আজ: শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ইং, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৪ জানুয়ারী ২০১৭, শনিবার |

kidarkar

প্রতিবন্ধীদের জন্য ২৫ হাজার ওয়েবসাইট চালু

protibondhiশেয়ারবাজার ডেস্ক: বাংলাদেশে প্রতিবন্ধীরাও ব্যবহার করছেন ওয়েবসাইট। দেখতে পান না, শুনতে পান না, কিংবা কথা বলতে পারেন না, দুই হাতও নেই এমন ব্যক্তিও এই সকল ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পারেন। আর এই ওয়েবসাইট সম্বলিত ওয়েবপোর্টালটি Bangladesh.gov.bd। বিশ্বের সর্ববৃহত্ প্রতিবন্ধীবান্ধব ওয়েবপোর্টাল যা বাংলাদেশের জাতীয় তথ্য বাতায়ন নামকরণ করা হয়েছে। ৪৩ হাজার সরকারি কার্যালয়ের জন্য ২৫ হাজার ওয়েবসাইট তৈরি শেষে হয় গত জুনে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্পের মাধ্যমে এই পোর্টাল তৈরি হয়েছে। এই ওয়েবপোর্টাল তৈরিতে ব্যয় হয় ৫০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ সরকার ও ইউএনডিপি এই অর্থের যোগান দেয়। এই তথ্য বাতায়নের মধ্যে আছে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, জেলা, উপজেলা এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ের ওয়েবসাইটও। এই ওয়েবসাইটসমূহকে প্রতিবন্ধীবান্ধব করার জন্য এটুআই একটি জাতীয় ওয়েব এক্সেসিবিলিটি গাইড লাইনও তৈরি করছে। ইতোমধ্যেই গাইডলাইনের খসড়া তৈরি হয়েছে।

এই ওয়েবপোর্টাল-এর আওতায় সরকারের এক একটি দপ্তরের ওয়েবসাইট তৈরির কাজ শুরু হয় গত ২০১৩ সালে। ইতোমধ্যে ২৫ হাজারের বেশি ওয়েবসাইট জনসাধারণ ব্যবহার করছে। এই সকল ওয়েবসাইটে প্রতিবন্ধীদের জন্য স্কিন রিডিং সফট্ওয়ার অথবা প্রয়োজনীয় সহায়ক প্রযুক্তি ব্যহার করা হয়েছে। যাতে প্রতিবন্ধীদের যে প্রতিবন্ধকতা আছে তাকে সহায়তা করে ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পারে। যেমন- ওয়েবসাইটের রঙ বদল করা, ফন্ট ছোট-বড় করা, যাদের দুই হাত নেই তারা মাউস ছাড়া কি-বোর্ড ব্যহার করে ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পারে। যার দৃষ্টি নাই তার জন্য অলটারনেটিভ টেক্স এর মাধ্যমে স্ক্রিনে কী আছে সেই ছবিরর বর্ণনা করা হয়েছে।

এটি প্রতিবন্ধী বান্ধব বিশ্বের সর্ববৃহত্ ওয়েবপোর্টাল। ইন্টারন্যাশনাল টেলি কমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ) ২০১৫ সালে এই ওয়েবপোর্টালের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ডব্লিইউএসআইএস পুরস্কার প্রদান করে। সকল ওয়েবসাইট হালনাগাদ করার জন্য সংশ্লিষ্ট ৭০ হাজার সরকারি কর্মকর্তাকে এটুআইয়ের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তারা নিজেদের ওয়েবসাইট এখন নিজেরাই হালনাগাদ করতে পারে। সরকারের ‘সিঙ্গেল এক্সপয়েন্ট অব ইনফরমেশন এন্ড সার্ভিস গেট ওয়ার’ হিসেবে সকলে সেবা গ্রহণ ও তথ্য পেতে পারবে

এই ওয়েবসাইটগুলোর বড় চ্যালেঞ্জ হলো যে ফাইলগুলো জেপিজিতে তৈরি করা হয়েছে সে সমস্ত ফাইল দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের পক্ষে পড়া সম্ভব হচ্ছে না। আবার যে সমস্ত জায়গায় অডিও কন্ট্যান্ট ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলোর ক্ষেত্রে টেক্স না থাকার কারণে বাক ও শ্রবণপ্রতিবন্ধীদের ব্যবহারে সমস্যা হচ্ছে। তবে জাতীয় ওয়েব এক্সেসিবিলিটি গাইড লাইন অনুমোদন হয়ে গেলে এই সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করেন, এই প্রকল্পের ওয়েব এক্সসিবিলিটি কনসালট্যান্ট ভাস্বর ভট্টাচারিয়া। নিজে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এবং সংশ্লিষ্ট পেশায় ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ভাস্বর বলেন, সংবিধান প্রতিবন্ধীর অধিকার রক্ষার পাশাপাশি তাদের মূলধারায় সম্পৃক্ত করণের ওপর জোর দিয়েছে। ২০১৩ সালে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইনে তথ্যপ্রযুক্তিতে প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করণে যথোপযুক্ত ব্যবহার উপযোগী করে গড়ে তোলার নির্দেশ দেওয়া হয়।

জাতীসংঘের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবর্গের অধিকার সনদে (ইউএনসিআরপিডি) তথ্যপ্রযুক্তি অধিকার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ এতে স্বাক্ষর করে। বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশের ঘোষণায় এই অধিকার স্বীকৃতি পায়। ভাস্বর বলেন, প্রতিবন্ধীবান্ধব ওয়েবসাইটগুলো অন্যদের জন্যও ব্যবহার করা সহজ হয়। এইগুলো খুব কম ইন্টারনেট গতিতে ব্যবহার করা যায়। এখানে কোনো ফ্ল্যাস এনিমেশন ব্যবহার হয় না। ওয়েবসাইটগুলো ব্যবহার করে একজন প্রতিবন্ধী ঘরে বসেই সেবা নিতে পারবে। এই সেবা পেতে তার কম্পিউটার ও মোবাইল ফোন ব্যবহারের দক্ষতা থাকতে হবে।

শেয়ারবাজারনিউজ/সো

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.