আজ: শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ইং, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬, বুধবার |

kidarkar

রেড জোনে ৯ কোম্পানি

Financial_Institun_sharebazar_newsশেয়ারবাজার রিপোর্ট: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক বহির্ভুত আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের ৯টি কোম্পানি অত্যন্ত ঝুঁকিতে বা ‘রেড জোন’-এ ঢুকেছে। আর্থিক অবস্থান পর্যালোচনা বা মূল্যায়ন করে বাংলাদেশ ব্যাংক এ ৯ কোম্পানিকে ‘রেড জোন’-এ ফেলেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের ডিসেম্বর ভিত্তিক তথ্যের ভিত্তিতে চাপ সহনশীল (স্ট্রেস টেস্টিং) প্রতিবেদন তৈরি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে ৯টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে রেড জোনে ফেলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ প্রতিবেদন তৈরিতে প্রতিষ্ঠানগুলোর সুদ হার বৃদ্ধিজনিত ঝুঁকি, ঋণ ঝুঁকি, সম্পত্তির (ইক্যুইটি) মূল্যজনিত ঝুঁকি ও তারল্য অভিঘাত—এ চার ঝুঁকি বিবেচনায় নেওয়া হয়। চাপ সহনশীল প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে গ্রিন, ইয়েলো ও রেড—এ তিন জোনে ভাগ করা হয়। রেড জোনে পড়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিবিড়ভাবে তদারকিও শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

রেড জোনে পড়া এ ৯টি প্রতিষ্ঠান হলো: বাংলাদেশ ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি (বিডি ফাইন্যান্স), বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি), এফএএস ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, ফারইস্ট ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, ইসলামিক ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, প্রাইম ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্স ও ইউনিয়ন ক্যাপিটাল লিমিটেড। এর মধ্যে ছয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর ফেসভ্যালুর (অভিহিত মূল্য) নীচে লেনদেন হচ্ছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মূখপাত্র উপ-মহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল ইসলাম শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে বলেন, রেড জোনে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মফিজউদ্দিন সরকার শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে বলেন, আমাদের চলতি হিসাব আমানত নিতে পারি না, ঋণ করে ব্যবসা করতে হয়। আমরা জামানত ছাড়াই বড় প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিয়ে থাকি। আমাদের মূলধনও ছোট। ফলে অনেক ভালো প্রতিষ্ঠানও রেড জোনে পড়ে যাচ্ছে।

জানা গেছে, ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ৪৪ হাজার ৮৪৭ কোটি টাকা ঋণ বা লিজ দিয়েছে। এর মধ্যে খেলাপি হয়ে গেছে ৪ হাজার ১ কোটি টাকা। অর্থাৎ বিতরণের ৮.৯২ শতাংশ ঋণই খেলাপি।

সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিন্যান্স কোম্পানি। প্রতিষ্ঠানটির বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়ে গেছে ৮৮৪ কোটি টাকা। বিতরণ করা ঋণের ৮৩.১২ শতাংশই খেলাপি। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকদের অনিয়মের ফলে সরিয়ে দেওয়া হয় কয়েকজনকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বসানো হয়েছে পর্যবেক্ষকও। প্রতিষ্ঠানটির মালিকানাতেও পরিবর্তন এসেছে।

প্রাইম ফিন্যান্সের খেলাপি ঋণ ১২০ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৯.৭৪ শতাংশ। প্রিমিয়ার লিজিংয়ের খেলাপি ঋণ ১১৩ কোটি টাকা বা ৮.৯৯ শতাংশ। ইসলামিক ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের খেলাপি ঋণ ৬৭ কোটি টাকা বা ৮.৬১ শতাংশ। ইউনিয়ন ক্যাপিটেলের খেলাপি ১২১ কোটি টাকা বা ৮.৪১ শতাংশ।

এদিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে জানা যায়, বিআইএফসি, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, এফএএস ফাইন্যান্স, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, প্রাইম ফাইন্যান্স এবং প্রিমিয়ার লিজিংয়ের শেয়ার দর অভিহিত মূল্যের নীচে লেনদেন হচ্ছে। এর মধ্যে ২০১৫ সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য বিআইএফসি ও প্রাইম ফাইন্যান্স শেয়ারহোল্ডারদের কোন ডিভিডেন্ড দিতে পারেনি।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, নিয়মানুযায়ী রেড জোনে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোকে তিন বছরের মূলধন ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা জমা দিতে হয়। এ ছাড়া খেলাপি ঋণ আদায়, ঋণ বহুমুখীকরণ, শেয়ারে বিনিয়োগ ও আপত্কালীন তারল্য পরিকল্পনা জমা দিতে হয়। ইয়েলো জোনে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও একইভাবে তদারকি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। গ্রিন জোনে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো সূচকে অবনতি ঘটলে কঠোরভাবে তদারকি করা হয়।

শেয়ারবাজারনিউজ/আ

 

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.