শিগগিরই সাড়ে ৫ হাজার পয়েন্ট অতিক্রম করবে সূচক
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের উর্ধ্বমুখী প্রবণতায় লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন লেনদেনের শুরু থেকে উত্থান থাকলেও ৩৫ মিনিট পার পরতে থাকে সূচক এবং দুই ঘন্টা পর সম্মলিত ক্রয় চাপে ঘুড়ে দাঁড়ায় সূচক। বুধবার সূচক বাড়লেও কমেছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। আর টাকার অংকে লেনদেন আগের দিনের তুলনায় কিছুটা কমেছে। আজ দিনশেষে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ২০৯ কোটি টাকা।
কয়েক দিনের ধারবাহিক উত্থানের পর আজ লেনদেনের শুরুতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মুনাফা তুলে নেয়ার ঝোঁক বিরাজ করে। শুরুতে অন্যান্য সকল খাতে বিক্রির চাপ থাকলেও শেষ ভাগে ব্যাংক, আর্থিক এবং বস্ত্র খাতে বিনিয়োগকারীদের ব্যপক আগ্রহ দেখা যায়। বাজারে অন্য খাত গুলোর বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর কমলেও এ তিন খাতে উল্ট চিত্র লক্ষ্য করা যায়। তাই শেষ দিকে বাজারে ক্রয় চাপ বেড়ে যায়। পরিণতিতে সূচকে উত্থান ঘটেছে।
বর্তমান বাজার পরিস্থিতি নিয়ে একাধিক মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমান বাজার পরিস্থিতি স্থিতিশীলতা থাকায় অনেক বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ধীরে ধীরে আস্থার সঞ্চার হচ্ছে। ধারাবাহিক উত্থানের কারণে দেশের শেয়ারবাজার অনেকটাই বিনিয়োগ উপযোগী হয়ে উঠেছে। বাজারে দৈনিক লেনদেন, বাজার মূলধন ধারাবাহিক বৃদ্ধির ফলে সূচকেও পড়ছে ইতিবাচক প্রভাব। সরকার যখন বাজার উন্নয়নে মনোযোগী হয়েছে তখন প্রচন্ড সেল প্রেসারও বাজারকে দমাতে পারছেনা। দিরে পর দিন সূচক এগিয়ে যাচ্ছে সামনের দিকে। আজ বাজারে সেল প্রেসার থাকা সত্তেও সূচক বেড়েছে। বাজারে এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে খুব শিগগিরই সূচক সাড়ে ৫ হাজার পয়েন্ট অতিক্রম করবে।
তারা বলছেন, নানমুখী খবরে কয়েক কার্যদিবস যাবৎ ধারবাহিকভাবে দেশের উভয় পুঁজিবাজারে সূচক বাড়ছে। এটা ভবিষতেও অব্যাহত থাকবে। আর বাজারের এই স্থিতিশীল মুহূর্তে রেগুলারিটি বডিগুলো যদি বিনিয়োগকারীদের যথার্থ ইস্যু আনতে এবং দুষ্টু ইস্যুগুলোর কাছ থেকে দূরে রাখতে সমর্থ হন তাহলে বাজার এবারও অনেক দূর যাবে।
বিশ্লেকদের অভিমত, এই কারেকশন ও লেনদেনর স্বাভাবিক বৃদ্ধি বাজারের জন্য শুভ ইঙ্গিত। কেননা টানা পতন কিংবা টানা উত্থান কোনোটাই বাজারের জন্য ইতিবাচক নয়। আর বাজারে এমন ধারা বিদ্যমান থাকলে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি সাধারণ বিনিয়োগকারীদেরও আস্থা ফিরে আসবে।
দিনশেষে ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ১৮ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫১৫৬ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১২১৮ পয়েন্টে এবং ডিএসই সূচক ৩ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১৮৫৫ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩২৭ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৩৫টির, কমেছে ১৬৬ টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৬ টির। আর দিনশেষে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ২০৯ কোটি ১১ লাখ ৪৯ হাজার টাকা।
এর আগে মঙ্গলবার ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স ১৮ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ৫১৩৭ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৩ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ১২১৩ পয়েন্টে এবং ডিএসই সূচক ১১ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ১৮৫২ পয়েন্টে। ওই দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৩৯১ কোটি ৯ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। সে হিসেবে আজ ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ১৮১ কোটি ৯৮ লাখ ৯ হাজার টাকা।
দিনশেষে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সাধারণ সূচক ২৬ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৯৫৯৮ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ২৫৯টি কোম্পানির ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১২২টির, কমেছে ১১৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২১টির। আজ সিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৭৩ কোটি ১৩ লাখ ৬৪ হাজার টাকা।
শেয়ারবাজারনিউজ/মু