আইপিও অনুমোদনের প্রক্রিয়ায় ৯ কোম্পানি
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে আসছে ৯ কোম্পানি। ইতিমধ্যে কোম্পানিগুলো বিভিন্ন ইস্যু ম্যানেজারের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) আবেদন করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, ৯ কোম্পানির মধ্যে ৪ কোম্পানি বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে আর বাকী ৫ কোম্পানি অভিহিত মূল্যে বাজারে আসতে চায়।
কোম্পানিগুলো হলো- বসুন্ধরা পেপার মিলস লিমিটেড, এসটিএস হোল্ডিংস লিমিটেড (অ্যাপোলো হাসপাতাল), আমরা নেটওয়ার্কস, ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট লিমিটেড, ইফকো গার্মেন্টস অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড, হ্যামপ্যাল রি ম্যানুফেকশ্চারিং বাংলাদেশ লিমিটেড, মারহাবা স্পিনিং, ভিএফএস থ্রেড ডায়িং লিমিটেড এবং শেফার্ড টেক্সটাইলস মিলস লিমিটেড।
জানা গেছে, বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে বাজারে আসতে বসুন্ধরা পেপার মিলস লিমিটেড, এসটিএস হোল্ডিংস লিমিটেড (অ্যাপোলো হাসপাতাল), আমরা নেটওয়ার্কস এবং ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট লিমিটেড রোড শো সম্পন্ন করেছে।
এর মধ্যে বাজার থেকে বসুন্ধরা পেপার মিলস লিমিটেড ২০০ কোটি টাকা, অ্যাপোলো হাসপাতালের স্বত্ত্বাধিকারী এসটিএস হোল্ডিংস লিমিটেড ৭৫ কোটি টাকা, আমরা নেটওয়ার্কস লিমিটেড ৫৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা এবং ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট লিমিটেড ৬০ কোটি টাকা সংগ্রহ করতে চায় ।
উল্লেখ্য, বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণে শেয়ার বিক্রির দর নির্ধারণ করা হবে। আর এর উপর ভিত্তি করে কোম্পানিগুলো ঠিক করবে কী পরিমাণ শেয়ার বাজারে ছাড়বে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে যে দামে শেয়ার বিক্রি করা শেষ হবে সেই দামে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার কেনার জন্য আবেদন করতে পারবেন। মোট শেয়ারের ৫০ শতাংশ সংরক্ষিত থাকবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য থাকবে ৩০ শতাংশ শেয়ার। বাকী শেয়ার থেকে ১০ শতাংশ করে পাবে মিউচুয়াল ফান্ড ও অনিবাসী বাংলাদেশি বিনিয়োগকারীরা।
বসুন্ধরা পেপার মিলসের প্রসপেক্টাস অনুযায়ী, আইপিওর মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ কারখানার আধুনিকায়ন ও মেশিনারি আমদানি করবে কোম্পানিটি। যাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২০ কোটি টাকা। এছাড়া ৬০ কোটি টাকা ব্যয় হবে ঋণ পরিশোধে। কারখানার অবকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যয় হবে ৬ কোটি টাকা। ইনস্টলেশন কস্টে ব্যয় হবে ৩ কোটি টাকা। যন্ত্রাংশে খরচ হবে ৩ কোটি টাকা। ভূমি ও ভূমি উন্নয়নে খরচ হবে ৩ কোটি টাকা, আইপিওতে খরচ হবে ৫ কোটি টাকা।
৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩.৬৩ টাকা। যা আগের বছর ইপিএস ছিল ৪.৪০ টাকা।
এদিকে অ্যাপোলো হাসপাতাল আইপিওর টাকা কোম্পানির ঋণ পরিশোধ এবং চট্টগ্রামে একটি শাখা চালুর জন্য ব্যয় করবে।ইতোমধ্যে হাসপাতালটি ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে এটি চিকিৎসা সেবা দেওয়া শুরু হবে।
৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে সমাপ্ত হিসাব বছরে এসটিএস হোল্ডিংস তথা অ্যাপোলো হাসপাতালের শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয় ২.৪৯ টাকা। যা আগের বছর ইপিএস ছিল ২.২২ টাকা।
এদিকে, আমরা নেটওয়ার্কস উত্তোলিত অর্থ থেকে ১২ কোটি ৩৮ লাখ ৬১ হাজার ৫৮৫ টাকা ব্যয় হবে ঋণ পরিশোধ করবে। কোম্পানির অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য (বিএমআরই) ব্যয় করা হবে ১৫ কোটি ৫২ লাখ ২ হাজার ৫০০ টাকা। কোম্পানিটি ১৩ কোটি ৮০ লাখ ৮৭ হাজার ৬৪৪ টাকা ব্যয় করে ডাটা সেন্টার স্থাপন করবে। আর বিভিন্ন জায়গায় ওয়াইফাই হটস্পট স্থাপনের জন্য যাবে ১৪ কোটি ৫৩ লাখ ৪৮ হাজার ২৭১ টাকা।
আমরা নেটওয়ার্কসের অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি টাকা। আর পরিশোধিত মূলধন ৩৮ কোটি টাকা। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩.১৬ টাকা। যা এর আগের বছর ছিল ৩.২৬ টাকা।
অন্যদিকে, ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট পুঁজিবাজার থেকে সংগ্রহ করা ৬০ কোটি টাকা দিয়ে কক্সবাজারে একটি ফোর স্টার হোটেল নির্মাণ করবে। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭ কোটি টাকা। এছাড়া বাকী অংশ ব্যয় করা হবে বিদ্যামান হোটেলের আধুনিকায়ন ও ঋণ পরিশোধে।
কোম্পানির তথ্য কণিকা থেকে জানা যায়, আইপিওতে উত্তোলিত অর্থ থেকে ২০ কোটি টাকা ব্যয় হবে ঋণ পরিশোধে। কোম্পানির বিদ্যমান পণ্য ও সেবার আধুনিকরণে ব্যয় করা হবে ১০ কোটি টাকা। কক্সবাজারে হোটেল নির্মাণে ব্যয় করা হবে ২৭ কোটি টাকা। আর আইপিও বাবদ খরচ করা হবে ৩ কোটি টাকা।
কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৬০ কোটি টাকা। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২.৪২ টাকা। যা আগের বছর ইপিএস ছিল ৩.১১ টাকা।
অন্যদিকে অভিহিত মূল্য বজার থেকে ইফকো গার্মেন্টস অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড ২০ কোটি টাকা, হ্যামপ্যাল রিম্যানুফেক্সারিং বাংলাদেশ লিমিটেড ২০ কোটি টাকা, মারহাবা স্পিনিং ৫০ কোটি টাকা, ভিএফএস থ্রেড ডায়িং লিমিটেড ২২ কোটি টাকা এবং শেফার্ড টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড ২০ কোটি টাকা তুলতে চায়।
শেয়ারবাজারনিউজ/এম. আর