আজ: শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ইং, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

৩১ অগাস্ট ২০১৬, বুধবার |

kidarkar

সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল বন্ধের হুমকি

cvoশেয়ারবাজার রিপোর্ট: নিজেদের প্রতিষ্ঠান সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল রিফাইনারির ওপর খড়গ হস্ত সরকার। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এ কোম্পানিটির অনিয়ম দুর্নীতি সহ্য করেনি জ্বালানি মন্ত্রণালয়। তাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশে প্রতিষ্ঠানটির কাছে অনিয়ম দুর্নীতির ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছে জ্বালানি মন্ত্রণালয়। যথাসময় জবাব দিতে ব্যর্থ হলে লাইসেন্স জব্দের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে চিঠির মাধ্যমে হুমকিও দিয়েছে সরকার।

জ্বালানি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, পরিশোধন না করে কনডেনসেট (গ্যাসের উপজাত) বাজারে ছেড়ে দিয়ে জ্বালানি তেল ভেজাল করার অভিযোগে সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল রিফাইনারিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে সরকার।

কারণ দর্শানোর নোটিশে আগামী সাত দিনের মধ্যে গত অর্থবছরে কনডেনসেট ক্রয়ের পরিমাণ, কনডেনসেট থেকে উৎপাদিত অকটেন ও পেট্রলের পরিমাণ জানাতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে ওই সময়ে পেট্রোল পাম্প ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কী পরিমাণ পরিশোধিত তেল দিয়েছে তার হিসাবও চাওয়া হয়েছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দেয়া এক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই নোটিশ প্রদান শুরু করেছে জ্বালানি বিভাগ।

সিভিও পেট্রোকেমিক্যালকে দেয়া নোটিশে বলা হয়েছে যদি যথাযথভাবে এই হিসাব দিতে না পারে, তাহলে লাইসেন্স জব্দ ও প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হবে।

জ্বালানী মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, গত বছর সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল রিফাইনারি ক্রয় করেছিল ১৯ হাজার টন কনডেনসেট। বিপিসির কাছে বিক্রি করেছে মাত্র ৭৯২ টন (৯ লাখ ৯০ হাজার লিটার) পেট্রোল। কিন্তু বাকি ১৮ হাজার ২০৮ টন কনডেনসেটের হিসাব নেই। ক্রয় করা কনডেনসেট দিয়ে অন্য কোনো জ্বালানি তৈরি করেছে কিনা সে সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্রও দেখাতে পারেনি কোম্পানিটি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জ্বালানি বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, কনডেনসেট পরিশোধন করতে গিয়ে ২ থেকে ৩ শতাংশ ‘প্রসেস লস’ হয়। কিছু অংশ দিয়ে জ্বালানি তেল ছাড়াও অন্য উপজাত তৈরি হয়। কিন্তু কোম্পানিটি এ সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। তিনি বলেন, পুরো কনডেনসেট তারা বিভিন্ন পেট্রোল পাম্পে বিক্রি করে দিয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে।

এ প্রসঙ্গে সিভিও পেট্রোকেমিক্যালের কোন কর্মকর্তা শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।

এর আগে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে কনডেনসেট বিক্রি বন্ধ করে দেয় পেট্রোবাংলা। কনডেনসেট বাজারে ছেড়ে দিয়ে জ্বালানি তেল ভেজাল করা বিপিসি’র এমন অভিযোগ অস্বীকার করে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিজেদের অবস্থার ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করে সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে, সরকারী কোনো সংস্থা যেন ‘ভেবেচিন্তে’ সংবাদ প্রকাশ করে সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানায় কোম্পানিটি।

পরবর্তীতে সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল কনডেনসেট সরবরাহ বন্ধের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করেছে। এ প্রেক্ষিতে সাত দিনের মধ্যে কনডেনসেট সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত।

পাশাপাশি উচ্চ আদালত পেট্রোবাংলা, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) এবং জ্বালানি ও খণিজ সম্পদ বিভাগকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

উচ্চ আদালতের নির্দেশে বলা হয়েছে, কারণ দর্শানোর নোটিশ ছাড়াই কনডেনসেট সরবরাহ বন্ধ করার আইনগত অধিকার সরকারি এ চার সংস্থার নেই। তাই রায়ের কপি পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে সিলেট গ্যাস ফিল্ডকে কনডেনসেট সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত।

পাশাপাশি চুক্তি ভঙ্গ করে এবং আইনগত ভিত্তি ছাড়াই এমন নির্দেশ কেন দিয়েছে এর জবাব সিলেট গ্যাস ফিল্ড, বিপিসি, পেট্রোবাংলা এবং জ্বালানি ও খণিজ সম্পদ বিভাগকে আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

শেয়ারবাজারনিউজ/আ

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.