আজ: শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ইং, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৯ জানুয়ারী ২০১৭, সোমবার |

kidarkar

মৃত্যুর আগে সামান্য চিৎকারও করতে পারলোনা এই শিশুটি!

sacccnci-571x330শেয়ারবাজার ডেস্ক: ঘুড়ি ওড়ানো একটি প্রাচীন এবং নিঃসন্দেহে অত্যন্ত আনন্দদায়ক ঘটনা। ঘুড়ি ওড়ানোর আনন্দ আরও বেড়ে যায় যদি প্রতিপক্ষের ঘুড়ি কেটে মাটিতে নামানো যায়। ঘুড়ির সুতোতে মাঞ্জা দেওয়া হয় সেই ঘুড়ি কাটার উদ্দেশ্যেই। কিন্তু লৌহচূর্ণ বা কাঁচের গুড়োর মতো উপাদান সুতোতে মাঞ্জা হিসেবে প্রয়োগ করলে তা যে এক প্রাণঘাতী অস্ত্রের আকার ধারণ করে সেই ধারণা বোধহয় ছিল না প্রতিবেশী দেশ ভারতের দিল্লির অধিবাসীদের। ফলে মাঞ্জা লাগানো ঘুড়ির সুতা পেঁচিয়ে বেশ কিছু মানুষের আহত ও নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে সেখানে।

সেই হতভাগ্যদের মধ্যে একজন ছোট্ট মেয়ে সাঞ্চি গোয়েল। বাবা-মায়ের চোখের সামনে সেই শিশুর অসহায় ও ভয়াবহ মৃত্যুর কথা সম্প্রতি সামনে এসেছে। স্বাধীনতা দিবসে বাবা-মায়ের সঙ্গে গাড়ি চড়ে বেড়াতে বেরিয়েছিল ৫ বছর বয়সী সাঞ্চি। তার বাবা অলোক গাড়ি চালাচ্ছিলেন। আর পাশের সিটে মায়ের কোলে বসে ছিল সাঞ্চি। হঠাৎই সাঞ্চি বায়না ধরে যে, সে জানলা দিয়ে মুখ বার করবে। অলোক বলেন, জানলা দিয়ে মুখ বার করাটা বিপদ্জনক।

তার চেয়ে বরং গাড়ির ছাদের একটি অংশ তিনি খুলে দিচ্ছেন, সেখান দিয়ে মাথা তুলে দাঁড়াক সাঞ্চি। অলোকের কোনও ধারণাই ছিল না যে, গাড়ির উপরে মাথা বার করায় বিপদ আরও বেশি। মায়ের কোলে উঠে গাড়ির ছাদের উপরে সাঞ্চি মাথা তুল দাঁড়ানোর কিছুক্ষণের মধ্যেই একটি মাঞ্জা দেওয়া ঘুড়ির সুতো জড়িয়ে যায় সাঞ্চির গলায়। ধারালো সুতো মুহূর্তের মধ্যে কেটে দেয় সাঞ্চির শ্বাসনালী ও কন্ঠনালী।

সাঞ্চির গলা থেকে ফিনকি দিয়ে বেরনো রক্তের ধারায় গাড়ি ভেসে যেতে থাকে। সাঞ্চির আতঙ্কিত বাবা-মা তড়িঘড়ি তাকে নিয়ে যান মাত্র ৫০০ মিটার দূরের একটি হাসপাতালে। কিন্তু তখন আর কিছু করার ছিল না ডাক্তারদের। তারা সাঞ্চিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মাঞ্জা দেওয়া সুতোর আঘাতে সাঞ্চির কণ্ঠনালী ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল। তাই ছোট্ট শিশুটি মৃত্যুর আগে সামান্য চিৎকারও করতে পারেনি।

একা সাঞ্চি অবশ্য নয়, ঘাতক ঘুড়ির সুতোর শিকার হয়েছেন আরও অনেকে। সাঞ্চির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে পুলিশের খাতায় অভিযোগ দায়ের করেছেন সাঞ্চির বাবা-মা। পুলিশের তরফে বলা হয়েছে, সাঞ্চির গলা থেকে প্রাপ্ত সুতোর টুকরোটি পরীক্ষা করে মনে হচ্ছে, সস্তার চাইনিজ মাঞ্জা ব্যবহার করা হয়েছিল তাতে। সেই কারণেই তা আরও বিপদ্জনক হয়ে ওঠে। কার ঘুড়ির সুতায় ঠিক মৃত্যু হয়েছে মেয়েটির, তা হয়তো এখন আর খুঁজে বার করা সম্ভব নয়।

তবে ভারতে এখন বিপদজনক মাঞ্জার ব্যবহার আইনত বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। মৃত্যুর আগে সামান্য চিৎকারও করতে পারলোনা এর আগেই ঘুড়ির সুতায় আটকে মায়ের কোলেই প্রাণ গেল শিশুটির!

শেয়ারবাজারনিউজ/মা

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.