বয়কটের হুমকির পরও অনুশীলনে ক্রিকেটাররা
শেয়ারবাজার ডেস্ক: দুই পক্ষই অনড়। নতুন করে খেলোয়াড়দের চুক্তির কোনো প্রস্তাব দেয়নি ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়ান পেশাদার ক্রিকেটারদের সংগঠন এসিএ’ও সাফ জানিয়ে দিয়েছে চুক্তি না হওয়া পর্যন্ত কোনো সফরে যাবে না ক্রিকেটাররা। সফর বয়কটের হুমকি দিলেও আগের ঘোষণা অনুযায়ী গতকাল অনুশীলনে ফিরেছেন ‘এ’ দলের ক্রিকেটাররা। ব্রিসবেনে উসমান খাজা, গ্লেন ম্যাক্সওয়েলসহ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ডাক পাওয়া সবাই রিপোর্ট করেছেন ‘এ’ দলের কোচ জেসন গিলেস্পির কাছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় সিরিজ শুরু হওয়ার কথা ১২ জুলাই থেকে। তবে নতুন চুক্তি না হলে সেখানে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই খেলোয়াড়দের।
‘এ’ দলের কোচ হিসেবে জেসন গিলেস্পি একই সঙ্গে খুশি ও উদ্বিগ্ন পুরো ব্যাপারটা নিয়ে। তাঁর খুশির কারণ খেলোয়াড়দের অনুশীলনে ফেরা। আর উদ্বিগ্ন সফর নিয়ে দোলাচল না কাটায়, ‘কোচ হিসেবে খেলোয়াড়দের অনুশীলনে পাওয়ায় আমি খুশি। ওদের প্রস্তুত করতে যতটুকু সম্ভব করব আমি। সফরে যেতে চাইলে আমাদের সেই মানসিকতাতেই সব কিছু করতে হবে। ’ বোর্ড আর খেলোয়াড়দের চলা সংকট নিয়ে নিজের হতাশার কথাই জানালেন গিলেস্পি, ‘এটা হতাশার। ব্যাপারটা এত দূর গড়ানো উচিত ছিল না। আশা করছি দ্রুত একটা সমাধান বের হবে। ’
দুই পক্ষ যখন অনড় তখন সংকট কাটবে কিভাবে? সেই সমাধান দিলেন সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক। তাঁর নেতৃত্বের সময় দুইবার নতুন চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটাররা, দুবারই নির্ধারিত সময়ের পর। তাই গত ৩০ জুনের ডেডলাইন পেরিয়ে গেলেও এখনো উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু দেখছেন না ক্লার্ক। দুই পক্ষের জন্য তাঁর পরামর্শ, ‘আগের যে চুক্তিটা আছে, সেটাই ১২ মাসের জন্য বাড়ানো যেতে পারে। তাতে ক্রিকেটটা মাঠে থাকবে। এরপর না হয় দুই পক্ষ মিলে দীর্ঘমেয়াদি একটা সমাধান বের করুক। আমার সময়েও দিন-তারিখ মেনে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি কেউ। এ জন্য ১২ মাস মেয়াদ বাড়ালে কোনো সমস্যা দেখছি না আমি। ’
গত রবিবার সিডনিতে এসিএর বিশেষ সভায় ‘এ’ দলের অধিনায়ক উসমান খাজা জানিয়েছিলেন, ‘অনেক দিন খেলি না, মাঠে নামতে মুখিয়ে আছি আমি। ’ সাবেক অধিনায়ক হিসেবে ক্লার্কও জানেন প্রত্যেক খেলোয়াড় মাঠে নামতে এবং দলকে জেতাতে মরিয়া। এ জন্য মান অভিমান ভুলে দ্রুত ব্যাপারটা মিটিয়ে ফেলার তাগিদ তাঁর, ‘ক্রিকেটাররা খেলতে মুখিয়ে। দেশের জন্য তাঁরা নামতে চায়, এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। সব কিছু মিটিয়ে ফেলে ওদের আপনারা খেলার সুযোগ করে দিন। ইংল্যান্ডে নারীদের বিশ্বকাপে আমাদের খেলোয়াড়রা দারুণ খেলে দেশের সম্মান উজ্জ্বল করছে। ওরা কেউ পত্রিকা দেখছে না, কারণ ওখানে শুধুই চুক্তি নিয়ে টানাপড়েনের খবর। এটা ক্রিকেটের জন্য লজ্জার। ’
ক্লার্কের মতো অস্ট্রেলিয়ার সাবেক সব ক্রিকেটারই এমন পরিস্থিতির জন্য মর্মাহত। তাঁদের অন্যতম গ্রেগ চ্যাপেল। বোর্ডের ন্যাশনাল ট্যালেন্ট ম্যানেজারের দায়িত্বে থাকা এই কিংবদন্তির আশাবাদ দ্রুত একটা সমাধানের, ‘আমি আশা করছি দ্রুত একটা সমাধান বেরোবে আর সবাই মনোযোগটা ধরে রাখতে পারব ক্রিকেটে। গত কিছুদিনে যা কিছু হয়েছে এটা প্রত্যাশা করেনি কেউ। পরিস্থিতি আরো জটিল হওয়ার আগে সব ঠিক হয়ে যাবে বলে বিশ্বাস আমার। ’ সাবেক ক্রিকেটার ও এসিএর সাবেক সভাপতি ইয়ান হিলি আবার একহাত নিলেন দুই পক্ষকেই, ‘এটা এক বছর আগে সমাধান করে নেওয়া উচিত ছিল। দুই পক্ষ শুধু একে অন্যকে প্রস্তাব দিয়ে গেছে কিন্তু সুরাহা হয়নি কোনো। ’ এএপি
শেয়ারবাজারনিউজ/মু