অ্যাসিডিটির আটটি ঘরোয়া চিকিৎসা
শেয়ারবাজার ডেস্ক: খাদ্যাভ্যাসের কারণে গরমের সময় বেশিরভাগ খাদ্যরসিকই এই ধরনের সমস্যায় ভুগে থাকেন। তবে এখন এই রোগ শুধুমাত্র আর বয়স্কদের পাকড়াও করে না। কম বয়সিদের মধ্যেও এই রোগের প্রসার চোখে পড়ার মতো বেড়েছে।
একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে ৩০-৫০ বছর বয়সিদের বেশিরভাগই ক্রনিক অ্যাসিডিটির সমস্যার শিকার। এদের ক্ষেত্রে গরমকাল বা ঝাল মশলা দেওয়া খাবার খাওয়ার কারণেই যে একমাত্র এমন রোগ দেখা দিচ্ছে, তা নয় কিন্তু!
আজকের ইয়ং জেনারেশনের সিংভাগই বাড়িতে খাওয়া-দেওয়া ছেড়ে দিয়েছে। ফাস্ট ফুড জায়েন্টদের রমরমায় তাদের পছন্দ এখন শুধুমাত্র ফ্রায়েড খাবার। শুধু তাই নয়, খাবার খাওয়ার সময়েরও কোনও ঠিক নেই ইয়ং মাইন্ডদের। সকাল ৯টায় যদি ব্রেকফাস্ট করে, তাহলে দুপুরের খাবার খায় বিকাল ৪টার সময়। আর রাতের খাবার তো ঘড়ির কাঁটাকে তোয়াক্কাই করে না। কখনও রাত ১২ টো, তো কখনও ১ টা।
এমন অস্বাস্থ্যকর ডায়েট এবং জীবনপ্রণালীর কারণেই তো যুবসমাজের মধ্যে গ্যাস-অম্বলের সমস্যা এত মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। আর চিন্তা এই জায়গাতেই। কম বয়স থেকেই যদি এমন সব রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে শুরু করে, তাহলে তো সময় এখনও পড়ে আছে। পরে যে আরও কী কী অসুখ দেখা দেবে, তা তো আল্লাহ-তায়ালাই জানে!
অ্যাসিডিটির পেছনে মূল যে কারণটি দায়ি থাকে তা হল খালি পেট। আসলে দিনের বেশিরভাগ সময়ই যদি পেট খালি থাকে, তাহলে স্টমাকে উপস্থিত অ্যাসিডগুলি খারাপ প্রভাব ফেলে। যে কারণে অ্যাসিড রিফ্লাক্স, বদ হজম সহ নানাবিধ ডাইজেস্টিভ প্রবলেম দেখা দেয়। এমন রোগের হাত থেকে বাঁচার উপায় কী?
রাস্তা তো আছে। আপনার রান্না ঘরে মজুত কিছু খাবারকে এক্ষেত্রে কাজ লাগান। দেখবেন এমন রোগ আর কোনও দিনই আপনাকে ছুঁতে পারবে না। বিশেষত কম বয়সিরা যদি বহু দিন সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে চান তাহলে আজ থেকেই অ্যাসিডিটির চিকিৎসা শুরু করুন। না হলে কিন্তু বিপদ! এক্ষেত্রে যে যে খাবারগুলি এই ধরনের রোগ সারাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে, সেগুলি হল…
১. বাটার মিল্ক
শরীরকে ঠান্ডা রাখার পাশপাশি এই পানীয়টি স্টমাক অ্যাসিডের কার্যকারিতাকে কমিয়ে দেয়। ফলে অ্যাসিড রিফ্লাক্স বা গলা জ্বালা করার মতো সমস্যা কমে যায়। সূতরাং এবার থেকে এমন ধরনের অসুবিধা দেখা দিলেই সঙ্গে সঙ্গে এক গ্লাস বাটার মিল্ক খেয়ে নেবেন। দেখবেন নিমেষে সমস্যা কমে যাবে। এক্ষেত্রে বাটার মিল্ক বানেনার সময় তাতে দই এবং অল্প করে লবণ মিশিয়ে তারপর খাবেন। তাতে বেশি উপকার মেলে।
২. তুলসি পাতা
একেবারে ঠিক শুনেছেন। গ্যাস-অম্বলের সমস্যা কমাতে তুলসি পাতা দারুণ কাজে আসে। এতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা খুব অল্প সময়ে অ্যাসিডিটিকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। তাই তো নিমেষে আরাম পেতে ৩-৫ টি তুলসি পাতা পানিতে ভিজিয়ে, সেই পানিটা তাপে ফুটিয়ে খেয়ে ফেলুন। দেখবেন চোখের পলকে অ্যাসিডিটি কমে যাবে।
৩. রসুন
অ্যাসিডিটির সমস্যা কমাতে রসুনের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। এক্ষেত্রে এক কোয়া রসুন খেয়ে ফেললেই স্টমাকের অ্যাসিডের কর্মক্ষমতা কমে যায়। ফলে গ্যাস-অম্বল সংক্রান্ত নানা লক্ষণ ধীরে ধীরে কমে যেতে শুরু করে।
৪. বাদাম
আপনি কি প্রায়শই অ্যাসিডের সমস্যায় ভুগে থাকেন? তাহলে খাবার পরপরই ২-৩ টি বাদাম খেয়ে নেবেন। তাহলেই দেখবেন এমন ধরনের রোগে আর আক্রান্ত হবেন না। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ক্যালসিয়াম এবং অ্যালকেলাইন কমপাউন্ড, যা স্টামক অ্যাসিডিটির জন্য দায়ি অ্যাসিডদের ক্ষতি করার ক্ষমতা একেবারে কমিয়ে দেয়। ফলে গ্যাস-অম্বলের কষ্ট একেবারে কমে যায়।
৫. ডাবের পানি
গরমের সময় শরীরে পানির ঘাটতি মেটানোর পাশপাশি স্টমাক অ্যাসিডের ক্ষরণ স্বাভাবিক করতেও ডাবের পানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, শরীরে উপস্থিত অতিরিক্ত অ্যাসিডকে বের করে দিতেও এই প্রাকৃতিক পানীয়টি সাহায্য করে। তাই অ্যাসিডিটির সমস্যা থেকে দূরে থাকতে প্রতিদিন ডাবের পানি খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।
৬. খাবার সোডা
মাঝে মধ্যেই কি অ্যাসিডিটির সমস্যায় একেবারে কাবু হয়ে পড়েন? তাহলে কাজে লাগান এই ঘরোয়া পদ্ধতিটিকে। এক গ্লাস পানিতে ১ চামচ খাবার সোডা মিশিয়ে সেই পানি পান করুন। প্রতিদিন এই মিশ্রনটি পান করলেই দেখবেন আর কোনও দিন অ্যাসিডিটি হবে না। কারণ এই পানীয়টি অ্যান্টাসিডের কাজ করে থাকে।
৭. অ্যালো ভেরা
প্রচুর পরিমাণে খনিজ থাকার কারণে ত্বককে সুন্দর রাখার পাশপাশি হজম ক্ষমতার উন্নতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে এই প্রাকৃতিক উপাদানটি। শুধু তাই নয়, অ্যালো ভেরায় উপস্থিত অ্যাসিড, স্টমাকে উৎপন্ন অ্যাসিডের কর্যকারিতা কমিয়ে দেয়। ফলে অ্যাসিডিটির সমস্যা একেবারে নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
৮. আদা
গ্যাস-অম্বল হলেই এক পেয়ালা আদা চা খেয়ে নেবেন। তাহলেই দেখবেন গ্যাস-অম্বল একেবারে কমে যাবে। আসলে আদায় উপস্থিত বেশ কিছু উপাদান অ্যাসিডিটির সমস্যাকে নিমেষে কমিয়ে ফলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
শেয়ারবাজারনিউজ/মু