ওটিসি থেকে মূল মার্কেটে ফেরার প্রক্রিয়ায় ১৪ কোম্পানি
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: ডিমেট পদ্ধতিতে লেনদেন হচ্ছে ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেটের ১৪ কোম্পানির। এ মার্কেটের অধিকাংশ কোম্পানি তাদের শেয়ার ডিমেট না করলেও প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেছে এই ১৪ কোম্পানি। কোম্পানিগুলো হল: আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ (পূর্বের সজিব নিটওয়্যার), বিডি মনোস্পোল পেপার, হিমাদ্রি লিমিটেড, লেক্সকো লিমিটেড, নিলয় সিমেন্ট, পেপার প্রসেসিং, রহমান কেমিক্যাল, সোনালী প্যাপার, তমিজ উদ্দিন টেক্সটাইল, ওয়ান্ডারল্যান্ড টয়েস, আলফা টেব্যাকো, এ্যাপেক্স ওয়েভিং এন্ড ফিনিশিং, মুন্নু ফেব্রিক্স এবং ঢাকা ফিশারিজ।
উল্লেখিত কোম্পানিগুলো ওটিসি থেকে মূল মার্কেটে ফিরতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর মূল মার্কেটে ফিরতে যেসব শর্ত পরিপালন করতে হবে সেগুলো পূরণ করার জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানা গেছে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ওটিসি’তে থাকা এসব কোম্পানির মধ্যে বেশকিছু কোম্পানি গত কয়েক বছর ধরে নিয়মিত ডিভিডেন্ড দিয়ে আসছে। একই সাথে কোম্পানিগুলো ওটিসি থেকে মূল মার্কেটে ফিরে আসার জন্য সংশ্লিষ্ট আইন সমূহ সঠিকভাবে পরিপালনে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে।
এ ব্যাপারে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ওটিসি থেকে বের হতে কোম্পানিগুলোকে আইন অনুযায়ী মূলত কয়েক বছর আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে হয়। কেননা কোম্পানিগুলোর ব্যবসায়িক অবস্থা ধারাবাহিক ভাল দেখলেই নিয়ন্ত্রক মূল মার্কেটে ফিরার অনুমতি দিবে। সাথে রয়েছে অন্যান্য আইন পরিপালনের প্রতিবেদন। আর এ কোম্পানিগুলোর গতিবিধি বলছে তারা মূল মার্কেটে ফিরার জন্যই পূর্ব প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এ ১৪ কোম্পানির মধ্যে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের গত তিন বছরের মধ্যে ২০১৪ সালে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১০.৩৮ টাকা, ২০১৫ সালে হয়েছে ২.৬০ টাকা এবং ২০১৬ সালে ইপিএস হয়েছে ৩.৪৮ টাকা। এ তিন বছরে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড দিয়েছে যথাক্রমে ১০ শতাংশ, ১২ শতাংশ স্টক এবং ৩১ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড। সর্বশেষ অর্থ বছরে এ কোম্পানির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাড়িয়েছে ১৩.৭১ টাকা।
বিডি মনোস্পোল পেপারের গত ৬ বছরের মধ্যে ২০১১ সালে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ০.৪৪ টাকা, ২০১২ সালে হয়েছে ০.৯২ টাকা, ২০১৩ সালে হয়েছে ২.৯০ টাকা, ২০১৪ সালে হয়েছে ২.৪৯ টাকা, ২০১৫ সালে হয়েছে ৫.৪৭ টাকা এবং ২০১৬ সালের ইপিএস এখোনো প্রকাশ করা হয়নি। এর মধ্যে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের শুধুমাত্র ২০১৪ সালে ১০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী কোম্পানির শেয়ার প্রতি নিট দায়ের পরিমান দাড়িয়েছে ৪.৬২ টাকা।
হিমাদ্রী লিমিটেডের গত তিন বছরের মধ্যে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪ অর্থ বছরে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ০.৮৩ টাকা এবং ৩০ জুন ২০১৬ সময়ে (১৮ মাসে) ইপিএস হয়েছে ১.২৫ টাকা। এর মধ্যে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড দিয়েছে যথাক্রমে ১২ শতাংশ ক্যাশ এবং ১২ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড। সর্বশেষ অর্থ বছরে এ কোম্পানির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাড়িয়েছে ৭২৯ টাকা।
নিলয় সিমেন্টের সর্বশেষ প্রকাশিত তিন বছরের মধ্যে ২০১৩ সালে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১.৯৬ টাকা, ২০১৪ সালে শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ০.০৪ টাকা এবং ২০১৫ সালে লোকসান হয়েছে ১.৬৩ টাকা। এ তিন বছরে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড দিয়েছে যথাক্রমে ১১ শতাংশ ক্যাশ, ১২ শতাংশ ক্যাশ এবং ৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড। সর্বশেষ অর্থ বছরে এ কোম্পানির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাড়িয়েছে ১২.৭০ টাকা।
পেপার প্রসেসিংয়ের গত তিন বছরের মধ্যে ২০১৪ সালে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২.০৮ টাকা এবং ২০১৬ সালে ইপিএস হয়েছে ৭.২৮ টাকা। এ তিন বছরে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড দিয়েছে যথাক্রমে ১২ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছে। সর্বশেষ অর্থ বছরে এ কোম্পানির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাড়িয়েছে ৪০.৪৯ টাকা।
রহমান কেমিক্যালের গত ২০১৪ সালে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ০.৫৯ টাকা। এ সময় কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোন ডিভিডেন্ড দেয়নি। একই সময়ে কোম্পানির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাড়িয়েছে ৬.৮২ টাকা।
সোনালী পেপারের গত ২০১৪ সালে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১.৬০ টাকা, ২০১৫ সালে হয়েছে ১.৬১ টাকা। এ সময়ে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড দিয়েছে ১০ শতাংশ করে স্টক। সর্বশেষ অর্থ বছরে এ কোম্পানির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাড়িয়েছে ৫৬৮.৪০ টাকা।
তমিজ উদ্দিন টেক্সটাইল গত ২০১৪ সালে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ০.৮১ টাকা এবং ২০১৫ সালে ইপিএস হয়েছে ০.২৪ টাকা। এ সময়ে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড দিয়েছে যথাক্রমে ১০ শতাংশ এবং ৫ শতাংশ ক্যাশ। সর্বশেষ অর্থ বছরে এ কোম্পানির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাড়িয়েছে ১৫০ টাকা।
ওয়ান্ডারল্যান্ড টয়েসের গত ২০১৪ সালে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ০.০৬ টাকা এবং শেয়ার প্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ১৮.৪৫ টাকা।
এসব কোম্পানি ছাড়া আলফা টেব্যাকো, এ্যাপেক্স ওয়েভিং এন্ড ফিনিশিং এবং মুন্নু ফেব্রিক্সের শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে, ঢাকা ফিশারিজের কোন আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি। এসব গত তিন বছরে কোন প্রকার ডিভিডেন্ডও দেয়নি। লোকসানে থাকলেও কোম্পানিগুলো তাদের শেয়ার ডিমেট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে।
শেয়ারবাজারনিউজ/রু/ম.সা