আজ: বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ইং, ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১০ জুন ২০১৭, শনিবার |

kidarkar

চার বহুজাতিক কোম্পানিকে শেয়ার ছাড়তে সরকারের তোড়জোড়

BSEC_BANGLADESHশেয়ারবাজার রিপোর্ট: সরকারের হাতে থাকা চার বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ার বাজারে ছেড়ে দিতে তৎপরতা শুরু হয়েছে। কোম্পানিগুলো হচ্ছে- কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি, ইউনিলিভার বাংলাদেশ, সানোফি বাংলাদেশ এবং নোভিস্তা ফার্মা।

শেয়ার ছাড়তে এরই মধ্যে কোম্পানিগুলোর বাংলাদেশ প্রতিনিধিদের সঙ্গে সরকারের বৈঠক হয়েছে। তবে বৈঠকে শেয়ার ছাড়ার বিষয়ে কোম্পানিগুলোর মনোভাব ছিল নেতিবাচক। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে বৈঠকে অংশ নেয়া প্রতিনিধিদের তাদের মূল কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, এসব কোম্পানি বিশ্বের অন্যান্য দেশে তালিকাভুক্ত। বাংলাদেশেও তাদের তালিকাভুক্ত হওয়া উচিত। আর বহুজাতিক কোম্পানি এলে শেয়ারবাজারের গভীরতা বাড়বে। এতে বিনিয়োগকারীরাও উপকৃত হবে। পাশাপাশি কোম্পানিগুলোরও লাভ। কারণ শেয়ারবাজারে এলে তাদের কর কমবে।

জানা গেছে, সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয়ের হাতে বর্তমানে সাত বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ার রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি কোম্পানি বর্তমানে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত। সেগুলো হল- ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, আইপিডিসি ফাইন্যান্স এবং রেকিট অ্যান্ড বেনকাইজার। বাকি চার কোম্পানির শেয়ার ছাড়তে ১৬ এপ্রিল শিল্প মন্ত্রণালয়ে একটি বৈঠক হয়। শিল্প সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। এতে জানানো হয়, সরকারের কাছে কর্ণফুলী ফার্টিলাইজারের দুই কোটি দুই লাখ শেয়ার রয়েছে, যা ওই কোম্পানির মোট শেয়ারের ৪৪ শতাংশ। ইউনিলিভারের সাত লাখ ৬৬ হাজার বা ৪০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সরকারের হাতে। সানোফি বাংলাদেশের ৪৫.৩২ শতাংশ এবং নুভিস্তা ফার্মার ১২.৯২ শতাংশ শেয়ার সরকারের হাতে রয়েছে। এর একটি অংশ বাজারে ছাড়তে সরকারি এ উদ্যোগ।

ওই বৈঠকে ইউনিলিভারের প্রতিনিধি জাহিদ মালিতা বলেন, তাদের মূল কোম্পানি হল যুক্তরাজ্যের পিএলসি। এদের মতামত ছাড়া এ কোম্পানির শেয়ার ছাড়ার সুযোগ নেই। নোভিস্তা ফার্মার কোম্পানি সেক্রেটারি শামীম আহমেদ জানান, পরিশোধিত মূলধনের বিবেচনায় এ কোম্পানিকে বাজারে আনার বাধ্যবাধকতার মধ্যে পড়ে না। সানোফি বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. রিয়াদ মামুন বলেন, কোম্পানির উৎপাদন ও বিপণন বিবেচনায় আপাতত তাদের মূলধন বাড়ানোর প্রয়োজন নেই। কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিদের নেতিবাচক মনোভাব দেখে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের মূল কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়।

শিল্প মন্ত্রণালয় জানায়, বহুজাতিক অনেক কোম্পানি এ দেশে এসে একচেটিয়া ব্যবসা করছে। কিন্তু পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হচ্ছে না। কিন্তু অন্য দেশে এসব কোম্পানি ঠিকই পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত। এর মধ্যে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, থাইল্যান্ড ও অন্যান্য দেশে তালিকাভুক্তির নজির রয়েছে। ২০০৯ সালে গ্রামীণফোন তালিকাভুক্ত হওয়ার পর আর কোনো বহুজাতিক কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়নি। দেশের শীর্ষ বীমা কোম্পানি মেটলাইফ অ্যালিকোও এ তালিকায় রয়েছে। ওষুধ কোম্পানির মধ্যে আছে সেভরন, নোভাডিস এবং অ্যাভিনটিস। কোনোভাবেই এদের পুঁজিবাজারে আনা যাচ্ছে না।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে জানা গেছে, বর্তমানে বহুজাতিক ও জয়েন্ট ভেঞ্চার মিলে ১৭টি কোম্পানি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত। কোম্পানিগুলো হল- বাটা, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, বার্জার পেইন্টস, ফুয়াং ফুড, ফুয়াং সিরামিক, গ্লাসকো স্মিথ ক্লেইন, গ্রামীণফোন, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, লিন্ডে বিডি, ম্যারিকো বাংলাদেশ, রেকিট অ্যান্ড বেনকেইজার, সিঙ্গার বাংলাদেশ, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, লংকা-বাংলা ফাইন্যান্স, আরএকে সিরামিক এবং সিনো বাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির কারণে এসব কোম্পানি ১০ শতাংশ কর অবকাশ সুবিধা পায়। বিনিয়োগকারীদেরও এসব কোম্পানির ব্যাপারে আগ্রহ রয়েছে। ফলে বর্তমানে এসব কোম্পানির বাজার মূলধন ৩০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

 

শেয়ারবাজারনিউজ/আ

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.