আজ: বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৬ নভেম্বর ২০১৬, শনিবার |

kidarkar

ইন্টারভিউয়ের ১০ প্রশ্নের কৌশলগত উত্তর

interviewশেয়ারবাজার ডেস্ক: ইন্টারভিউয়ে প্রাসঙ্গিক কথা বলতে পারাটা একটি শিল্প। একটি দক্ষতা। আর এই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে সহজেই বোর্ডকে খুশি করতে পারেন। ছিনিয়ে আনতে পারেন চাকরিটিকে! প্রায় সব ধরনের চাকরিতেই কিছু সাধারণ প্রশ্ন করা হয়। চলুন জেনে নেয়া যাক উত্তর কেমন হতে পারে-

১) নিজের সম্পর্কে বলুন এই ধরনের প্রশ্ন করা হলে প্রায় সবাই ভেবে থাকেন হয়ত একান্তই নিজের সম্পর্কে বলতে হবে। কিন্তু মনে রাখবেন, আপনাকে কিন্তু শুধু জিজ্ঞেস করা হয়নি পছন্দের ফুটবল দল কোনটি। কিংবা অবসরে কি করেন? বরং চাকরির সাথে সম্পর্কিত তথ্য সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছে। অর্থাৎ ১ মিনিটের মধ্যে আপনাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে হবে। ব্যক্তিগত তথ্যের সাথে চাকরি সম্পর্কিত প্রাসঙ্গিক তথ্য দেওয়াটাই বাঞ্ছনীয়। এতে বোর্ড প্রথমেই আপনার প্রতি পজিটিভ হবে। চাকরি সম্পর্কিত তথ্যে অভিজ্ঞতা, অর্জন এবং আপনার অবদান এই তিনটি শব্দকে গুরুত্ব দিতে পারেন।

২) কেন আপনাকে নিয়োগ দেয়া উচিত? এই প্রশ্নে বেশির ভাগ লোকই গতানুগতিক কথা বলে থাকে। যেমন- আমি খুব সৎ, কাজকে সম্মান করি, সময় মত কাজ শেষ করি, ইত্যাদি। এই ধরনের উত্তর দিলে মনে হবে আপনি মুখস্ত করে এসেছেন। তাই এই ধরনের কথা বাদ দিয়ে একদম নির্দিষ্ট ভাবে উত্তর দেওয়া উচিৎ। চাকরির কোন একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আপনার দক্ষতার কথা বলতে পারেন। যা অনেক বেশি সহায়ক হবে। যেমন- কোন একটা স্কুলে আপনি গণিতের শিক্ষকের পদে ইন্টারভিউ দিচ্ছেন। এই পর্যায়ে গণিতে আপনার ভাল রেজাল্ট, পারদর্শিতা এবং অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরুন। এক কথায় খুবই নির্দিষ্ট করে আপনার দক্ষতাকে প্রাধান্য দিয়ে এ জাতীয় প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন।

৩) কেন আপনি এখানে কাজ করতে চান? ইন্টারভিউ দিতে আসার আগেই সে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে গবেষণা করে আসা উচিৎ। তাহলে এ ধরনের প্রশ্নে আপনার উত্তরটাই সবচাইতে ভাল হতে পারে। যেমন- কোম্পানির লক্ষ্য কী, তারা কী কাজ করে, তাদের চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাবনা। এক কথায় বেশ ভাল একটা ধারণা নিয়ে আসা। চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাবনাতে বেশি গুরুত্ব দেয়া উচিত। কেননা, আপনি একটা চ্যালেঞ্জকে উল্লেখ করে তার একটা সমাধানের পথ দেখাতে পারেন। এতে ভবিষ্যতে কোম্পানির কি লাভ হবে তা বোঝাতে পারেন। এ ধরনের উত্তর বোর্ডকে খুশি করতে বাধ্য। যেমন- প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানই চায় যতটা সম্ভব কম টাকায় নিয়োগ দেয়া। এখন আপনি যদি H.R এর চাকরির ক্ষেত্রে এই সম্পর্কিত কোন একটা নতুন পলিসির কথা বলে ব্যাখ্যা করতে পারেন তাহলেই বাজিমাত!

৪) আপনার দুর্বলতা সম্পর্কে বলুন… কখনই বোঝাবেন না যে আপনার কোন দুর্বলতা নেই। প্রত্যেক মানুষেরই কিছু না কিছু দুর্বলতা থাকে। এটা সবাই জানে। তা আপনারও আছে। আর সেটা বলার সৎ সাহস রাখা উচিত। সবচেয়ে ভাল হয়, আপনি এমন একটি দুর্বলতার কথা উল্লেখ করুন যা কোম্পানির কাজের কোন ক্ষতি করবে না।

৫) কেন আপনি আপনার আগের চাকরি ছেড়ে আসতে চাচ্ছেন? এই উত্তরে আগের চাকরি সম্পর্কে কখনই নেগেটিভ কিছু বলা উচিত হবে না। যেমন- বস ভাল ছিলেন না, সহকর্মীরা আন্তরিক না ইত্যাদি। তাতে আপনার প্রতি বিরূপ ধারণা সৃষ্টি হবে। বরং বর্তমান চাকরির ক্ষেত্রে আপনি কোন কোন ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারবেন সেটার একটা ধারণা দিন। বর্তমান কাজের পরিসীমা দেখিয়ে বলতে পারেন “আমি আমার কাজের ক্ষেত্রকে বাড়াতে চাই। তাই এই চাকরি করতে চাই।”

৬) পাঁচ বছর পর নিজেকে কোন অবস্থায় দেখত চান? পাঁচ বছর পর আপনি আপনাকে সর্বোচ্চ কোন ভাল পজিশনে দেখতে চান সেটা বলা দোষের কিছু না। তবে পাঁচ বছর পর এই প্রতিষ্ঠানের কোন পজিশনে থেকে তাকে সামনে নিয়ে যেতে চান সেটা বলা বেশি ভাল। যেমন- আপনি যদি সহকারী ম্যানেজার পদের জন্য ইন্টারভিউ দেন। তাহলে বলতে পারের- “পাঁচ বছর পর আমি এই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার হওয়ার আশা রাখি। একটি কথা অবশ্যই মনে রাখবেন- ইন্টারভিউয়ে মনগড়া উত্তর দেওয়া যাবেনা। মনে হয়েছে বলেই, বলে ফেলবেন, এমন কিছুর কোন সুযোগ নেই। প্রত্যেকটা উত্তরের পিছনেই যুক্তি থাকা চাই। ধরুন, আপনি বলেছেন- আপনি সৎ। তাহলে সাথে সাথে এটাও বলার চেষ্টা করুন কেন আপনি সৎ? খুব সহজে, সহজ কথায় যুক্তি দিন।

৭) আপনার সবচেয়ে বড় ও শক্তিশালী গুন কি? আপনার মধ্যে বিশেষ কি গুন আছে এ প্রশ্নের মাধ্যমে তাই জানতে চাওয়া হয়। এটি একটি ক্লাসিক প্রশ্ন। এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় আপনাকে ভালোমত ভাবতে হবে। এখানে একটি গুনের কথা জানতে চাওয়া হয়েছে। সুতরাং, অতিরিক্ত কথা বলে কিংবা উদাহরণ দিয়ে সময় নষ্ট করতে যাবেন না। আপনি মানুষের সাথে ভালো মিশতে পারেন কিংবা আপনার আচরণ খুবই ভালো এ ধরণের কথা প্রশ্নকর্তা আপনার কাছে জানতে চায় নি। সুতরাং, উত্তর দেওয়ার সময় ভেবে-চিন্তে নিজের একটি সত্যিকার গুনের কথা প্রকাশ করুন।
৮) “আপনি কেমন বেতন আশা করছেন? এ প্রশ্নটি করা হয় মূলত আপনার প্রত্যাশা জানার জন্য। আপনাকে এক্ষেত্রে বলতে হবে আপনি এ প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠানটির বেতন কাঠামো সম্পর্কে জানেন। কখনো কখনো আপনাকে সরাসরিও উত্তর দিতে হতে পারে। এর জন্য প্রস্তুত থাকুন। আপনার সমপরিমাণ অভিজ্ঞতা নিয়ে অন্যান্যরা কি পরিমাণ বেতনাদি পাচ্ছে তাও নিশ্চয়ই আপনি জানেন। সুতরাং এরই পরিপ্রেক্ষিতে বেতনের একটি রেঞ্জ সম্পর্কে প্রশ্নকর্তাকে জানান। সরাসরি বেতন বলার চেয়ে একটি সীমা দিয়ে দেওয়াই এক্ষেত্রে শ্রেয়।

৯) যদি কাস্টমার সার্ভিস রিলেটেড চাকরি হয় তবে প্রশ্ন হতে পারে, “যদি কোনো কাস্টমার উত্তেজিত হয়ে যায় তবে কি আপনি নিজেও উত্তেজিত হয়ে যাবেন অথবা আপনি কি সেই কাস্টমারএর সাথে কথা বলা বন্ধ করে তাকে আর সেবা প্রদান করবেন না?এই প্রশ্নের উত্তরে আপনাকে অবশ্যই বলতে হবে যে আপনি মাথা ঠান্ডা রেখে পুরো পরিস্থিতি সামলাবেন এবং কখনই সেবা প্রদানে মানা করবেন না। যদি নিতান্তই না পারেন তবে আপনার সিনিয়র কে ডাকবেন বা ব্যাপারটি দেখতে বলবেন।

১০) প্রশ্নকর্তা আপনাকে প্রশ্ন করেছেন। কিন্তু আপনি সঠিক উত্তরটি ভালোভাবে জানেন না। এ অবস্থায় আপনি কখনই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে উত্তর দিতে চেষ্টা করবেন না। অস্পষ্ট জবাব দিয়ে উত্তর শেষ করবেন না। এতে নিয়োগকর্তা বিরক্তবোধ করবেন। না জানলে ‘পারি না’ বলাই শ্রেয়। তখন প্রশ্নকর্তা অন্য কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়ার সুযোগ দেবেন।

শেয়ারবাজারনিউজ/সো

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.