ভুঁড়িওয়ালা পুলিশের তালিকা হচ্ছে
শেয়ারবাজার ডেস্ক: ভারতের কলকাতায় ভুঁড়িওয়ালা পুলিশের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। যদিও ইতিমধ্যে চার সপ্তাহ সময় হাতে পেয়েও জেলাগুলির ভুঁড়িওয়ালা পুলিশের মোট সংখ্যা কলকাতা হাইকোর্টকে শুক্রবার জানাতে পারলেন না রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের প্রিন্সিপাল সচিব ও ডিজিপি। পুলিশ বাহিনীর শারীরিক সক্রিয়তা ও সক্ষমতা বহাল রাখতে কী পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়, তাও এদিন প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চকে জানানো হয়নি। কলকাতা পুলিশের তরফে জমা পড়া হলফনামা নেহাতই আনুষ্ঠানিক বলে মনে করছে বেঞ্চ। আসলে সুঠাম চেহারার ক্ষিপ্র পুলিশবাহিনীর স্বার্থে বেঞ্চ এইসব হলফনামার উপর ভিত্তি করে বানাতে চায় নির্দিষ্ট গাইডলাইন। তাই উপযুক্ত হলফনামা জমা করার জন্য বেঞ্চ এদিন আরও দু’ সপ্তাহ বরাদ্দ করেছে। নধর ভুঁড়িওয়ালা, কোমরের বেল্টের উপর দিয়ে ঝুলে পড়া উদরসম্পন্ন বহু পুলিশকর্মী ও অফিসারের আলোকচিত্র এই মামলার নথিতে রয়েছে। এদিন রাজ্যের শীর্ষ আদালতে কর্মরত এমনই অলস, নিদ্রাতুর পুলিশের ছবি বেঞ্চকে দেখানো হয়। সরকারি আইনজীবী এই সময় হয়তো পরিহাসচ্ছলে মামলাকারী কমল দে’র ভারী চেহারার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করলে বেঞ্চের তরফে বলা হয় বিষয়টিকে হালকাভাবে নেবেন না। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মনে রাখতে হবে, এই পুলিশবাহিনীর হাতেই নাগরিক সমাজের আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্ব রয়েছে। পুলিশের সক্ষমতার হাল যদি এমন হয়, তাহলে সেই দায়িত্ব তাঁরা কীভাবে পালন করবেন?
বেঞ্চ জানতে চেয়েছিল, প্রশিক্ষণ শেষে চাকরিতে ঢোকার পর সাধারণ পুলিশ বা অফিসারদের জন্য মাসিক, দ্বিমাসিক বা এমন নির্দিষ্ট ব্যবধানে প্রশিক্ষণের কোনও ব্যবস্থা আছে কি না। কারণ বয়সের সঙ্গে প্রতিটি মানুষেরই ক্ষিপ্রতা কমে। সেই ঘাটতি পূরণের জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও শারীরিক সক্ষমতা বজায় রাখার প্রচেষ্টা চালাতে হয়। যা আইন ও শৃঙ্খলারক্ষা বাহিনীর জন্য অত্যন্ত জরুরি। এ ব্যাপারে সরকার কী ভাবছে বা করতে চায়, কোনও ব্যবস্থা চালু রয়েছে কি না, তা হলফনামা মারফত জানাতে বলেছিল বেঞ্চ।
প্রশিক্ষণ শেষে চাকরিতে যোগ দেওয়ার কিছুকাল পরেই পুলিশকর্মীরা শারীরিকভাবে ফুলতে থাকেন। যা তাঁদের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয়। সেই সূত্রে কাজের প্রতি তাঁদের একাগ্রতা চলে যেতে থাকে। এমন অভিযোগসহ মামলায় বলা হয়েছে ভুঁড়ি যে কোনও মানুষকে অলস করে দেয়। কাজের সময়েও তেমন লোক আরাম খোঁজেন। এভাবে পুলিশের মানসিকতা বদলে গেলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই পুলিশের চাকরিতে শারীরিক সক্ষমতা বাধ্যতামূলক করা হোক। পুলিশের সুনাম ও কার্যকারিতা বজায় রাখার স্বার্থে এবং সদাসতর্ক, শারীরিক ও মানসিকভাবে তৎপর পুলিশবাহিনীর জন্য আদালত নির্দিষ্ট গাইডলাইন তৈরি করে দিক মামলায় আবেদন করা হয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে বেঞ্চ এদিন বলেছে, বছরে একবার পুলিশকর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে এই সমস্যার সমাধান হবে না। সরকারের তরফে জানানো হয়, ৪৬ ঊর্ধ্ব পুলিশকর্মীদের বিশেষ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। সক্রিয়তা কম থাকলে এঁদের অফিসের কাজ দেওয়া হয়। বেঞ্চের কটাক্ষ, এঁদের কি সিনিয়র সিটিজেন হিসাবে ধরা হয়? এ সময় মামলাকারীর পেশ করা ছবি দেখিয়ে বেঞ্চ জানতে চায়, বাহিনীর সদস্যদের ‘বডি মাস ইনডেক্স’ হিসাব করা হয় কি?
শেয়ারবাজারনিউজ/ম.সা