ভারতের শেয়ারবাজারে নোট বাতিলের ধাক্কা
শেয়ারবাজার ডেস্ক: নোটি বাতিলের ধাক্কা সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে ভারতের শেয়ারবাজার। ধস না-নামলেও বাজারের দুর্বলতা কিন্তু বেশ স্পষ্ট। ৮০/১০০ পয়েন্ট করে সেনসেক্স নামছে প্রায় প্রতিদিনই। আসলে শুধু ফেড রেট বাড়ার কারণে নয়, নোট বাতিলের প্রভাব যে অনেক শিল্পের কাছে বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা দেবে, তা অনুমান করেই অনিশ্চয়তা বাড়ছে বাজারে। ক্রেতা কমেছে, কমছে লেনদেনের পরিমাণ। নোট বাতিলের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে শিল্পের আরও ৬ মাস সময় লাগবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। অর্থাৎ আগামী ২টি ত্রৈমাসিক কোম্পানি ফলাফল বাজারকে তেমন শক্তি জোগাতে পারবে না।
নভেম্বরে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি নেমে এসেছে ৩.৬৩ শতাংশে। গত দু’ বছরে এটিই ন্যূনতম মূল্যবৃদ্ধির হার। হলে কী হবে, তাতে কিন্তু বাজারে কোনও উত্তেজনা ছড়ায়নি। মূল্যবৃদ্ধির হার এতটা কমে এসেছে যতটা না উৎপাদন বৃদ্ধির কারণে, তার থেকে বেশি নোট বাতিলের প্রভাবে চাহিদা হ্রাসের জন্য। চাহিদা কমা শিল্প এবং অর্থনীতির কাছে আদৌ কাম্য নয়। এতে বহু সংস্থার বিক্রি কমবে, নেমে আসবে লাভের অঙ্ক। উৎপাদন ছাঁটাই হলে কর্মসংস্থান কমবে। কমবে শুল্ক বাবদ কেন্দ্রের আয়। অর্থাৎ আগামী ৬ মাস শক্ত চ্যালেঞ্জের সামনে থাকবে মোদী-জেটলি সরকার। বাজারও থাকবে অনিশ্চয়তায় ভরা। এই সময়ে প্রতিটি পতনে কেনা যেতে পারে বাছাই করা ব্লু-চিপ ও সম্ভাবনাময় মিড-ক্যাপ শেয়ার। বেশি ঝুঁকি যাঁদের পছন্দ নয়, তাঁরা ঝুঁকতে পারেন ব্যালান্সড ফান্ড ও ডেট ফান্ডের প্রতি। ছোট মেয়াদে টাকা রাখা যেতে পারে লিকুইড ফান্ডে।
ফেড রেট বাড়ার কারণে ডলারের দাম বাড়ায় ও নোট-কাণ্ডে নগদের জোগান তলানিতে ঠেকায় শেয়ার বাজারের তুলনায় বেশি পতন হয়েছে সোনার দামে। যে-সোনা মাত্র কয়েক মাস আগে ৩০ হাজারের কোঠায় (প্রতি ১০ গ্রাম) ছিল, তার দাম গত শনিবার নেমে এসেছে ২৭,৮৪০ টাকায় (পাকা সোনা)। গয়নার হলমার্ক সোনা (২২ ক্যারাট) নেমেছে ২৬,৮১০ টাকায়। ফলে লোকসানের মুখে পড়েছেন গোল্ড ইটিএফ এবং গোল্ড বন্ড-এর লগ্নিকারীরা। ফেড রেট আরও বাড়ার সম্ভাবনা থাকায় সোনার দাম চড়বে, এই আশা করা যাচ্ছে না। বরং আরও নামার সম্ভাবনাই প্রবল।
দাম বাড়ছে অশোধিত তেলেরও। এটিও অর্থনীতির পক্ষে প্রতিকূল। এর ফলে আমদানি বিল বাড়বে। কিছু দিনের মধ্যেই লিটারে আরও ৪-৬ টাকা বাড়তে পারে পেট্রোল-ডিজেলের দাম।
শেয়ারবাজারনিউজ/ম.সা