তিন বছর পর ঋণ পরিশোধের চাপে পড়ছেন বিনিয়োগকারীরা
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: মার্জিন রুলস, ১৯৯৯ এর রুলস ৩(৫) এর কার্যকারিতা স্থগিতের মেয়াদ চলতি ৩১ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে শেষ হচ্ছে। এতোদিন আইনটি স্থগিত থাকায় ঋণ পরিশোধের চাপ থেকে দূরে ছিলেন বিনিয়োগকারীরা। তবে এখনো পর্যন্ত আইনটি স্থগিতের মেয়াদ না বাড়ানোয় পুনরায় দীর্ঘ তিন বছর ঋণ পরিশোধের চাপে পড়ছেন মার্জিনধারীরা। এমনটি সময়মতো ঋণ পরিশোধ না করতে পারলে ফোর্সসেল পর্যন্ত করে অধিকার রাখবে সিকিউরিটিজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৩ সালের ৪ মার্চ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পক্ষ থেকে পুঁজিবাজার স্থিতিশীল করতে মাইনাসে থাকা পোর্টফলিও পুনর্বিন্যাস এবং ১৯৯৯ সালের মার্জিন রুলসের ৩(৫) ধারা স্থগিত করার দাবি জানানো হয়। তাই ওই বছরের ৯ এপ্রিল বিএসইসির ৪৭৫তম সভায় বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ, পুঁজিবাজারের বর্তমান অবস্থা বিবেচনা এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) আবেদনের প্রেক্ষিতে মার্জিন রুলস,১৯৯৯ এর রুলস ৩(৫) এর কার্যকারিতা স্থগিত করা হয়। অর্থাৎ যেসব বিনিয়োগকারীর পোর্টফলিওর ইক্যুইটিতে ১৫০ শতাংশ পর্যন্ত মাইনাস রয়েছে বা মার্জিন লোন তার ইক্যুইটির ডেবিট ব্যালেন্সের ১৫০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে তাদের ঋণ পরিশোধের চাপ স্থগিত করে লেনদেনের সুযোগ করে দেয়া হয়। সর্বপ্রথমে এ সুবিধা ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখ পর্যন্ত রাখা হয়। পরবর্তীতে বাজারের অবস্থা উন্নতি না হওয়ায় কয়েকদফা এর মেয়াদ আরো বাড়ানো হয়। সর্বশেষ গত বছরের ৩০ নভেম্বর কমিশনের ৫৬০তম সভায় আইনটির কার্যকারিতা ১ জানুয়ারি ২০১৬ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় বিএসইসি। কিন্তু হাতে মাত্র তিন কার্যদিবস থাকার পরও এখনো স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানি নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
এদিকে মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ন্ত্রক সংস্থা নেয়নি বলে শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে জানিয়েছেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো: সাইফুর রহমান।
উল্লেখ্য, মার্জিন রুলস, ১৯৯৯ এর রুলস ৩ (৫) ধারায় বলা হয়েছে, যখনই ইক্যুইটি ক্লায়েন্টের মার্জিন অ্যাকাউন্ট ডেবিট ব্যালেন্সের ১৫০ শতাংশের নিচে নেমে আসে তখন হাউজগুলো ঋণ সমন্বয়ের জন্য ক্লায়েন্টকে অবহিত করবে। যাতে কোনোভাবেই ইক্যুইটি মার্জিন ঋণের ১৫০ শতাংশের কম না হয়। হাউজ কর্তৃপক্ষের ক্লায়েন্টের প্রতি এ সংক্রান্ত চিঠির ৩ দিনের মধ্যে নগদ অর্থ কিংবা মার্জিনেবল সিকিউরিটিজ দিয়ে অতিরিক্ত ঋণ সমন্বয় করবে। যে পর্যন্ত ইক্যুইটি সন্তোষজনক অবস্থায় না আসে সে পর্যন্ত ক্লায়েন্টের লেনদেন বন্ধ থাকবে। ধরা যাক, কোনো বিনিয়োগকারীর ১ লাখ টাকা ডিপোজিটের বিপরীতে আরও ১ লাখ টাকা মার্জিন লোন সুবিধাসহ মোট ২ লাখ টাকার শেয়ারে কিনেছে। বাজার মন্দার কারণে তার বর্তমান শেয়ারের মূল্য ৫০ হাজারে দাঁড়িয়েছে। এক্ষেত্রে তার ইক্যুইটির ডেবিট ব্যালেন্স মার্জিন লোন থেকে ১৫০ শতাংশ কমে গেছে। মার্জিন রুলসের উল্লেখিত ধারা অনুযায়ী হাউজ কর্তৃপক্ষ তাকে চিঠির মাধ্যমে অতিরিক্ত ঋণ পরিশোধের চাপ প্রয়োগ করার পাশাপাশি লেনদেন বন্ধ করে দেবে।
এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সিকিউরিটিজ হাউজের বেঁধে দেয়া সময় মতো বিনিয়োগকারীরা ঋণ পরিশোধ বা সমন্বয় না করে তাহলে তাদের পোর্টফলিওতে থাকা শেয়ার জোরপূর্বক বিক্রি (ফোর্সসেল) করে তাদের পাওনা বুঝে নিতে পারবেন।
শেয়ারবাজারনিউজ/ম.সা