শেয়ার ক্রয়ে আগ্রহ বাড়ছে: গড় লেনদেন ১১‘শ কোটি টাকা
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: বর্তমান পুঁজিবাজার সব দিক থেকেই ভাল একটা অবস্থানে রয়েছে। এর ফলশ্রুতিতে দীর্ঘদিন পুঁজিবাজারের সাথে লেগে থাকা বিনিয়োগকারীরাই এখন লাভবান হচ্ছেন। পাশাপাশি নতুন যারা বাজারে আসছেন তারাও বাজারটিকে উপভোগ করছেন। বিনিয়োগকারী পরিপন্থি আরও কিছু রুলস ছিল; যেগুলোর কারণে গত কয়েক বছর মার্কেট খারাপ ছিল। এখন বিনিয়োগকারী পরিপন্থি প্রায় সব রুলস উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। মার্জিন ঋণধারীরাও লেনদেন করতে পারছেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের কারণে ব্যাংকগুলো ইন্টারেস্টের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নিয়ে আসাতে বাধ্য হয়েছে। এছাড়াও ডিএসই, সিএসইসহ নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো বিনিয়োগবান্ধব বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। যার কারণে মার্কেট বর্তমানে ভালো রয়েছে। এবং যা ভবিষতেও বিদ্যমান থাকবে বলে বিশ্লেষকরা আশাবাদ ব্যক্ত করছেন।
এছাড়াও বাজারকে গতিশীল করতে মার্চেন্ট ব্যাংকাররা অনেক তৎপর। এখনো যেসব প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী বাজারমুখী হননি তাদের ফেরাতে সরকারের কাছে নানাবিধ প্রস্তাব দিয়ে যাচ্ছেন তারা। পাশাপাশি বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করতে সরকারের পক্ষ থেকেও পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। আর নতুন বাজেটে এসব প্রস্তাব বিবেচনায় নিলে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীরা আরও সক্রিয় হতে পারবে, যা বাজারকে আরো গতিশীল করতে ভূমিকা রাখবে বলেও ধারণা করছেন ওই বিশ্লেষকরা।
বাজারের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় বিনিয়োগকারীর মধ্যে চাঞ্চল্যতা ফিরে এসেছে। যার কারনে গত সপ্তাহের ৫ কার্যদিবসের মধ্যে ৩ দিনই বাড়ছে সূচক। এদিকে সূচক বাড়লেও কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। আর এই উত্থানের ফলে স্বস্তিতে সপ্তাহ পার করলো বিনিয়োগকারীরা। তবে ধারবাহিকতায় উত্থানের ফলে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বাজার কিছুটা পর্যবেক্ষণ করছেন। যে কারনে গত সপ্তাহে সূচকে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সাপ্তাহিক ব্যবধানে দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে উর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে। এবং সূচকের পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। আর সূচক বাড়লেও এর মাত্রা ছিলো খুব বেশি। এদিকে সপ্তাহ শেষে ডিএসইতে গড় লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ১৩৮ কোটি ৬৮ লাখ ৮১ হাজার ৪৮০ টাকা। আর সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর লেনদেন বেড়েছে ৯.৭৪ শতাংশ।
বাজারের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় বিনিয়োগকারীর মধ্যে আগ্রহ বাড়ছে। যার কারনে বাড়ছে লেনদেন। তবে ধারবাহিকতায় উত্থানের ফলে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বাজার কিছুটা পর্যবেক্ষণ করছেন। যে কারনে গত সপ্তাহে দুই কার্যদিবস সূচকে বড় ধরণের কোন প্রভাব পড়েনি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সপ্তাহিক ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৪.৯৬ পয়েন্ট বা ০.৪৪ শতাংশ বেড়েছে। আর ডিএসইএক্স শরিয়াহ সূচক কমেছে ৯.৬০ পয়েন্ট বা ০.৭৩ শতাংশ ও ডিএসই ৩০ সূচক বেড়েছে ১৭.০৪ পয়েন্ট বা ০.৮৩ শতাংশ। আর সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে ৩৩৩টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১২৮টি, কমেছে ১৮৩টি, অপরিবর্তিত রয়েছে ২১টি এবং লেনদেন হয়নি ১টি কোম্পানির। এগুলোর উপর ভর করে মোট ৫ হাজার ৬৯৩ কোটি ৪৪ লাখ ৭ হাজার ৪০৩ টাকা লেনদেন হয়েছে। দৈনিক গড় হিসাবে এ লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ১৩৮ কোটি ৬৮ লাখ ৮১ হাজার ৪৮০ টাকা। যা আগের সপ্তাহে ৫ হাজার ১৮৮ কোটি ২১ লাখ ৭২ হাজার ৮৬৭ টাকা লেনদেন হয়েছিল। সে হিসেবে আগের সপ্তাহের তুলনায় ডিএসইতে মোট লেনদেনের পরিমান বেড়েছে ৫০৫ কোটি ২২ লাখ ৩৪ হাজার ৫৩৬ টাকা।
মোট লেনদেনের ৯৩.৬৩ শতাংশ এ ক্যাটাগরিভুক্ত, ৩.৪৫ শতাংশ বি ক্যাটাগরিভুক্ত, ১.৭৬ শতাংশ এন ক্যাটাগরিভুক্ত এবং ১.১৬ শতাংশ জেড ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে হয়েছে।
এদিকে, দেশের অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) প্রধান সূচক সিএসইএক্স বেড়েছে ২৯.০৬ পয়েন্ট ০.২৭ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ২৯০টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১২০টি কোম্পানির। আর দর কমেছে ১৫৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৫টির। আর সপ্তাহজুড়ে লেনদেন হয়েছে ৩৭২ কোটি ৫১ লাখ ৭৫ হাজার ৭৮ টাকার শেয়ার।
শেয়ারবাজারনিউজ/মু