জানুয়ারিতে বানিজ্যিক উৎপাদনে যাচ্ছে অলিম্পিক এক্সেসরিজ
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: নতুন বছরের শুরুতেই অর্থাৎ আগামী জানুয়ারিতেই বাণিজ্যিকভাবে নতুন উৎপাদন শুরু করতে যাচ্ছে অলিম্পিক এক্সেসরিজ লিমিটেড। ইতোমধ্যে কোম্পানির উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়ক গ্রিন বিল্ডিং নির্মাণ (নিজস্ব ভবনের তিনটি ফ্লোর) সম্পন্ন হয়েছে। আর এই উৎপাদন বৃদ্ধিতে কোম্পানির বাৎসরিক আয় আরো প্রায় ৫০ কোটি টাকা বাড়বে। নতুন মেশিন স্থাপন এবং বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন বৃদ্ধি সম্পর্কে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে।
কোম্পানি সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের অক্টোবর মাসে চীন থেকে নতুন মেশিন আনা এবং গাজীপুরের জয়দেবপুরের কারখানায় স্থাপনও করা হয়েছে। প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের মাধ্যমে (আইপিও) পুঁজিবাজার থেকে উত্তোলিত ২০ কোটি টাকা এবং কোম্পানির নিজস্ব টাকা আরো কিছু টাকার ব্যবহারে এসব তৈরি করেছে কোম্পানির কর্তৃপক্ষ।
মেশিন কেনা এবং স্থাপন সম্পর্কে কথা হলে অলিম্পিক এক্সেসরিজ লিমিটেড কোম্পানির সেক্রেটারি মো:হাবিবুল্লাহ শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে বলেন, জয়দেবপুরের কোম্পানির মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। আইপিও থেকে নেয়া টাকা এবং কোম্পানির কিছু টাকায় এসব তৈরি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তিন তলা গ্রিণ বিল্ডিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। চলতি বছরের ডিসেম্বর নাগাদ কোম্পানির কাজ শেষ হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছরের জানুয়ারি মাস থেকে কর্তৃপক্ষ বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করবে বলে আভাসও দেন তিনি।
নতুন মেশিন আসায় পুরাতন মেশিন সম্পর্কে হাবিব বলেন, পুরাতন মেশিনও আমাদের চলবে। পুরাতন মেশিনে আমাদের বাৎসরিক উৎপাদন হয় ৩ কোটি ২২ লাখ পিস। নতুন চালু করা হলে মোট উৎপাদনের সঙ্গে আরো অনেক বাড়বে। এতে কোম্পানির প্রডাকশন, সেল এবং ইনকামও বাড়বে।
তথ্যানুসন্ধান অনুযায়ী, কোম্পানির বাৎসরিক সেল এখন ১৫০ কোটি টাকা। নতুন মেশিন চালু হলে আরো অনেক বিক্রি এবং বাজার বাড়বে। বাজার সম্প্রসারণ করতে কারখানায় বর্তমানে ২৬৪ জন শ্রমিক কাজ করছে। গার্মেন্টস বা তৈরি পোশাকের জন্য বিভিন্ন ধরণের ‘প্রডাক্ট’ তৈরি করতে কর্তৃপক্ষ ব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রতিষ্ঠানটি তৈরি পোশাক বিভিন্ন পণ্য তৈরি করে থাকে। যেমন- শার্টের কলার, বাটন, হ্যাঙ্গার, এলাস্টিক, ব্যাক বোর্ড, মাস্টার কটন ইত্যাদি পণ্য। এসব পণ্যের বাজারজাত করা হয় দেশে।
জানা গেছে, কোম্পানির কি পরিমাণ আয় করছে দ্বিতীয় প্রান্তিকের প্রতিবেদনে জানা যাবে। ইতোমধ্যে প্রথম প্রান্তিকের আয় গত বছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় অনেক বেড়েছে। আগামীতে কোম্পানির আয় দ্বিগুন বা তিনগুণ বাড়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।
ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, অলিম্পিক এক্সেসরিজ লিমিটেডের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর’১৬) শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) করেছে ০.৩৯ টাকা। যা আগের বছর কোম্পানিটির ইপিএস ছিল ০.৩৭ টাকা।
এ সময়ে কোম্পানির শেয়ার প্রতি প্রকৃত সম্পদ মূল্য (এনএভি) হয়েছে ১৭.৯০ টাকা। যা ৩০ জুন, ২০১৬ পর্যন্ত সময়ে ছিল ১৬.৭০ টাকা।
অলিম্পিক এক্সেসরিজ লিমিটেড সমাপ্ত অর্থ বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ৫ শতাংশ ক্যাশ ও ৭ শতাংশ স্টকসহ মোট ১২ শতাংশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে।
ডিভিডেন্ড ঘোষণার পর কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১.৭৩ টাকা, শেয়ার প্রতি প্রকৃত সম্পদ মূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ১৬.৭১ টাকা।
কোম্পানিটি ২০০৯ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। বর্তমানে এর অনুমোদিত মূলধন ১৫৫ কোটি টাকা ও পরিশোধিত মূলধন ১২৫ কোটি টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ৭০ কোটি ২৯ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা-পরিচালকের কাছে ৩০.৭৯ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কাছে ৯.২৮ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৫৯.৯৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
শেয়ারবাজারনিউজ/মা