আজ: বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৩ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৯ মে ২০১৭, শুক্রবার |

kidarkar

‘পত্রিকায় সংবাদ দেখে প্রধানমন্ত্রী আমাকে ডেকেছিলেন’- ইসলামী ব্যাংক চেয়ারম্যান

arastuশেয়ারবাজার রিপোর্ট: ‘পত্রিকায় সংবাদ দেখে প্রধানমন্ত্রী আমাকে ডেকেছিলেন। তার সঙ্গে আমার ৪০ মিনিট কথা হয়েছে। জাকাত তহবিলের বিষয়ে তিনি জানতে চেয়ে বলেছেন, আমি তো টাকা চাইনি। তাহলে এ ধরনের কথা কেন এলো? তখন আমি বলেছি, ইসলামী ব্যাংকের জাকাত তহবিলে আছেই মাত্র ২৮ কোটি টাকা। এত টাকা কীভাবে দেবো?’

বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান আরাস্তু খান এ কথা জানান। ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে বিকেল ৫টায় আকস্মিকভাবে ডাকা এ সংবাদ সম্মেলনে ব্যাংকের এমডি আবদুল হামিদ মিঞা ছাড়াও বেশ কয়েকজন পরিচালক উপস্থিত ছিলেন। ব্যাংকটির ভাইস চেয়ারম্যান আহসানুল আলম বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর পর এ সংবাদ সম্মেলন ডাকেন চেয়ারম্যান।

এর আগে ভাইস চেয়ারম্যান জাকাতের টাকা, শিক্ষা বৃত্তি, সিএসআর, বিদেশী প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বিক্রি প্রভৃতি বিষয়ে মিডিয়ায় কথা বলেছিলেন।

এ ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর পর আহসানুল আলম পর্ষদের সদস্য থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন কি-না জানতে চাইলে আরাস্তু খান বলেন, ‘ভাইস চেয়ারম্যান নিজ থেকে পদত্যাগ করলে সেটা নিয়ে আমাদের কোনো কথা নেই। তাকে আমরা বাধ্য করব না। এটা তার নিজস্ব বিষয়। তবে তিনি দিল্লিতে যাওয়ায় এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হতে পারেননি।’

সংবাদ সম্মেলনে আরাস্তু খান বলেন, ‘গত ৩৪ বছরে ইসলামী ব্যাংকে মোট জাকাত এসেছে ৩৪৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৭৪ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। কর পরিশোধের জন্য ১৪৫ কোটি টাকা হাতে রাখা হয়েছে। এসব বাদে বর্তমানে বিতরণের মতো তহবিল রয়েছে ২৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। সুতরাং যিনি বলেছেন, তার ধারণায় নেই ৪৫০ কোটি টাকা জাকাত নয়, এটা ইসলামী ব্যাংকের নিট মুনাফা।’

এ ছাড়া আইডিবি বা বিদেশি অন্য প্রতিষ্ঠান শেয়ারের একটি অংশ ছাড়লেও পুরো শেয়ার ছেড়ে যাচ্ছে না বলে তিনি জানান।

আরাস্তু খান আরও বলেন, ‘সিএসআরের সুবিধাভোগীদের তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেওয়ার বা শিক্ষা বৃত্তিপ্রাপ্তদের বিষয়ে খতিয়ে দেখার কোনো সিদ্ধান্ত পর্ষদে হয়নি। কারণ, নিয়ম-নীতি মেনে ও জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া হয়। ভালো ভালো সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এখানকার বৃত্তিপ্রাপ্ত। ইফতারিতে ১৩ কোটি টাকা দেওয়ার বিষয়ে আমরা বোর্ডে আলোচনা করলেও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তা বিতরণের কোনো কথাই হয়নি। এটাও বিভ্রান্তিকর।’

তিনি বলেন, ‘পর্ষদের সদস্য হওয়ার আগে প্রত্যেক পরিচালককে গোপনীয়তা রক্ষার ঘোষণাপত্র স্বাক্ষর করতে হয়। ঘোষণা দিতে হয়, পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় আবশ্যক না হলে বা পর্ষদ থেকে ক্ষমতাপ্রাপ্ত না হলে কোনো বিষয় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রকাশ করবেন না। তিনি এ ঘোষণা থেকে সরে গিয়ে ওইটা করেছেন। আমি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছি না। তবে তিনি এটা ঠিক করেননি।’

আহসানুল আলমের নাম উল্লেখ না করে আরাস্তু খান বলেন, ‘তিনি যে উপায়ে মিডিয়ায় কথা বলেছেন, সেটা ঠিক করেননি। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, এর মাধ্যমে তিনি সরকার, প্রধানমন্ত্রী ও ব্যাংককে ইমেজ সংকটে ফেলেছেন। এ অধিকার তার নেই। তিনি ইচ্ছাপ্রণোদিতভাবে এটা করেছেন। এর আগে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার বিষয়টিও ঠিক করেননি। বোর্ড সভায় তিনি বলেছিলেন, বাইরের একটি পক্ষ তাকে বাধ্যতামূলক পদত্যাগ করতে বলেছে। তবে কে বা কারা, সেটা বলেননি। শুধু একটা সাদা কাগজ দেখিয়ে বলেছেন, এখানে আমার স্বাক্ষর করতে চাপ দেওয়া হয়েছে। আমরা বলেছি, সাদা কাগজ তো সাদা কাগজই।’

এক প্রশ্নের জবাবে ব্যাংকের এমডি আবদুল হামিদ মিঞা বলেন, ‘পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মধ্যে কোনো দূরত্ব নেই। তবে এটা সত্য, একজন পরিচালক কিছু বললেই আমরা সেটা করতে পারি না। ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে বোর্ডের সদস্য মানবে না, এটা অবাস্তব। এটা হতে পারে না। ইসলামী ব্যাংকেও এমনটি হয়নি। এ ছাড়া পর্ষদে যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেটা লিখিত আকারে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো হয়। ফলে সেটা না মানার কোনো সুযোগ আমাদের নেই।’

আরাস্তু খান বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংক দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যাংক। এ অবস্থায় আসার পেছনে ব্যাংকের পর্ষদ বা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের কোনো কৃতিত্ব নেই। দেশের জনগণের পুরো সমর্থন ও আস্থার কারণে ব্যাংকটি আজকের এ পর্যায়ে এসেছে। ইসলামী ব্যাংকের প্রতি আস্থার কারণে এর মূলধন ভিত্তি আজ এক হাজার ৬০০ কোটি টাকার বেশি। এটির অন্য সব ব্যাংকের চেয়ে বড় বিনিয়োগের সক্ষমতা অনেক বেশি।

শেয়ারবাজারনিউজ/আ

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.