আজ: বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৯ জুন ২০১৭, বৃহস্পতিবার |

kidarkar

অনুমোদন পায়নি প্রিমিয়ামের কোম্পানি: কমছে আইপিও’র সংখ্যা

IPO_SharebazarNewsশেয়ারবাজার রিপোর্ট: ২০১৬-১৭ অর্থবছরে পুঁজিবাজারে প্রাথমিক গণ প্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের পরিমাণ কমেছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে যেখানে আইপিও’র মাধ্যমে ৪৪৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা সংগ্রহ করা হয় সেখানে চলতি অর্থবছরে সংগ্রহের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৯০ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে আইপিও’র মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের পরিমাণ কমেছে ৫৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এছাড়া ২০১৫-১৬ অর্থবছরে যেখানে ৮টি কোম্পানিকে আইপিও’র অনুমোদন দেয়া হয়েছিল সেখানে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে অনুমোদন দেয়া হয়েছে ৬টি কোম্পানি।

তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে সদ্য বিদায় হতে যাওয়া অর্থবছরে কোনো কোম্পানিইকেই প্রিমিয়াম দিয়ে তালিকাভুক্তির অনুমোদন দেয়নি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ (বিএসইসি)। এর কারণ হিসেবে বিএসইসি জানিয়েছে, নতুন পাবলিক ইস্যু রুলস প্রণয়ন ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রয়োজন অনুযায়ী কোম্পানিগুলো কাগজপত্র দাখিল করতে না পারায় ২০১৬-১৭ অর্থবছরে আইপিও’র অনুমোদনের সংখ্যা কমার পাশাপাশি কোনো প্রিমিয়াম নিয়ে তালিকাভুক্তির অনুমোদন দেয়া হয়নি।

উল্লেখ্য, নতুন পাবলিক ইস্যু রুলসের বিধান অনুযায়ী কোনো কোম্পানিকে প্রিমিয়াম নিতে হলে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে আসতে হবে। আর এই পদ্ধতিতে রোড শো, বিডিং, অনুমোদন ইত্যাদি কার্যক্রম বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অনেক সময় অতিবাহিত হয়। এছাড়া এই আইন প্রণয়নের সময় যেসব প্রিমিয়ামের কোম্পানি পাইপলাইনে ছিলো তাদেরকেও নতুনভাবে বুক বিল্ডিংয়ের মাধ্যমে আবেদন করতে হয়।

২০১৬-১৭ সালের আইপিও: ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ছয় কোম্পানি ও তিন মিউচ্যুয়াল ফান্ড পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। এসব প্রতিষ্ঠান বাজারে ২০ কোটি শেয়ার ও ১৯ কোটি ইউনিটসহ মোট ৩৯ কোটি সিকিউরিটিজ সরবরাহ করে। বিনিময়ে কোম্পানিগুলো ২০০ কোটি টাকা ও ফান্ডের ব্যবস্থাপকরা ১৯০ কোটি টাকাসহ মোট ৩৯০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো: ইয়াকিন পলিমার, ফরচুন সুজ, প্যাসিফিক ডেনিমস, শেফার্ড ইন্ডাষ্ট্রিজ, নূরানী ডায়িং অ্যান্ড সোয়েটার, বিবিএস ক্যাবলস, ভ্যানগার্ড এএমএল রূপালী ব্যাংক ব্যালেন্সড ফান্ড, সিএমপিএম বিডিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ান এবং এসইএমএল আইবিবিএল শরিয়া ফান্ড।

এর মধ্যে ইয়াকিন পলিমার কোনো প্রকার প্রিমিয়াম ছাড়া ফেসভ্যালু ১০ টাকায় ২ কোটি শেয়ার ছেড়ে ২০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে।

ফরচুন সুজ কোনো প্রকার প্রিমিয়াম ছাড়া ফেসভ্যালু ১০ টাকায় ২ কোটি ২০ লাখ শেয়ার ছেড়ে ২২ কোটি টাকা সংগ্রহ করে।

প্যাসিফিক ডেনিমস কোনো প্রকার প্রিমিয়াম ছাড়া ফেসভ্যালু ১০ টাকায় ৭ কোটি ৫০ লাখ শেয়ার ছেড়ে ৭৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করে।

শেফার্ড ইন্ডাষ্ট্রিজ কোনো প্রকার প্রিমিয়াম ছাড়া ফেসভ্যালু ১০ টাকায় ২ কোটি শেয়ার ছেড়ে ২০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে।

নূরানী ডায়িং অ্যান্ড সোয়েটার কোনো প্রকার প্রিমিয়াম ছাড়া ফেসভ্যালু ১০ টাকায় ৪ কোটি ৩০ লাখ শেয়ার ছেড়ে ৪৩ কোটি টাকা সংগ্রহ করে।

বিবিএস ক্যাবলস কোনো প্রকার প্রিমিয়াম ছাড়া ফেসভ্যালু ১০ টাকায় ২ কোটি শেয়ার ছেড়ে ২০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে।

ভ্যানগার্ড এএমএল রূপালী ব্যাংক ব্যালেন্সড ফান্ড ফেসভ্যালু ১০ টাকায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৯ কোটি ৫০ লাখ ইউনিট ছেড়ে ৯৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করে।

সিএমপিএম বিডিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ান ফেসভ্যালু ১০ টাকায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৭ কোটি ইউনিট ছেড়ে ৭০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে।

এসইএমএল আইবিবিএল শরিয়া ফান্ড  ফেসভ্যালু ১০ টাকায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ২ কোটি ৫০ লাখ ইউনিট ছেড়ে ২৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করে।

২০১৫-১৬ সালের আইপিও: ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আট কোম্পানি ও দুই মিউচ্যুয়াল ফান্ড পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। এসব প্রতিষ্ঠান বাজারে ১৯ কোটি ৮৭ লাখ শেয়ার ও ৯ কোটি ৫০ লাখ ইউনিটসহ মোট ২৯ কোটি ৩৭ লাখ সিকিউরিটিজ সরবরাহ করে। বিনিময়ে কোম্পানিগুলো ৩৫৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা ও ফান্ডের ব্যবস্থাপকরা ৯৫ কোটি টাকাসহ মোট ৪৪৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা সংগ্রহ করে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো: কেডিএস এক্সেসরিজ, সিমটেক্স ইন্ডাষ্ট্রিজ, রিজেন্ট টেক্সটাইল, ইনফরমেশন টেকনোলজি কনসালট্যান্টস লিমিটেড, এসইএমএল লেকচার ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড, ভেনগার্ড এএমএল বিডি ফাইন্যান্স মিউচ্যুয়াল ফান্ড, ড্রাগন সোয়েটার অ্যান্ড স্পিনিং মিলস লিমিটেড, ডোরিন পাওয়ার জেনারেশনস অ্যান্ড সিস্টেমস লিমিটেড, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, ইভেন্স টেক্সটাইল লিমিটেড।

কেডিএস এক্সেসরিজ ১০ টাকা প্রিমিয়ামসহ প্রতিটি শেয়ার ২০ টাকায় ১ কোটি ২০ লাখ শেয়ার ছেড়ে ২৪ কোটি টাকা সংগ্রহ করে।

সিমটেক্স ইন্ডাষ্ট্রিজ ১০ টাকা প্রিমিয়ামসহ প্রতিটি শেয়ার ২০ টাকায় ৩ কোটি শেয়ার ছেড়ে ৬০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে।

রিজেন্ট টেক্সটাইল ১৫ টাকা প্রিমিয়ামসহ প্রতিটি শেয়ার ২৫ টাকায় ৫ কোটি শেয়ার ছেড়ে ১২৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করে।

ইনফরমেশন টেকনোলজি কনসালট্যান্টস লিমিটেড কোনো প্রকার প্রিমিয়াম ছাড়া ফেসভ্যালু ১০ টাকায় ১ কোটি ২০ লাখ শেয়ার ছেড়ে ১২ কোটি টাকা সংগ্রহ করে।

এসইএমএল লেকচার ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড ফেসভ্যালু ১০ টাকায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ২ কোটি ৫০ লাখ ইউনিট ছেড়ে ২৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করে।

ভেনগার্ড এএমএল বিডি ফাইন্যান্স মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ান ফেসভ্যালু ১০ টাকায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৭ কোটি ইউনিট ছেড়ে ৭০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে।

ড্রাগন সোয়েটার অ্যান্ড স্পিনিং মিলস লিমিটেড কোনো প্রকার প্রিমিয়াম ছাড়া ফেসভ্যালু ১০ টাকায় ৪ কোটি শেয়ার ছেড়ে ৪০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে।

ডোরিন পাওয়ার জেনারেশনস অ্যান্ড সিস্টেমস লিমিটেড ১৯ টাকা প্রিমিয়ামসহ প্রতিটি শেয়ার ২৯ টাকায় ২ কোটি শেয়ার ছেড়ে ৫৮ কোটি টাকা সংগ্রহ করে।

বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড কোনো প্রকার প্রিমিয়াম ছাড়া ফেসভ্যালু ১০ টাকায় ১ কোটি ৭৭ লাখ শেয়ার ছেড়ে ১৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা সংগ্রহ করে।

ইভেন্স টেক্সটাইল লিমিটেড কোনো প্রকার প্রিমিয়াম ছাড়া ফেসভ্যালু ১০ টাকায় ১ কোটি ৭০ লাখ শেয়ার ছেড়ে ১৭ কোটি টাকা সংগ্রহ করে।

 

শেয়ারবাজারনিউজ/ম.সা

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.