আজ: বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬, বৃহস্পতিবার |

kidarkar

মার্জার এবং অধিগ্রহণে ক্ষমতা বাড়াচ্ছে বিএসইসি

BSECশেয়ারবাজার রিপোর্ট: দীর্ঘ দিন পর হলেও কোম্পানির মার্জার এবং একীভূত (এক্যুইজিশন) প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে অবশেষে সক্রিয় হয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

এর জন্য নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাটি নিজেদের ক্ষমতা বাড়াতে আইন তৈরি করছে। ইতোমধ্যে একটি পরিকল্পনাও গ্রহণ করেছে। পরিকল্পনা মতে, কোন কোম্পানি অন্য কোম্পানির সাথে মার্জার কিংবা একীভূত করতে চাইলে আদালতে যাওয়ার আগে বিএসইসি’র অনুমোদন নিতে হবে। এতে মার্জার কিংবা একীভূত ইস্যুতে আইন লঙ্ঘনের সম্ভাবনা থাকবে না বলে মনে করছে কমিশন।

কোম্পানির মার্জার এবং একীভূতের স্বচ্ছতা নিয়ে বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। আদালতের নির্দেশ মতে মার্জার কিংবা একীভূত করতে গিয়ে বেশ কিছু জটিলতা তৈরি হয়েছে। যা বিএসইসি’র নজরেও এসেছে। তাই এসব জটিলতা পরিহারে বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় এমন উদ্যোগ নিয়েছে কমিশন।

কমিশনের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেন, অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশে মার্জার এবং একীভূত নিয়ে আলাদা কোন আইন নেই। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানগুলো কোম্পানি আইন অনুযায়ী উচ্চ আদালতের অনুমতি নিয়ে মার্জার এবং একীভূত করছে। এতে বিভিন্ন জটিলতা তৈরি হচ্ছে। তাই এসব জটিলতা পরিহারে ও বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় কমিশন এমন উদ্যোগ নিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কোম্পানিগুলোকে মার্জার এবং একীভূত ইস্যুতে আদালতে যাওয়ার আগে কমিশনের কাছে আবেদন করার বাধ্যবাধকতা রাখা হবে। সেই সঙ্গে কোম্পানির ভ্যালুয়েশন প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করতে হবে। মূলধন বৃদ্ধিসহ ভ্যালুয়েশন প্রতিবেদন যাচাই বাছাই করে কমিশন চূড়ান্ত অনুমোদন দিলেই কোম্পানিগুলো আদালতে যেতে পারবে এমন শর্ত রাখা হবে আইনটিতে।

সম্প্রতি সামিট পাওয়ারের সঙ্গে সামিট পূর্বাঞ্চল পাওয়ারের একীভূত ইস্যুতে বেশ কিছু জটিলতা তৈরি হয়। বিএসইসি অভিযোগ করে, সামিটের একীভূতের ক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশ যথাযথ মানা হয়নি। বিশেষ করে সামিট মূলধন বাড়ানোর জন্য কমিশনের অনুমোদন নেয়নি এবং সম্পদ ভ্যালুয়েশনও যথাযথ সম্পন্ন হয়নি। তাছাড়া শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ার যথাযথ জমা না করে সামিট পূর্বাঞ্চলকে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে তালিকাচ্যুত করা হয়। আর শেয়ার বুঝিয়ে না দিয়েই সামিট পাওয়ারের লেনদেন চালু করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে বিএসইসি সামিট পাওয়ারের শেয়ার লেনদেন পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়।

এর আগে, ইউনাইটেড পাওয়ারের একীভূতে আদালতের অনুমোদনের বিরুদ্ধে আপীল করে কমিশন। এতে ইউনাইটেড পাওয়ারের একীভূত প্রক্রিয়া স্থগিত হয়। আপীলে বিএসইসি অভিযোগ করে, একীভূতের জন্য ইউনাইটেড পাওয়ার ভ্যালুয়েশন প্রতিবেদন যথাযথভাবে তৈরি করেনি। তবে পরবর্তীতে অনুষ্ঠিত বিশেষ সাধারণ সভায় শেয়ারহোল্ডাররা অনুমোদন না করায় একীভূতের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে কোম্পানিটি।

প্রসঙ্গত, কোম্পানির মার্জার এবং টেকওভার জটিলতা নিরসনে বিদ্যমান সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শেয়ার অর্জন, অধিগ্রহণ ও কর্তৃত্ব গ্রহণ) বিধিমালা-২০০২ সংশোধন কিংবা আলাদা বিধিমালা তৈরি করা যায় কিনা খতিয়ে দেখতে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে কমিশন। বিএসইসি’র ৫৭১তম কমিশন সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

কমিটির আহবায়ক হিসেবে রয়েছেন নির্বাহী পরিচালক মো: মাহবুবুল আলম এবং সদস্য-সচিব হিসেবে রয়েছেন উপ-পরিচালক কাউসার আলী। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন রিপন কুমার দেবনাথ এবং মো: আবুল কালাম।

উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে বেক্সিমকো ফার্মা এবং বেক্সিমকো ইনফিউশনের একীভূত হওয়ার মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারী মার্জার এবং অ্যাকুইজিশনের সাথে পরিচিতি হয়। পরবর্তীতে ২০০৬ সালে বেক্সিমকো টেক্সটাইল, বেক্সিমকো ডেনিম এবং বেক্সিমকো নিটিং পদ্মা টেক্সটাইলের সাথে একীভূত হয়ে বেক্সটেক্স নামে পরিচিতি হয়। পরে বেক্সটেক্স বেক্সিমকো লিমিটেডের সাথে একীভূত হয়।

সর্বশেষ ২০১৪ সালে কেয়া কসমেটিকস তার সহযোগী কোম্পানি কেয়া নিট কম্পোজিট লিমিটেড, কেয়া কটন মিলস লিমিটেড এবং কেয়া স্পিনিং মিলের সাথে একীভূত হয়।

আর এ কোম্পানিগুলোর মার্জার প্রক্রিয়া আদালতের রায়ের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।

শেয়ারবাজারনিউজ/আ

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.