আজ: শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ইং, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৭, শনিবার |

kidarkar

যে কারণে জানুয়ারিতে ব্যাংকের শেয়ার দরে উল্লম্ফন

bankশেয়ারবাজার রিপোর্ট: শেয়ারবাজারে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে অধিকাংশ ব্যাংকের শেয়ার দরে উল্লম্ফন ঘটেছে। মূলত ব্যাংক খাতে বিদেশী বিনিয়োগকে কেন্দ্র করে শেয়ার দরে এমন উল্লম্ফন হয়েছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ(ডিএসই) সূত্রে জানা গেছে, জানুয়ারি মাসে বিদেশী বিনিয়োগকারীরা ৯টি ব্যাংকের মোট ৭২৫ কোটি ৭২ লাখ ৫৬ হাজার টাকার শেয়ার কিনেছেন। বিপরীতে মাত্র তিনটি ব্যাংকের মোট ১৭ কোটি ৬৭ লাখ ১৪ হাজার টাকার শেয়ার বিক্রি করেছেন।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০১০ এর মহাধসের পর শেয়ারবাজারে দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংক খাতের শেয়ার দর অবমূল্যায়িত অবস্থায় রয়েছে। তাই এ খাতে বিনিয়োগকারীদের লোকসান কাটিয়ে উঠা সম্ভব হয়নি। তবে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বিদেশীদের হাত ধরে ব্যাংক খাতে ব্যাপক চাঙ্গাভাব লক্ষ্য করা গেছে।

একাধিক মার্চেন্ট ব্যাংক এবং ব্রোকারেজ হাউজের শীর্ষ কর্তারা এ বিষয়ে শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে বলেন, জানুয়ারি মাসে বিদেশীরা ব্যাংক খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে। বিদেশী বিনিয়োগের স্রোতে স্থানীয় প্রতিষ্ঠান এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও ব্যাংকের শেয়ারে বিনিয়োগ বাড়িয়েছেন। এতে ওই মাসে ব্যাংকের শেয়ার দর লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে।

ব্যাংকের শেয়ারের প্রতি বিদেশীদের আগ্রহের কারণ হিসেবে একাধিক প্রতিষ্ঠানের কর্তা ব্যাক্তিরা জানান, আমাদের দেশের অর্থনীতি মূলত মানি মার্কেট নির্ভর। তবে খেলাপি ঋণ এবং অলস টাকার প্রভাব ব্যাংক খাতকে অস্থিতিশীল করছে। এর মধ্যেও বিশেষ করে বেসরকারি ব্যাংকগুলো ভাল মুনাফা করছে।

ডিএসই সূত্রে জানা যায়, জানুয়ারি মাসে বিদেশীরা সবচেয়ে বেশি ইসলামি ব্যাংকের শেয়ার কিনেছেন। এই সময় তারা ইসলামি ব্যাংকের ১৪ কোটি ৫৮ লাখ ৬৫ হাজার শেয়ার প্রায় ৬৫৬ কোটি ৩৯ লাখ টাকায় কিনেছেন। ওই মাসে ব্যাংকটির শেয়ার দর ৫৯ শতাংশ বেড়েছিল। বর্তমানে ব্যাংকটির শেয়ার দর ৪১ টাকা ৩০ পয়সা। তবে গত তিন বছরে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ৪৩ শতাংশ কমেছে। ২০১৩ সালে ব্যাংকটির ইপিএস ছিল ৩ দশমিক ৪৫ টাকা; ২০১৪ সালে ২ দশমিক ৪৬ টাকা এবং ২০১৫ সালে ১ দশমিক ৯৬ টাকা।

এরপর রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক। আলোচিত সময়ে ব্যাংকটির ৫৬ লাখ ৩০ হাজার শেয়ার প্রায় ৩৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকায় কিনেছেন। ওই মাসে ব্যাংকটির শেয়ার দর ৯ শতাংশ বেড়েছিল। বর্তমানে ব্যাংকটির শেয়ার দর ৬৭ টাকা ৩০ পয়সা। গত তিন বছরে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ২ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে।

এছাড়া আলোচিত মাসে ইস্টার্ন ব্যাংকের ২ লাখ ১০ হাজার শেয়ার প্রায় ৭০ লাখ ৬৩ হাজার টাকায়; এক্সিম ব্যাংকের ৬২ লাখ ১৩ হাজার শেয়ার প্রায় ৯ কোটি ১৩ লাখ ৪৪ হাজার টাকায়; ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংকের ৫৬ লাখ ৩৪ হাজার শেয়ার প্রায় ৮ কোটি ৭৩ লাখ ৩৭ হাজার টাকায়; আইএফআইসি ব্যাংকের ২১ লাখ ৯৮ হাজার শেয়ার প্রায় ৫ কোটি ৭১ লাখ ৭১ হাজার টাকায়; ন্যাশনাল ব্যাংকের ১৫ লাখ ৮০ হাজার শেয়ার প্রায় ২ কোটি ২৯ লাখ ১৪ হাজার টাকায়; ট্রাস্ট ব্যাংকের ১৩ লাখ ৬৭ হাজার শেয়ার প্রায় ৩ কোটি ৬২ লাখ ২৮ হাজার টাকায় এবং উত্তরা ব্যাংকের ২ লাখ শেয়ার প্রায় ৫৬ লাখ টাকায় কিনেছেন বিদেশীরা।

বিপরীতে ব্যাংক এশিয়ার ২ লাখ ৬৪ হাজার শেয়ার প্রায় ৫১ লাখ ৮১ হাজার টাকায়; সিটি ব্যাংকের ২১ লাখ শেয়ার প্রায় ৭ কোটি ৬৭ লাখ ১৯ হাজার টাকায় এবং সাইথইস্ট ব্যাংকের ৪৩ লাখ ৯ হাজার শেয়ার প্রায় ৯ কোটি ৪৮ লাখ ১২ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন বিদেশীরা।

তবে ১০টি ব্যাংকে নতুন বিদেশী বিনিয়োগ হয়নি। এ ব্যাংকগুলো হলো: এবি ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক(এসআইবিএল) এবং ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবিএল)।

এদিকে ৮টি ব্যাংকে বিদেশীরা কোন বিনিয়োগই করেনি। অর্থাৎএসব ব্যাংকে বিদেশী বিনিয়োগ শূণ্য। ব্যাংকগুলো হলো: আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক এবং স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক।

শেয়ারবাজারনিউজ/আ

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.