শেয়ার কেলেঙ্কারি মামলা: নির্দোষ দাবি করলেন রউফ ও সাঈদ
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: শেয়ারবাজারে বহুল আলোচিত ১৯৯৬ সালে শেয়ার কেলেংকারির ঘটনায় দায়ের করা প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজ মামলায় নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন এ মামলার আসামি এম এ রউফ চৌধুরী ও সাঈদ এইচ চৌধুরী। শেয়ারবাজার–সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তিতে গঠিত বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বুধবার (৮মার্চ) উপস্থিত হয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য দানকালে তারা এ দাবি করেন।
এদিন এম এ রউফ চৌধুরী আত্মপক্ষ সমর্থনের পাশাপাশি নিজেই সাফাই সাক্ষী প্রদান করেন। মামলা সংশ্লিষ্ট অপরাধের সঙ্গে তিনি কোনভাবেই জড়িত নন বলে ট্রাইব্যুনালকে জানান তিনি। তৎকালীন সময়ে (১৯৯৬ সালে) শুধুমাত্র প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন কিন্তু কোন ধরনের শেয়ার কারসাজির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না।
আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য শেষ করার পর বিএসইসির প্যানেল আইনজীবী মাসুদ রানা খান তাকে জেরা করেন।
এ মামলার অপর আসামি সাঈদ এইচ চৌধুরীও নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। তার পক্ষে সাফাই সাক্ষী প্রদানের জন্য আগামি ২১ মার্চ দিন ধার্য করেছেন শেয়ারবাজার–সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তিতে গঠন করা বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক আকবর আলী শেখ।
বিএসইসির প্যানেল আইনজীবী মাসুদ রানা খান বলেন, ‘ আজ (বুধবার) প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজের মামলায় আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য পূর্বনির্ধারিত ছিল। আসামি এম এ রউফ চৌধুরী ও সাঈদ এইচ চৌধুরী ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন।
আসামি এম এ রউফ চৌধুরীর আইনজীবী শেখ বাহারুল ইসলাম ও আব্দুস সালাম খান এবং আসামি সাঈদ এইচ চৌধুরীর আইনজীবী আলহাজ্ব মো. বোরহান উদ্দিন ট্রাইবুন্যালে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে ১৮ জানুয়ারি এ মামলার ৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ডিএসই’র মহা–ব্যবস্থাপক রুহুল খালেক, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ দেলোয়ার হোসেন ও বিএসইসি’র সহকারী পরিচালক এনামুল হককে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জেরা করেন। আর ১ মার্চ অপর সাক্ষী মনিরউদ্দিন আহমেদকে জেরা করা হয়।
এদিকে একই মামলায় আসামি মশিউর রহমান ও আনু জায়গীরদারের বিচারকাজ বন্ধ রয়েছে। উচ্চ–আদালতের স্থগিতাদেশের কারণে এই আসামীদের বিচারকাজ বন্ধ রয়েছে। যা আগামি ২ মে পর্যন্ত কার্যকরি।
আসামিদের এই মামলায় দুই দফায় ৬ মাস করে এক বছরের স্থগিতাদেশ দেয় উচ্চ আদালত। প্রথমবার ২০১৬ সালের ১৭ এপ্রিল এ বিচারকাজে ৬ মাসের স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষে ২৯ নভেম্বর দ্বিতীয়বারের মতো ৬ মাসের স্থগিতাদেশ দেয় আদালত।
মামলা সূত্রে জানা যায়, আসামিরা প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজের নামে ১৯৯৬ সালের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার লেনদেন করেছেন। এ সময়ে তারা মিতা টেক্সটাইল, প্রাইম টেক্সটাইল, বাটা সুজ ও বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ার লেনদেন করেন।
প্রতিষ্ঠানটি ওই সময়ে মোট ১২৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা লেনদেন করে। এর মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি শুধু ফরেন ডেলিভারি ভার্সেস পেমেন্টের (ডিভিপি) মাধ্যমে ৮৫ লাখ টাকা লেনদেন করে। যার মধ্যে বেক্সিমকো ফার্মার ১৩ লাখ ২৪ হাজার ৯৭৫টি, মিতা টেক্সটাইল লিমিটেডের ১ লাখ ১১ হাজার ৫৬০টি, প্রাইম টেক্সটাইল লিমিটেডের ২ লাখ ৭৪ হাজার ৫০টি, বাটা সু লিমিটেডের ৫ লাখ ৫৩ হাজার ১০০টি শেয়ার ছিল।
শেয়ারবাজারনিউজ/এম.আর