জিডিপি-তে পুঁজিবাজারের অবদান বেশি না হলেও বিনিয়োগের জন্য আকর্ষণীয়- বাংলাদেশ ব্যাংক
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: বাজার মূলধনের ভিত্তিতে দেশের জিডিপি-তে পুঁজিবাজারের অবদান কম হলেও ডিভিডেন্ড ইয়েল্ডে (লভ্যাংশ প্রদানে) এবং মূল্য আয় অনুপাতে (পিই রেশিও) দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের পুঁজিবাজার বিনিয়োগের উপযোগী অবস্থানে রয়েছে। তাই দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য দেশের শেয়ারবাজার অত্যন্ত আকর্ষণীয় অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সম্প্রতি প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ ব্যাংক কোয়ার্টার্লি’ শীর্ষক প্রান্তিক প্রতিবেদনে প্রয়োজনীয় তথ্য ও উপাত্তের ভিত্তিতে এমনটাই উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ফয়সাল আহমেদ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৬-২০১৭ হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিক শেষে বাজার মূলধনের ভিত্তিতে দেশের জিডিপি-তে পুঁজিবাজারের অবদান ১৮.৫ শতাংশ। যেখানে দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর মধ্যে ভারতের পুঁজিবাজার জিডিপি’র ৮৩.৪০ শতাংশ; পাকিস্তান ৩৪.১ শতাংশ এবং জিডিপি-তে শ্রীলঙ্কার পুঁজিবাজারের অবদান ২১.৫ শতাংশ।
তবে জিডিপি-তে অবদান কম হলেও দেশের পুঁজিবাজার ডিভিডেন্ড প্রদানে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় অনেকটাই এগিয়ে। চলতি হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিক শেষে দেশের পুঁজিবাজারের ডিভিডেন্ড ইয়েল্ডের পরিমাণ ৩.৪৪। যা এর আগের প্রান্তিকে ছিল ৩.৮৭। আলোচিত সময়ে ভারত ও শ্রীলংকার ডিভিডেন্ড ইয়েল্ডের পরিমাণ হয়েছে ১.৩৬ ও ৩। আগের প্রান্তিকে এ দুটি দেশের পুঁজিবাজারের ডিভিডেন্ড ইয়েল্ডের পরিমাণ ছিল ১.৪৬ ও ২.৭৫। এছাড়া আলোচিত সময়ে থাইল্যান্ডের শেয়ারবাজারে ডিভিডেন্ড ইয়েল্ডের পরিমাণ ১.৯৩। দেখা যাচ্ছে ডিভিডেন্ড প্রদানে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর তুলনায় শীর্ষে অবস্থান করছে।
উল্লেখ্য, কোম্পানির শেয়ারদরের সঙ্গে বাৎসরিক ডিভিডেন্ড দেওয়ার অনুপাতকে ডিভিডেন্ড ইয়েল্ড বলে উল্লেখ করা হয়।
এদিকে, শেয়ারপ্রতি মূল্য আয় অনুপাতের (পিই রেশিও) বিচারেও উপমহাদেশের দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান শক্তিশালী। ভারত, চীন ও থাইল্যান্ডের তুলনায় বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের পিই রেশিও কম অর্থাৎ বাজার পরিস্থিতি অধিক বিনিয়োগ উপযোগী। আলোচিত সময়ে দেশের প্রধান স্টক এক্সচেঞ্জ ডিএসই’র সার্বিক পিই রেশিও’র পরিমাণ ১৬.৩৬। যেখানে একই সময় ভারতের ২২.৬৩, চীনের ১৬.৮৫ ও থাইল্যান্ডের পিই রেশিও ১৭.৩৮। দক্ষিণ এশিয়ায় পিই রেশিওতে বাংলাদেশ থেকে এগিয়ে রয়েছে শ্রীলঙ্কা এবং হংকং। এ দুটি দেশের পিই রেশিও যথাক্রমে ১১.৮২ এবং ১২.৭৯।
এর প্রভাবে জানুয়ারি, ২০১৭ থেকে মার্চ, ২০১৭ পর্যন্ত দেশের পুঁজিবাজারে প্রকৃত বিদেশী বিনিয়োগের পরিমাণ ৭.৬০ বিলিয়ন টাকা বেড়েছে। এর আগের প্রান্তিকে প্রকৃত বিদেশী বিনিয়োগ বেড়েছিল ৭.৫০ বিলিয়ন টাকা। এ সময় বিদেশি এবং প্রবাসীরা ১৭.৭০ বিলিয়ন টাকার শেয়ার কিনেছেন। বিপরীতে বিদেশিরা ১০ বিলিয়ন টাকার শেয়ার বিক্রি করেছেন। তবে ডিএসই-তে বিদেশীদের শেয়ার লেনদেন এখনও নিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। আলোচিত প্রান্তিকে ডিএসই’র মোট লেনদেনের ৩.২ শতাংশ লেনদেন বিদেশীরা করেছেন। যা এর আগের প্রান্তিকে ছিল ৫.৬ শতাংশ।
শেয়ারবাজারনিউজ/আ