আজ: শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ইং, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২২ নভেম্বর ২০১৬, মঙ্গলবার |

kidarkar

ভালো অবস্থানে ৭ ব্যাংক

bankশেয়ারবাজার রিপোর্ট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ অর্থবছর পর্যন্ত  বেশিরভাগ ব্যাংকের মূলধনের অনুপাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ শতভাগের কাছাকাছি। এমনও কিছু ব্যাংক রয়েছে যেগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ শতভাগ ছাড়িয়ে গেছে। তবে ৭টি ব্যাংক রয়েছে যেগুলো খেলাপি ঋণের দিক দিয়ে তুলনামূলক ভালো অবস্থানে রয়েছে। ব্যাংকগুলো হলো: ইস্টার্ন ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, সাউথইষ্ট ব্যাংক,মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক,মার্কেন্টাইল ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক এবং ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, ইস্টার্ন ব্যাংকের ২ হাজার ২৪ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে খেলাপি ঋণ ৪৮৪ কোটি টাকা, যা মূলধনের প্রায় ২৪ শতাংশ। অন্যদিকে ব্র্যাক ব্যাংকের ২ হাজার ২৪১ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে খেলাপি ঋণ ৬৫৩ কোটি, যা মূলধনের ২৯.১৭ শতাংশ।

সাউথইস্টের ২ হাজার ৭০২ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে খেলাপি ঋণ ৮০৮ কোটি, যা মূলধনের ২৯.৯০ শতাংশ। এর পরই মিউচুয়াল ট্রাস্টের ৯২৮ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে ৩১২ কোটি টাকা, মার্কেন্টাইলের ১ হাজার ৫৯৬ কোটি টাকার বিপরীতে ৫৭৬ কোটি টাকা, যমুনা ব্যাংকের ১ হাজার ৪৯১ কোটি টাকার বিপরীতে ৫৩৯ কোটি টাকা ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ১ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকার বিপরীতে খেলাপি ঋণ ৬৫২ কোটি টাকা।

আর বাকি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে সোনালী ব্যাংকের ৫ হাজার ৮৩৮ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৮ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা। এ হিসাবে ব্যাংকটির মূলধনের ১৪৬ শতাংশই খেলাপি ঋণ। আরেক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক অগ্রণীর মূলধনের ১২৭ শতাংশ খেলাপি ঋণ। ৪ হাজার ৪৬৮ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ ছিল ৫ হাজার ৭১১ কোটি টাকা। এছাড়া জনতা ব্যাংকের ৪ হাজার ২০৩ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে খেলাপি ঋণ ৪ হাজার ৯৮৫ কোটি ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেডের (বিডিবিএল) ১ হাজার ৮০৪ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে খেলাপি ঋণ ৮৭৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ মূলধনের বিপরীতে জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ১১৮ ও বিডিবিএলের ৪৮ শতাংশ।

রূপালী ব্যাংকের মূলধনের পরিমাণ ১ হাজার ৯২ কোটি টাকা। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২৯ কোটি টাকা। এ হিসাবে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটির মূলধনের ২৭৭ শতাংশ খেলাপি ঋণ। রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের ২ হাজার ৫৯৩ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ৬ হাজার ৭৯৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ বেসিক ব্যাংকের মূলধনের ২৬১ শতাংশই খেলাপি ঋণ। রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ৪০৬ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৯৭৫ কোটি টাকা। এ হিসাবে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ মূলধনের ২৩৯ শতাংশ। এছাড়া বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ৩৪১ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৩৩ কোটি টাকা। এ হিসাবে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ মূলধনের ১৫৬ শতাংশ। আর মূলধন ঘাটতিতে রয়েছে আইসিবি ইসলামিক ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক দুটির খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৫৪৬ কোটি ও ৪ হাজার ৮৪১ কোটি টাকা।

মূলধনের ৬০ শতাংশের বেশি খেলাপি ঋণ থাকা ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড। ৩ হাজার ৩২০ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২ হাজার ৪২১ কোটি টাকা। এ হিসাবে ন্যাশনাল ব্যাংকের মূলধনের ৭২ শতাংশ খেলাপি ঋণ। এছাড়া প্রিমিয়ার ব্যাংকের ১ হাজার ৭৯ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে খেলাপি ঋণ ৬৯৫ কোটি টাকা বা ৬৪ শতাংশ। আইএফআইসির ১ হাজার ৩৫১ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে খেলাপি ঋণ ৮৩৭ কোটি টাকা বা ৬২ শতাংশ এবং ব্যাংক এশিয়ার ১ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে খেলাপি ঋণ ১ হাজার ৮৭ কোটি টাকা বা ৬১ শতাংশ। আর উত্তরা ব্যাংকের ১ হাজার ৩১৯ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৭৯২ কোটি টাকা। অর্থাৎ ব্যাংকটির মূলধনের ৬০ শতাংশ খেলাপি ঋণ।

মূলধনের ৫০ শতাংশের বেশি খেলাপি ঋণ থাকা ব্যাংকগুলোর মধ্যে ইসলামী ব্যাংকের সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ২ হাজার ৯১৪ কোটি টাকা। এ হিসাবে ৪ হাজার ৯৫৭ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ ৫৮ শতাংশ। অন্য ব্যাংকগুলোর মধ্যে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ১ হাজার ২২৪ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে খেলাপি ঋণ ৭১৪ কোটি, এসআইবিএলের ১ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে ৭৩৮ কোটি, ওয়ান ব্যাংকের ১ হাজার ১৩৩ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে ৬৪১ কোটি ও এনসিসি ব্যাংকের ১ হাজার ৫৩৪ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে খেলাপি ঋণ ৮৫৭ কোটি টাকা। এছাড়া প্রাইম ব্যাংকের ২ হাজার ৩৩৬ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৬৯ কোটি, আল-আরাফাহ ব্যাংকের ২ হাজার ২৪ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে ১ হাজার ৯৪ কোটি, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ১ হাজার ৪১ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে ৫৫৪ কোটি ও সিটি ব্যাংকের ২ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে খেলাপি ঋণ ১ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা।

যেসব ব্যাংকের মূলধনের বিপরীতে ৪০ শতাংশের বেশি খেলাপি ঋণ রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে ট্রাস্ট ব্যাংকের ১ হাজার ১০৯ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫৪৫ কোটি, ইউসিবিএলের ২ হাজার ৫৪২ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে ১ হাজার ২৪৬ কোটি, এক্সিম ব্যাংকের ২ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে ১ হাজার ১৬৭ কোটি ও পূবালী ব্যাংকের ২ হাজার ৪১৭ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে খেলাপি ঋণ ১ হাজার ১২৫ কোটি টাকা। এছাড়া ঢাকা ব্যাংকের ১ হাজার ৪৪৩ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৬৬৬ কোটি, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ১ হাজার ২০৭ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে ৫২১ কোটি ও এবি ব্যাংকের ২ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে খেলাপি ঋণ ৯৭৬ কোটি টাকা।

শেয়ারবাজারনিউজ/ম.সা

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.