আজ: বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৩ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৩ অক্টোবর ২০১৬, বৃহস্পতিবার |

kidarkar

শেয়ার বিক্রি করতে গিয়ে ফেঁসে গেছে সিটি ব্যাংকের পর্ষদ

city_bankশেয়ারবাজার রিপোর্ট: অর্থমন্ত্রীর সুপারিশ নিয়েও বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে আইএফসি’র কাছে শেয়ার বিক্রির অনুমোদন আদায় করতে পারেনি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিটি ব্যাংক লিমিটেড।

বরং কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকটিকে বলে দিয়েছে, পর্ষদ সদস্যরা ব্যাংক কোম্পানি আইন না মানায় আইএফসির মতো প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি পর্ষদের নতুন সদস্য হলে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হতে পারে। সিটি ব্যাংকের পর্ষদের সদস্যরা নিয়মের মধ্যে চলে এলে আইএফসির কাছে শেয়ার হস্তান্তরের অনুমতি দেওয়া হতে পারে।

এর আগে ব্যাংকের পর্ষদ এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন আদায়ের জন্য অর্থমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছিল। আর সিটি ব্যাংককে শেয়ার বিক্রির অনুমোদন দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে সুপারিশও করেছিল অর্থমন্ত্রী।

সূত্র জানায়, সিটি ব্যাংকের কমপক্ষে পাঁচজন পরিচালক নিয়ম ভেঙে পর্ষদে বহাল আছেন। এর মধ্যে একটি ব্যাংকে একই পরিবারের দুয়ের বেশি পরিচালক না থাকার বিধান থাকা সত্ত্বেও চার পরিচালক বহাল আছেন। আবার ৩ পরিচালক ব্যাংকের পাশাপাশি অন্য দুটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হিসেবেও বহাল আছেন। আদালতের আদেশ নিয়ে তাঁরা ব্যাংকের পদে বহাল আছেন। এসব কারণেই আটকে দেওয়া হয়েছে আইএফসির কাছে সিটি ব্যাংকের শেয়ার হস্তান্তর। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরও বিষয়টি সিটি ব্যাংককে জানিয়েছেন।

এর আগে, বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) ১৩১ কোটি টাকায় দ্য সিটি ব্যাংকের ৫ শতাংশ শেয়ার (প্রতিটি শেয়ার ২৮.৩০ টাকা করে) কেনার জন্য চুক্তি করে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি। চুক্তির শর্ত মানতে গিয়ে সংঘবিধির ৫০-এরও বেশি ধারা সংশোধন করে ব্যাংকটি।

এসব বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে দ্য সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহেল আর কে হুসেইন শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে বলেন, আইএফসি শেয়ার কেনা মানে বিদেশি বিনিয়োগ আসা। বাংলাদেশের অর্থনীতি যে উদীয়মান, তারই প্রমাণ মেলে এতে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের পাশাপাশি সিটি ব্যাংকেরও ভাবমূর্তি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে। আমরা চাই সিটি ব্যাংকে আইএফসির শেয়ার থাকুক।

জানা গেছে, ৫ শতাংশ শেয়ারের বিপরীতে আইএফসির দুজন পরিচালক থাকবেন সিটি ব্যাংকে। পাশাপাশি শেয়ার কেনার শর্ত হিসেবে আইএফসির পক্ষ থেকে ব্যাংকটির সংঘবিধিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়। সিটি ব্যাংক তাতে রাজি হয়। এ জন্য গত ২৭ মার্চ ও ৩১ মে বিশেষ সাধারণ সভার আয়োজন করে ব্যাংকটি, যাতে এসব সংশোধনী ও শেয়ার হস্তান্তরের অনুমোদন করে শেয়ারহোল্ডাররা। ব্যাংকটি শেয়ার হস্তান্তরের জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কোম্পানির (বিএসইসি) কাছে আবেদন করলে তাতে অনুমোদন পায়। তবে বিএসইসি এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নেওয়ার নির্দেশনা দেয়। দ্য সিটি ব্যাংক শেয়ার হস্তান্তর ও সংঘবিধি পরিবর্তনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক উভয় আবেদনই নাকচ করে দেয়।

জানা গেছে, ২০১৩ সালে ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৪ সালের ২২ জুলাই পর্যন্ত ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে একক পরিবারের সদস্যসংখ্যা দুজনে নামিয়ে আনার সময় বেঁধে দিয়েছিল। কিন্তু বর্ধিত সময়ের মধ্যে দ্য সিটি ব্যাংক তা মানেনি। পরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাঁদের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিলে আদালতের আশ্রয় নেন পরিচালকেরা। সিটি ব্যাংকের পর্ষদে একই পরিবার থেকে চারজন সদস্য বহাল রয়েছেন। তাঁরা হলেন রুবেল আজিজ, আজিজ আল কায়সার, তাবাসসুম কায়সার ও সাইয়েদা সায়রিন আজিজ।

এদিকে ব্যাংকটির তিনজন পরিচালক দীন মোহাম্মদ, মোহাম্মদ সোয়েব ও হোসেন খালেদ ব্যাংকের পাশাপাশি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হিসেবে বহাল আছেন। এর মধ্যে হোসেন খালেদ বিডি ফিন্যান্সের চেয়ারম্যান। এ ছাড়া দীন মোহাম্মদ ফিনিক্স ফাইন্যান্সের চেয়ারম্যান ও মোহাম্মদ সোয়েব ভাইস চেয়ারম্যান। আদালতের আদেশ নিয়ে তাঁরাও একই সঙ্গে দুই পদে বহাল আছেন।

শেয়ারবাজারনিউজ/আ

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.