লোকসানের বৃত্তে তিন মিউচ্যুয়াল ফান্ড
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানি এলআর গ্লোবাল পরিচালিত তিন মিউচ্যুয়াল ফান্ড সর্বশেষ প্রান্তিকে বড় ধরণের লোকসান করেছে।
এ তিনটি ফান্ড হলো, এনসিসি ব্যাংক মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ান, ডেল্টা-ব্র্যাক হাউজিং প্রথম মিউচ্যুয়াল ফান্ড এবং গ্রীণডেল্টা মিউচ্যুয়াল ফান্ড।
এর মধ্যে এনসিসি ব্যাংক মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ান প্রথম প্রান্তিকে লোকসান করেছে। অপর দুটি ফান্ড ডেল্টা-ব্র্যাক হাউজিং প্রথম মিউচ্যুয়াল ফান্ড এবং গ্রীণডেল্টা মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লোকসান তৃতীয় প্রান্তিকেও অব্যাহত রয়েছে।
মঙ্গলবার এ তিনটি ফান্ডের প্রকাশিত অনিরীক্ষিত প্রান্তিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
এনসিসি ব্যাংক মিউচ্যুয়াল ফান্ড: এলআর গ্লোবাল পরিচালিত মেয়াদি ফান্ডটি চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) ৫ কোটি ৭৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা নীট লোকসান করেছে। এই সময়ে ফান্ডটির ইউনিট প্রতি লোকসান হয়েছে ০.৫৩ টাকা। অথচ এর আগের বছর একই সময়ে ফান্ডটি ৪ কোটি ৮ লাখ ১০ হাজার টাকা নীট মুনাফা করেছিল। সেই সময়ে ফান্ডটির ইউনিট প্রতি আয় হয়েছিল ০.৩৮ টাকা।
ডিএসই-তে তালিকাভুক্ত ১০৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা আকারের মেয়াদি এ ফান্ডটির বর্তমান ইউনিট দর ৩.৭০ টাকা। ফান্ডটির উদ্যোক্তা ও পরিচালকের কাছে ১৫ শতাংশ, প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কাছে ১০.৬৮ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে ৭৪.৩২ শতাংশ ইউনিট রয়েছে। ২০১৩ হিসাব বছরে ফান্ডটি বিনিয়োগকারীদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। বর্তমানে ফান্ডটির কাছে ১৪ কোটি ২০ লাখ টাকা সঞ্চিতি রয়েছে।
ডেল্টা-ব্র্যাক হাউজিং মিউচ্যুয়াল ফান্ড: একই সম্পদ ব্যবস্থাপক দ্বারা পরিচালিত মেয়াদি এ ফান্ডটি চলতি হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) ৬ কোটি ১৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা নীট লোকসান করেছে। এ সময় ফান্ডটির ইউনিট প্রতি লোকসান হয়েছে ০.৫১ টাকা। যদিও ফান্ডটি আগের বছরের একই সময়ে ৩ কোটি ৩৯ লাখ ২০ হাজার টাকা নীট মুনাফা করেছিল।
এছাড়া, চলতি হিসাব বছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই’১৪-মার্চ’১৫) ফান্ডটির নীট লোকসান হয়েছে ৪ কোটি ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ সময়ে ফান্ডটির ইউনিট প্রতি নীট লোকসান হয়েছে ০.৩৫ টাকা। আগের বছর অর্থাৎ ২০১৩ হিসাব বছরের প্রথম নয় মাসে ফান্ডটি ৭ কোটি ২৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা নীট মুনাফা করেছিল।
১২০ কোটি টাকা আকারের মেয়াদি এ ফান্ডটির বর্তমান ইউনিট দর মাত্র ৪ টাকা। ফান্ডটির উদ্যোক্তা ও পরিচালকের কাছে ১৬.৬৭ শতাংশ, প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কাছে ৫.১০ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে ৭৮.২৩ শতাংশ ইউনিট রয়েছে। ২০১৩ হিসাব বছরে ফান্ডটি বিনিয়োগকারীদের ০.৬০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। বর্তমানে ফান্ডটির কাছে সঞ্চিতি রয়েছে ৭২ লাখ টাকা।
গ্রীণডেল্টা মিউচ্যুয়াল ফান্ড: একই সম্পদ ব্যবস্থাপক দ্বারা পরিচালিত মেয়াদি এ ফান্ডটি চলতি হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) ৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা নীট লোকসান করেছে। এ সময় ফান্ডটির ইউনিট প্রতি লোকসান হয়েছে ০.৩২ টাকা। যদিও ফান্ডটি আগের বছরের একই সময়ে ৫ কোটি ৯০ লাখ ৬০ হাজার টাকা নীট মুনাফা করেছিল।
এছাড়া, চলতি হিসাব বছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই’১৪-মার্চ’১৫) ফান্ডটির নীট লোকসান হয়েছে ১ কোটি ৩৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এ সময়ে ফান্ডটির ইউনিট প্রতি নীট লোকসান হয়েছে ০.০৯ টাকা। আগের বছর অর্থাৎ ২০১৩ হিসাব বছরের প্রথম নয় মাসে ফান্ডটি ৯ কোটি ২৮ লাখ ১০ হাজার টাকা নীট মুনাফা করেছিল।
১৫০ কোটি টাকা আকারের মেয়াদি এ ফান্ডটির বর্তমান ইউনিট দর মাত্র ৪ টাকা। ফান্ডটির উদ্যোক্তা ও পরিচালকের কাছে ৮.৩৩ শতাংশ, প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কাছে ৫.৩৪ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে ৮৬.৩৩ শতাংশ ইউনিট রয়েছে। ২০১৩ হিসাব বছরে ফান্ডটি বিনিয়োগকারীদের কোন লভ্যাংশ দিতে পারেনি। বর্তমানে ফান্ডটি ৩৩ লাখ টাকা পুঞ্জিভুত লোকসানে রয়েছে।
উল্লেখ্য, সম্পদ ব্যবস্থাপক এলআর গ্লোবালকে অনিয়মের দায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি ৫০ লাখ টাকা জরিমানা এবং আগামি এক বছর কোন ফান্ড পরিচালনা না করার জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করে। বিএসইসি’র ৫৩৯তম কমিশন সভায় কোম্পানিটির বিরুদ্ধে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
শেয়ারবাজারনিউজ/তু