বিডিংয়ে আমরা নেটওর্য়াকের শেয়ার দর বাড়ছে
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: বুক বিল্ডিং পদ্ধিতির মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলনের অনুমোদন পাওয়া আমরা নেটওয়ার্কস লিমিটেডের শেয়ার কেনার জন্য নিলাম (Bidding) গত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে। যা চলবে ৮ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত। যদিও বিডিংয়ের প্রথমদিনে মাত্র একজন ইলিজিবল ইনভেস্টর প্রথম বিডিং করেছিলো মাত্র ১৫ টাকায়। তবে আজ অনেকটাই বেড়েছে কোম্পানির বিডিং। আজ এ কোম্পনির শেয়ার দর সর্বোচ্চ ৩৬ টাকায় বিল্ডিং হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এখন পর্যন্ত ৩১টি প্রাতিষ্ঠানিক বিডার ৭৫ কোটি ৬৬ লাখ ৯ হাজার ৫০০ টাকায় ৪ কোটি ১৫ লাখ ২০০টি শেয়ার কেনার জন্য বিডিং করেছে।উল্লেখ্য, কোম্পানিটি ৫৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা উত্তোলন করবে। এর মধ্যে ৩৫ কোটি ১৫ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকার শেয়ার বিডিংয়ের মাধ্যমে ইলিজিবল ইনভেস্টররা কিনতে পারবেন। দেখা যাচ্ছে বিডাররা ৪০ কোটি ৫০ লাখ ৪৭ হাজার টাকা বেশি আবেদন করেছেন।
জানা যায়, ১ জন ইনভেস্টর ৩৬ টাকা দরে ৯ লাখ ৭৬ হাজার ৫০০টি শেয়ার কেনার জন্য বিডিং করেছে। যার মুল্য ৩ কোটি ৫১ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। আর ২ জন ইনভেস্টরটি ৩৫ টাকা দরে ২ লাখ ৮ হাজার ৮০০টি শেয়ার কেনার জন্য বিডিং করেছে। যার মুল্য ৭ কোটি ৩ লাখ ৮ হাজার টাকা।
এছাড়াও ৩৪ টাকা দরে ২ জন ইনভেস্টর ২ লাখ ৬৮ হাজার শেয়ার কেনার জন্য বিডিং করেছে। যার মূল্য ৭ কোটি ৩ লাখ ১২ হাজার টাকা। ৩৩ টাকা দরে ২ জন ইনভেস্টর ২ লাখ ১৩ হাজার ৬০০টি শেয়ার কেনার জন্য বিডিং করেছে। যার মূল্য ৭ কোটি ৩ লাখ ৯ হাজার ৮০০ টাকা। ২০ টাকা দরে ১ লাখ শেয়ার ১ জন ইনভেস্টর শেয়ার কেনরা জন্য বিডিং করেছে। যার বাজার মূল্য ২ কোটি টাকা।
এদিকে, ২১ জন ইনভেস্টর ১৫ টাকা দরে ৩ কোটি ৩৬ হাজার ৭০০টি শেয়ার কেনার জন্য বিডিং করেছে। যার মুল্য ৪৫ কোটি ৫ লাখ ৫০ হাজার ৫০০ টাকা। ১৪ টাকা দরে ২ জন ইনভেস্টর ৩ লাখ ৫০ হাজার শেয়ার কেনার জন্য বিডিং করেছে। যার বাজার মূল্য ৪৯ লাখ টাকা্। আর সর্বনিম্ন দরে ১৪ টাকা দরে ১ জন ইনভেস্টর ২৯ লাখ ২৯ হাজার ৬০০টি শেয়ার কেনার জন্য বিডিং করেছে। যার বাজার মূল্য ৩ কোটি ৫১ লাখ ৫৫ হাজার ২০০ টাকা।
প্রসঙ্গত, ইলিজিবল ইনভেস্টরদের ৫০ শতাংশ শেয়ার ৬ মাসের জন্য লকইন থাকবে। এর মধ্যে ২৫ শতাংশ শেয়ার ৩ মাস পর বিক্রি করতে পারবেন। বাকি ২৫ শতাংশ শেয়ার ৬ মাস পরে বিক্রি করতে পারবেন। আর এই লকইন পিরিওড শুরু হবে কোম্পানিটির প্রসপেক্টাস অনুমোদনের পর থেকে।
এর আগে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আমরা নেটওয়ার্কস লিমিটেডকে নিলামের মাধ্যমে কাট–অফ প্রাইস নির্ধারণের অনুমতি দেয়।
উল্লেখ্য, আমরা নেটওয়ার্কস হচ্ছে ২০১৫ সালে সংশোধিত পাবলিক ইস্যু রুলসের আওতায় বিডিংয়ের জন্য অনুমোদন পাওয়া প্রথম কোম্পানি। বিএসইসির অনুমোদনের ফলে আমরা নেটওয়ার্কস লিমিটেড শেয়ারের কাট–অফ প্রাইস নির্ধারণ করার জন্য বিডিং করতে পারবে। নিলামে ১২টি ক্যাটাগরির প্রায় আড়াইশ প্রতিষ্ঠান অংশ নিতে পারবে।
পুঁজিবাজার থেকে কোম্পানিটি ৫৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা উত্তোলন করবে। এই টাকা দিয়ে কোম্পানির বিএমআরই (আধুনিকায়ন), ডাটা সেন্টার প্রতিষ্ঠা, দেশের বিভিন্ন স্থানে ওয়াই–ফাই হটস্পট প্রতিষ্ঠা করা, আইপিওর কাজ ও ঋণ পরিশোধ করবে। কোম্পানির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে লংকাবাংলা ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড।
৩১ ডিসেম্বর,২০১৫ সমাপ্ত বছরের নিরীক্ষিত বিররণী অনুযায়ী কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩ টাকা ১৬ পয়সা। শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য ২১ টাকা ৯৮ পয়সা। আর ৫ বছরের ইপিএসের গড় করলে হয় ২ টাকা ৫২ পয়সা। আর ৩০ জুন ২০১৬ সমাপ্ত নিরীক্ষিত হিসাব (৬ মাসের) অনুযায়ী ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৬৮ পয়সা। আর এনএভি হয়েছে ২৩ টাকা ৬৬ পয়সা।
স্টক এক্সচেঞ্জের অনুমোদন সাপেক্ষে ইস্যুয়ার কোম্পানি তারিখ নির্ধারণ করে একটানা ৭২ ঘন্টা বিডিংয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করবে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রি করা শেষ হলে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রির জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে ফের অনুমতি চাইতে হবে। অনুমতি পেলে শেয়ার আবেদন ও চাঁদা জমা নেওয়ার সময়সূচি প্রকাশ করবে কোম্পানিটি।
উল্লেখ্য, পুঁজিবাজারে বড় ধরনের বিপর্যয়ের প্রেক্ষাপটে ২০১১ সালের ২০ জানুযারি বুক বিল্ডিং পদ্ধতির আইপিও অনুমোদন বন্ধ করে। পরে দেশীয় প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে পদ্ধতিটি সংশোধন করে। সংশোধনের পর ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন প্রথম অনুমোদন পায়।
২০১৫ সালে বিএসইসি পাবলিক ইস্যু রুলস সংশোধন করে। এতে বুক বিল্ডিং পদ্ধতির নিয়মকানুনেও বেশ কিছু পরিবর্তন আসে।
শেয়ারবাজারনিউজ/এম.আর/আ