বীমা কোম্পানির লভ্যাংশ দিতে বাধা নেই
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: জীবন বীমার পলিসি গ্রাহক ও শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ রক্ষায় নমনীয় ভূমিকা পালন করবে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। এর জন্য জীবন বীমা ব্যবসায় যে সব কোম্পানি ব্যবস্থাপনা ব্যয় হিসেবে নিয়ম ভেঙ্গে অতিরিক্ত খরচ করেছে তাদেরকে লভ্যাংশ না দেয়ার নির্দেশ দিবে না নিয়ন্ত্রণকারী এ সংস্থাটি। ফলে জীবন বীমা কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশ দিতে আর কোন বাধা থাকবে না।
আইডিআরএ জানায়, নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাজ কোম্পানিকে রক্ষা করা নয়। সংস্থাটির প্রধান দায়িত্ব বীমা ব্যবসায় গ্রাহক এবং শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ নিশ্চিত করা। আর যে সব জীবন বীমা কোম্পানি ব্যবস্থাপনা ব্যয় হিসেবে নিয়ম ভেঙ্গে অতিরিক্ত খরচ করেছে তাদের অ্যাকচ্যুরিয়াল বেসিস অনুমোদন স্থগিত করার ক্ষমতা সংস্থাটির রয়েছে। আর অ্যাকচ্যুরিয়াল বেসিস অনুমোদন না হলে কোম্পানিগুলো শেয়ারহোল্ডার এবং গ্রাহককে কোন লভ্যাংশ দিতে পারে না। এতে কোম্পানির স্বার্থ রক্ষা হলেও শেয়ারহোল্ডার এবং গ্রাহকের স্বার্থ লঙ্ঘিত হচ্ছে। কারণ কোম্পানিটি তার সীমার অতিরিক্ত খরচ করে ফেলেছে। এখন যদি কোম্পানিগুলোকে লভ্যাংশ দেয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি হয় তাহলে আইডিআরএ’র মূলনীতি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়বে। তাই বীমা নিয়ন্ত্রণকারী এ কর্তৃপক্ষ গ্রাহক এবং শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ ক্ষুণ্য হয় এমন সিদ্ধান্ত নিবে না বলে জানা যায়।
আইন অনুযায়ী, জীবন বীমা কোম্পানিগুলো ব্যবস্থাপনা ব্যয় হিসেবে নতুন পলিসি বিক্রি বাবদ প্রথম বছর প্রিমিয়াম আয়ের সর্বোচ্চ ৯০ শতাংশ এবং নবায়ন প্রিমিয়াম আয়ের সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ পর্যন্ত খরচ করতে পারে। কিন্তু ২০১৪ অর্থবছরেও অধিকাংশ কোম্পানি ব্যাবস্থাপনা ব্যয়ের জন্য নির্ধারিত এ সীমা পালনে ব্যর্থ হয়েছে বলে আইডিআরএ’র অনুসন্ধানে এসেছে।
এর আগে, ২০১৩ হিসাব বছরে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের কারণে অধিকাংশ জীবন বীমা কোম্পানির অ্যাকচ্যুরিয়াল বেসিস অনুমোদন স্থগিত করে। পরবর্তীতে শর্ত সাপেক্ষে তিনটি কোম্পানি বাদে অন্য কোম্পানিগুলোকে অনুমোদন দেয়া হয়। ফলে অনুমোদন পাওয়া কোম্পানিগুলো লভ্যাংশ দিতে পারলেও বাদ পড়া তিনটি কোম্পানি তাদের শেয়ারহোল্ডার ও গ্রাহকদের কোন লভ্যাংশ দিতে পারেনি। বাদ পড়া কোম্পানি তিনটি হলো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত পদ্মা ইসলামি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইডিআরএ’র প্রশাসন এবং আইন বিষয়ক সদস্য মো: কুদ্দুস খান শেয়ারবাজারনিউজ ডট কমকে বলেন, আইডিআরএ’র নীতি অনুযায়ী নিয়ম লঙ্ঘনকারী সকল কোম্পানিকে একই শাস্তি দিতে হবে। সমান অপরাধের জন্য কাউকে শাস্তি দেয়া হবে আবার কাউকে দেয়া হবে না এটা চলতে পারেনা। এতে নিয়ন্ত্রণ সংস্থার নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়বে। তাছাড়া আইডিআরএ’র মূলনীতি অনুযায়ী এমন কোন সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত হবে না যাতে করে জীবন বীমা ব্যবসায় গ্রাহক এবং শেয়ারহোল্ডাররা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই গ্রাহক এবং শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ প্রদানে আইডিআরএ যাতে বাধা না হয়ে দাঁড়ায় সে বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া্ হবে।