আজ: মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৩ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬, বৃহস্পতিবার |

kidarkar

সরকারি শেয়ার বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াবে: রকিবুর রহমান

governmentশেয়ারবাজার রিপোর্ট: প্রধানমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রীর নির্দেশনা সত্ত্বেও গত ৬ বছরে বাজারে আসেনি সরকারি ২১ কোম্পানির শেয়ার। অথচ নির্ধারিত সময়ে সরকারি শেয়ার ছাড়া সম্ভব হলে বিশ্ববাসীর কাছে দৃষ্টান্ত হতো বাংলাদেশের শেয়ারবাজার। এতে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থাও বৃদ্ধি পেতো বলে মনে করছেন দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) শেয়ারহোল্ডার পরিচালক মো: রকিবুর রহমান।

মো. রকিবুর রহমান শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে বলেন, ২০১০ সালে ভালো শেয়ারের অভাবে বাজারে বিপর্যয় হয়েছে। কারণ বাজারে যেভাবে পরিমাণ বিনিয়োগকারী এসেছে, বিপরীতে ওই পরিমাণ ভালো শেয়ার ছিল না।

এ বিষয়ে তত্ত্বাবিধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ও বিএসইসি’র সাবেক চেয়ারম্যান মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, বাজারে মূল সমস্যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা সংকট। এই সংকট কাটাতে ভালো শেয়ার থাকা জরুরি। তার মতে, বাংলাদেশের বিনিয়োগকারীরা হুজুগে দুর্বল বিনিয়োগ করে। ভালো শেয়ার এলে এ প্রবণতা কমে আসবে।

শেয়ার অফলোডের পাইপলাইনে থাকা ২১ সরকারি কোম্পানির মধ্যে মাত্র ৩টি কোম্পানি প্রাথমিক প্রস্তুতি নিয়েছে। বাকি ১৮টি প্রতিষ্ঠানের কোনো অগ্রগতি নেই। সংশ্লিষ্টদের মতে, শেয়ার অফলোডের ক্ষেত্রে গড়িমসি করছে এসব কোম্পানিতে থাকা সরকারি আমলা। তারা নতুন নতুন অজুহাত বের করছেন। আর তাদের অসহযোগিতার কারণেই শেয়ার ছাড়ার প্রক্রিয়াটি পিছিয়ে যাচ্ছে।

জানা গেছে, ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সরকারি ৩৪ কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির উদ্যোগ নেয়া হয়। তবে ওই সময় সে উদ্যোগ বেশি দূর এগোয়নি। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সালে বাজারে ভালো শেয়ারের ভয়াবহ সংকট দেখা দেয়। এরপর সংকট কাটাতে সরকারি কোম্পানিকে বাজারে আনার উদ্যোগ শুরু হয়। ২০১০ সালের ১৩ জানুয়ারি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে অর্থ মন্ত্রণালয় এক বৈঠকে সরকারি কোম্পানির ৫১ শতাংশ শেয়ার সরকারের হাতে রেখে বাকি শেয়ার পাবলিকের মধ্যে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ওই সময়ে কোম্পানিগুলোকে ২০১০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেয়ার ছাড়তে সময়সীমা বেধে দেয়া হয়।

এরপর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ২০১১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি আরেকটি বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী। ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা জানিয়েছে কোম্পানিগুলোকে শেয়ার ছাড়ার তাগিদ দেয়া হয়।

এর মধ্যে কয়েকটি কোম্পানির সময়সীমা ২০১১ সালের ১৪ ও ৩০ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়। তবে এ সময়ে মোট কোম্পানির সংখ্যা ৩৪ থেকে কমে দাঁড়ায় ২৬টিতে। সর্বশেষ শেয়ার ছাড়ার জন্য গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় সীমা বাড়ানো হয়।

এর মধ্যে গত ৬ বছরে ৫টি কোম্পানি শেয়ার ছাড়তে পেরেছে। এগুলো হলো: যমুনা অয়েল কোম্পানি, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন ও রূপালী ব্যাংক। কিন্তু বাকি ২১টি কোম্পানিই শেয়ার ছাড়তে ব্যর্থ হয়েছে।

দীর্ঘদিন পর চলতি বছরের এপ্রিলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. ইউনুসুর রহমান এ বিষয়ে উদ্যোগ নেন। ৫ মে তার সভাপতিত্বে সরকারি মালিকানাধীন বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে তিন কোম্পানি তাদের শেয়ার ছাড়ার ব্যাপারে আগ্রহের কথা জানিয়েছে। এগুলো হলো এসেনসিয়াল ড্রাগস, বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেমস এবং লিক্যুইফাইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস। ওই বৈঠকে বাকি কোম্পানিগুলোকে শেয়ার ছাড়ার ব্যাপারে চলতি বছরের ৩০ জুনের মধ্যে অগ্রগতি নিজ নিজ মন্ত্রণালয়কে জানাতে বলা হয়েছিল। কিন্তু কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

শেয়ারবাজারনিউজ/আ

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.