আজ: শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ইং, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৭ অক্টোবর ২০১৬, বৃহস্পতিবার |

kidarkar

শেয়ার না পেলে আদালতে যাবে সোনালী ব্যাংক

Sonali_Bank_sm_112795273শেয়ারবাজার রিপোর্ট: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত পূবালী ব্যাংক লিমিটেডের শেয়ার না পেলে আদালতে যাবে সোনালী ব্যাংক।

সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, সোনালী ব্যাংক ও পূবালী ব্যাংকের সাথে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠক শেষে এমন মন্তব্য করে সোনালী ব্যাংক।

বৈঠকে রাষ্ট্র মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংক যে দাবী করেছে তার বিস্তারিত তথ্য-উপাত্য চেয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ।

বৈঠকটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ফজলুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সোনালী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিকুল ইসলাম চৌধুরী, পূবালী ব্যাংকের কোম্পানি সচিব ও মহাব্যবস্থাপক সাঈদ শিকদার এবং সোনালী ব্যাংকের উপমহাব্যবস্থাপক বিশ্বনাথ পাল উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে বিশ্বনাথ পাল শেয়ারবাজার নিউজকে বলেন, সভায় শেয়ারের মালিকানা নিয়ে চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের দাবীর পক্ষে বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত ও প্রয়োজনীয় দলিলপত্র দিতে বলা হয়েছে। পূবালী ব্যাংককেও একই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। উভয়পক্ষের দলিলপত্র দেখে আইন মন্ত্রণালয়ের পরামর্শে পরবর্তী নির্দেশনা দেবে অর্থ মন্ত্রণালয়।

তবে সোনালী ব্যাংকের আরেক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান না হলে সোনালী ব্যাংক আদালতে যাবে।

জানা যায়, সোনালী ব্যাংকের মালিকানায় থাকা পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত পূবালী ব্যাংকের ১ কোটি ১৫ লাখ টাকার শেয়ারের মালিকানা নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। স্বাধীনতার আগে পূবালী ব্যাংকে বিনিয়োগ করা ৩ লাখ ৮৩ হাজার টাকার শেয়ার বিভিন্ন সময়ে বোনাস শেয়ারসহ এখন অভিহিত মূল্য হয়েছে ৫ লাখ ১০ হাজার টাকা। সোনালী ব্যাংক থেকে এসব অর্থ পরিশোধের দাবি করা হলেও পূবালী ব্যাংক করছে না।

পাকিস্তান আমলের ইস্টার্ন মার্কেন্টাইল ব্যাংক স্বাধীনতার পরে পূবালী ব্যাংকে রূপান্তর হয়। একই সঙ্গে আগের ব্যাংকের সমুদয় দায়-দেনা পূবালী ব্যাংকের নামে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু ১৯৮৭ সালে পূবালী ব্যাংককে যখন বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হয় তখন সোনালী ব্যাংক এই শেয়ারের মালিকানা দাবি করে তা পরিশোধের অনুরোধ করে। কিন্তু পূবালী ব্যাংক তা পরিশোধ করেনি। পরে সোনালী ব্যাংক এই বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করে। এতেও বিষয়টি সমাধান হয়নি। ১৯৯৮ সালের ডিসেম্বরে এই শেয়ারের মালিকানা নির্ধারণের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি সভা হয়। ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আইনগত দিক পর্যালোচনা করে শেয়ারের মালিকানার বিষয়টি নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত কোনো চূড়ান্ত ফয়সালা হয়নি।

সোনালী ব্যাংকের এক প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই বিনিয়োগের বিপরীতে তাদের শেয়ারের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১ হাজার ২২টি। বর্তমানে পূবালী ব্যাংকের প্রতিটি শেয়ারের দাম ২২ টাকা ৫০ পয়সা। এ হিসাবে এর মূল্য দাঁড়ায় ১ কোটি ১৫ লাখ টাকা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সোনালী ব্যাংক ১৯৫৯ সালে তৎকালীন ইস্টার্ন মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ৩৮ হাজার ৩৩৫টি শেয়ার কিনে ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৩৫০ টাকা বিনিয়োগ করে। এর বিপরীতে ১৯৬৮ সালে বোনাস শেয়ার পায় ৩ হাজার ৮৩৩টি, যার মূল্য ছিল ৩৮ হাজার ৩৩০ টাকা। ১৯৬৯ সালে বোনাস শেয়ার পায় ৪ হাজার ২১৬টি। যার মূল্য ছিল ৪২ হাজার ১৬০ টাকা। ১৯৭০ সালে বোনাস শেয়ার পায় ৪ হাজার ৬৩৮টি, যার মূল্য ছিল ৪৬ হাজার ৩৮০ টাকা।

গত বছরের ২১ জুলাই অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে দীর্ঘ সময় ধরে সোনালী ব্যাংকের দাবিকৃত পাওনা পরিশোধের বিষয়ে পূবালী ব্যাংককে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু তারা তা পরিশোধ করেনি।

শেয়ারবাজারনিউজ/আ

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.