সূত্রে জানা যায়, প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর মধ্যে কাগজ শিল্প, ভোজ্যতেল শোধনাগার, এলপিজি প্লান্ট, পিভিসি প্লান্ট রয়েছে। প্রথম বছর থেকে দক্ষ-অদক্ষ নারী-পুরুষ মিলিয়ে মোট তিন হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এর সংখ্যা পাঁচ বছরের মধ্যে ৩০ হাজারের অধিক হবে।
বেজা চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে লাইসেন্স প্রদান অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বেজার নির্বাহী সদস্য ড. এম এমদাদুল হক, মো. আবদুস সামাদ, হরিপ্রসাদ লাল, মেঘনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদ মোস্তফাসহ সংশ্লিষ্টরা।
শেয়ারবাজারনিউজ/ম.সা