আজ: বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৩ জুলাই ২০১৭, বৃহস্পতিবার |

kidarkar

বিসিএসের সিলেবাস অনুযায়ী দৈনিক পড়াশুনা: পর্ব-৩ (বাংলাদেশ বিষয়াবলী)

38-bcs-examination-1শেয়ারবাজার ডেস্ক: ৩৮তম বিসিএসের প্রিলি পরীক্ষার আবেদন শুরু হয়েছে। আগামী ১০ আগষ্ট পর্যন্ত আগ্রহীরা আবেদন করতে পারবেন। ইতিমধ্যেই বিসিএস প্রত্যাশীরা যার যার মতো প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমের এই বিভাগে শুরু হয়েছে বিসিএসের সিলেবাস অনুযায়ী দৈনিক পড়াশুনা। গত দুই পর্বে বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ের সিলেবাস ও সিলেবাসের প্রথম চ্যাপ্টার সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয়া হয়েছে। আজ বাংলাদেশ বিষয়াবলী এর ওপর সিলেবাস সম্পর্কে আলোচনা ও সিলেবাসের শুরু থেকে কি কি পড়তে হবে সে বিষয়ে আলোকপাত করা হলো।

মূলত সিলেবাস অনুযায়ী কৌশলগত ভাবে পড়লেই সফল হওয়া যায় এমনটাই জানিয়েছেন বিসিএস ক্যাডাররা। তাই আজকের পড়াশুনা শুরুর আগে প্রথমেই জেনে নেই বিসিএসের বাংলাদেশ বিষয়াবলী।

বাংলাদেশ বিষয়াবলী-৩০

ক) বাংলাদেশের জাতীয় বিষয়াবলী-০৬

খ) বাংলাদেশের কৃষি সম্পদ- ০৩

গ) বাংলাদেশের জনসংখ্যা ও আদমশুমারী-০৩

ঘ) বাংলাদেশের অর্থনীতি -০৩

ঙ) বাংলাদেশের শিল্প ও বাণিজ্য – ০৩

চ) বাংলাদেশের সংবিধান – ০৩

ছ) বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থা- ০৩

জ) বাংলাদেশের সরকার ব্যবস্থা- ০৩

ঝ) বাংলাদেশের জাতীয় অর্জন ও অন্যান- ০৩

তো শুরু করা যাক আজকের পড়াশুনা?

ক) বাংলাদেশের জাতীয় বিষয়াবলী

জাতীয় ভাষা : বাংলা|
জাতীয় প্রতীক : উভয় পাশে ধানের শীষবেষ্টিত পানিতে ভাসমান জাতীয় ফুল শাপলা|
তার মাথায় পাট গাছের পরস্পরসংযুক্ত তিনটি পাতা এবং উভয় পাশে দুটি করে তারকা|
জাতীয় পতাকা : সবুজের মাঝে লাল বৃত্ত|
জাতীয় সংগীত : আমার সোনার বাংলা (প্রথম ১০ লাইন)|
জাতীয় দিবস : ২৬ শে মার্চ|
জাতীয় ধর্ম : ইসলাম|
জাতীয় মসজিদ : বায়তুল মোকাররম
জাতীয় পাখি : দোয়েল|
জাতীয় বন : সুন্দরবন|
জাতীয় মাছ : ইলিশ|
জাতীয় ফল : কাঁঠাল|
জাতীয় গাছ : আম গাছ|
জাতীয় জাদুঘর : জাতীয় জাদুঘর, শাহবাগ|
জাতীয় গ্রন্থাগার : শেরে বাংলা নগর,আগারগাঁও|
জাতীয় কবি : কাজী নজরুল ইসলাম|
জাতীয় পার্ক : শহীদ জিয়া পার্ক|
জাতীয় স্টেডিয়াম : বঙ্গবদ্ধু স্টেডিয়াম|
জাতীয় খেলা : কাবাডি|

 

খ) বাংলাদেশের কৃষি সম্পদ

কৃষি দিবস- ১ অগ্রহায়ণ

মোট জমি- ৩ কোটি ৩৮ লাখ ৩৪ হাজার একর

মোট আবাদী জমি- ২ কোটি ১ লাখ ৫৭ হাজার একর

মাথাপিছু আবাদী জমি- ০.২৮ একর

কৃষির উপর নির্ভরশীল- ৮০% মানুষ

ফসল তোলার ঋতু- ৩টি (ভাদোই, হৈমন্তিক, রবি)

শস্য ২ প্রকার, রবিশস্য(শীতকালীন শস্য) ও খরিপ শস্য(গ্রীষ্মকালীন শস্য)

অর্থনীতিতে কৃষির অবদান- ২০.৬০%

শস্য ভাণ্ডার- বরিশাল

মোট কৃষিশুমারি- ৪টি

সর্বশেষ কৃষিশুমারি- ১৯৯৭

জাতীয় কৃষিনীতি- ১৯৯৯

কৃষি পণ্য- ধান, পাট, চা, গম, আখ , আলু, তামাক, ডাল, তেলবীজ, মসলা, ফল, মাংস, দুধ, পোল্ট্রি

 

ধান

প্রধান খাদ্যদ্রব্য- ধান

সবচেয়ে বেশি ধান হয়- ময়মনসিংহে

ধান উৎপাদনে পৃথিবীতে বাংলাদেশের অবস্থান- ৪র্থ

ধান উৎপাদনে শীর্ষদেশ- চিন

চাল রপ্তানিতে শীর্ষদেশ- থাইল্যান্ড

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটউট- বিরি(BRRI), জয়দেবপুরে

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটউট- বারি(BARI), জয়দেবপুর

 

পাট

প্রধান অর্থকরী ফসল- পাট

পাট গবেষণা ইন্সটিটিউট- ঢাকার শেরে বাংলা নগরে

পাট গবেষণা বোর্ড- মানিকগঞ্জ

সবচেয়ে বেশি পাট হয়- রংপুরে

পাট উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান- ২য়

পাট উৎপাদনে শীর্ষদেশ- ভারত

পাট রপ্তানিতে শীর্ষদেশ- বাংলাদেশ

জুটন- ৭০% পাট ও ৩০% তুলার সমন্বয়ে তৈরি এক প্রকার কাপড়

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পাটকল- আদমজী পাটকল (১৯৫১)

আদমজী পাটকল বন্ধ হয়- ৩০ জুন, ২০০২

আদমজী পাটকল আবার চালু হয়-

আন্তর্জাতিক পাট সংস্থার সদর দপ্তর- ঢাকায়

নারায়ণগঞ্জ- প্রাচ্যের ডান্ডি

 

চা

মোট চা বাগান- ১৬৩টি

বাণিজ্যিক ভিত্তিতে প্রথম চা চাষ শুরু হয়- ১৮৫৭ সালে

প্রথম চা বাগান- সিলেটের মালনিছড়ায়

সর্বশেষ চা বাগান তৈরি করা হয়েছে- পঞ্চগড়ে

অর্গানিক চা বাগান তৈরি করা হয়েছে- পঞ্চগড়ে

অর্গানিক চায়ের নাম- মীনা চা

সবচেয়ে বেশি চা জন্মে- মৌলভীবাজারে

চা গবেষণা কেন্দ্র- শ্রীমঙ্গলে

চা জাদুঘর- শ্রীমঙ্গলে

চা বোর্ড- চট্টগ্রাম

চা উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান- ১১তম

চা উৎপাদনে শীর্ষদেশ- ভারত

চা রপ্তানিতে শীর্ষদেশ- কেনিয়া

 

অন্যান্য

রেশম বেশি উৎপন্ন হয়- রাজশাহীতে

রেশম বোর্ড- রাজশাহীতে

তামাক হয়- রংপুরে

তুলা উৎপাদনে শীর্ষজেলা- যশোরে

রাবার হয়- কক্সবাজারের রামুতে (আরো চট্টগ্রাম, মধুপুর, পার্বত্য চট্টগ্রাম)

সবচেয়ে বড় সেচ প্রকল্প- তিস্তা বাঁধ প্রকল্প (রংপুর)

ইক্ষু গবেষণা কেন্দ্র- ঈশ্বরদীতে

ডাল গবেষণা কেন্দ্র- ঈশ্বরদীতে

মসলা গবেষণা কেন্দ্র- বগুড়া

আম গবেষণা কেন্দ্র- চাঁপাই নবাবগঞ্জ

জুমচাষ- পাহাড়ে চাষ করার এক রকম কৌশল

দেশের প্রথম কৃষি জাদুঘর- বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ-তে অবস্থিত

প্রধান ফসল উৎপাদন (Production of major crops):  উষ্ণ ও নাতিশীতোষ্ণ মন্ডলীয় নানা ধরনের ফসল চাষের জন্য বাংলাদেশের আবহাওয়া যথেষ্ট অনুকূল। বর্তমানে এদেশে প্রায় ১০০ জাতের ফসল উৎপন্ন হলেও ধানই প্রধান শস্য, ফলে বছরের তিনটি ফসল মৌসুমেই মোট ফসলি জমির (১৩ লক্ষ ৭০ হাজার হেক্টর) প্রায় ৭৭% জুড়ে ধানের চাষ হয়। মোট ধানক্ষেতের ৭৫ শতাংশ জমিতে ফলে উচ্চফলনশীল জাত। অন্যান্য ফসলের মধ্যে আছে গম, পাট, তৈলবীজ, ডাল, তামাক, তুলা, ইক্ষু, ফল ও শাকসবজি।

ফসলের জাত

ফসল-প্রজাতি জাতের সংখ্যা ফসলের জাতগুলি উৎপাদনের প্রক্রিয়া
ধান (Oryza sativa): আধুনিক জাত (৩৭), BINA (৬), ইঅট (২)৭টি। ৪৫ ৪৫টির মধ্যে BRRI কর্তৃক সংকরণের মাধ্যমে ৩০টি এবং প্রবর্তন ও নির্বাচনের মাধ্যমে BRRI BINA কর্তৃক মিউটেশন-উত্তর নির্বাচনের মাধ্যমে ৬টি। BAU কর্তৃক প্রবর্তন ও সংকরণের মাধ্যমে ২টি। সবগুলিই ১৯৬৮ সালের পরবর্তী।
ধান (Oryza sativa): পুরানো জাতভেদ ২৪ সবগুলি ভ্যারাইটি স্থলজ জাত থেকে নির্বাচিত। প্রবর্তিত হয়েছে নাইজেরিয়া (নাজিরশাইল) থেকে, গভীর পানির ধানের বংশাণুসম্পদ ও স্থানীয় বোরো ধানের স্থলজ জাতগুলি থেকে। প্রায় সবগুলিই ১৯৬৮ সালের পূর্ববর্তী।
গম (Triticum aestivum) ২৬ ২৬ CIMMYT প্রবর্তিত বংশাণুসম্পদ থেকে এই জাতগুলি নির্বাচিত। অন্যান্য উৎসের মধ্যে বিশ শতকের সত্তরের দশকের পর সাম্প্রতিক বছরগুলিতে সংকরায়ণ থেকে কিছু নির্বাচন।
বার্লি  (Hordeam vulgare) ২ পুরানো জাতের বংশাণুসম্পদ থেকে বাছাইকৃত, ১৯৮০ সালের পর নিবন্ধিত।
ভুট্টা (Zea mays) এগুলি সাদা-দানা জাতের একটির এবং স্বাভাবিক ভুট্টা-দানার রঙের অন্যগুলির বিমিশ্র নমুনা। শতকের সত্তরের দশকের মাঝামাঝির পর শস্যের জাত হিসেবে নির্বাচিত। ওই শতকের বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে ভুট্টার নির্বাচিত সংকর-জাত আমদানি করা হয়েছিল।
চীনা (Panicum miliarium) সম্ভবত বহুকাল আগে প্রবর্তিত স্থানীয় উদ্ভিদ-বংশাণুসম্পদ থেকে নির্বাচিত এবং ১৯৮০ সালের নিবন্ধিত।
কাউন (Setaria italica) স্থানীয়ভাবে প্রাপ্ত উদ্ভিদ-বংশাণুসম্পদ থেকে সংগৃহীত ও পরবর্তীকালে নির্বাচিত।
পাট (Corchorus capsularis) এটমপাট BINA কর্তৃক পুরানো জাত ডি-১৫৪ থেকে নির্বাচিত মিউট্যান্ট। অতিসম্প্রতি অবমুক্ত  বিশ শতকের নববইর দশকের গোড়ার দিকে) জাতগুলির ২টি (BJRI-৫, BJRI-৬) সংকর থকে উৎপন্ন। গত শতকের পঞ্চাশের দশকের প্রথম দিকে ভূমিজ জাত (land race) থেকে হয় ডি-১৫৪।
পাট (Corchorus olitorius)  ১টি এ অঞ্চলের পুরানো জাত, মূল উৎস থেকে প্রবর্তিত (বিশ শতকের চল্লিশের দশকের মাঝামাঝি) ভূমিজ জাত থেকে নির্বাচিত। অন্য দুটি ব্রাজিল ও উগান্ডা থেকে প্রবর্তিত জাত থেকে নির্বাচিত।
মেস্তা (Hibiscus sabdariffa)  ১ স্থানীয়ভাবে প্রাপ্ত উদ্ভিদ-বংশাণুম্পদ থেকে নির্বাচিত। কেনাফ (Hibiscus canabinus) ২  একটি যুক্তরাষ্ট্র এবং অপরটি ইরান থেকে প্রবর্তিত। উভয়ই BJRI মাধ্যমে চাষাধীন।
তুলা (Gossypium spp.) ভারত (২), পাকিস্তান (১) ও যুক্তরাষ্ট্র (৩) থেকে বাংলাদেশে প্রবর্তনের পর নির্বাচিত। চট্টগ্রাম তুলার জাতগুলি বহুবর্ষজীবী ও জাত হিসেবে নিবন্ধিত নয়। বর্তমানে এগুলি কেবল বসতবাড়িতেই লভ্য।
আলু (Solanum tuberosum) :   আধুনিক জাতসমূহ ১৫ বিশ শতকের পঞ্চাশের দশকের প্রথম দিক থেকে বিভিন্ন সময়ে হল্যান্ড (১১), যুক্তরাজ্য (১), ভারত (১) এবং CIP, পেরু (২) থেকে প্রবর্তিত। সম্প্রতি TPS (True Potato Seeds/আসল আলুবীজ) হিসেবে সংকরজাতগুলির প্রবর্তন ও পরীক্ষা চলছে।
আলু: দেশী জাতসমূহ (Solanum tuberosum) বহুকাল আগে ভারত থেকে প্রবর্তিত। এগুলির পরিবর্তে এখন অনেক এলাকায়ই উচ্চ-ফলনশীল জাতের চাষ চলছে।
মিষ্টিআলু (Ipomea batatas)  ৩টি বাংলাদেশের এবং ১টি করে ফিলিপাইন ও তাইওয়ান থেকে প্রবর্তিত।
আখ (Saccharum officinarum) ১২ চিনি উৎপাদনের জন্য ১১টি জাত চিনিকলে ব্যবহূত। একটি জাত চিবিয়ে খাওয়ার উপযোগী।বাংলাদেশী উদ্ভিদ-বংশাণুসম্পদ থেকে এগুলি বাছাইকৃত যা বহুকাল আগে উষ্ণ-মন্ডলীয় এশিয়া থেকে প্রবর্তিত হয়েছিল ।
ছোলা (Cicer arietinum)  ৫ প্রবর্তনের পর নির্বাচন মাধ্যমে ৪টি জাত উদ্ভাবিত। ১টি মিউটেন্ট থেকে বাছাইকৃত। এগুলির বংশাণুবৈচিত্র্য স্বল্প।
মসুর (Lens culinaris) বিশ শতকের ত্রিশের দশকের প্রথম দিকে ১টি বাংলাদেশের উদ্ভিদসম্পদ থেকে নির্বাচিত। আরেকটি সত্তরের দশকের শেষের দিকে সিরিয়া থেকে প্রবর্তিত এবং তা থেকে বাছাইকৃত।
মুগ (Vigna mungo) প্রবর্তিত ভারতীয় উৎস থেকে ২টি নির্বাচিত। অন্য ২টি BINA কর্তৃক বিকিরণের মাধ্যমে উদ্ভাবিত।
মাষকলাই (Vigna radiata) প্রজাতিটি এ অঞ্চলের না হওয়ায় এর চাষযোগ্য জাতগুলি প্রবর্তিত উৎস থেকে বাছাইকৃত। পশুখাদ্যশস্য হিসেবে এটি বিশ শতকের চল্লিশের দশকের গোড়ার দিকে নির্বাচিত হয়েছিল।
খেসারি (Lathyrus sativus) কৃষিজ জাতসমূহ থেকে বাছাইকৃত। এতে বিদ্যমান এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ থাকায় অধিক পরিমাণ আহারে ল্যাথারিজম রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
গোমটর (Vigna unguiculata) দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বহু বছর থেকে চাষকৃত স্থানীয় শস্যের জাতসমূহ থেকে নির্বাচিত। সম্ভবত দেশের দক্ষিণাঞ্চলে পর্তুগিজদের দ্বারা প্রবর্তিত। মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের মাধ্যমেও এসেছে  বলে ধারণা করা হয়।
ভারতীয় সরিষা (Brassica juncea) ২টি স্থানীয় উৎস থেকে এবং ১টি ভারতীয় উৎস থেকে উৎপন্ন। আরেকটি ইঅট কর্তৃক মিউটাজেন   প্রয়োগে উদ্ভূত মিউট্যান্ট থেকে নির্বাচিত।
বাদামী সরিষা (Brassica campestris) টরি-৭ হিসেবে নিবন্ধিত অত্যন্ত স্বল্পস্থায়ী সরিষার জাতটি এই এলাকার অন্যতম আদি নির্বাচন। এখনও ব্যাপকভাবে চাষ চলে। অন্য জাতটি টিএস-৭২, ১৯৭২ সালে টরি-উৎস থেকে বাছাইকৃত।
হলুদ সরিষা (Brassica campestris) ৪টি জাতের ১টি ১৯৭২ সালে চেকস্লোভাকিয়া থেকে প্রবর্তিত এবং ১৯৮২ সালে ‘সম্পদ’ নামে নিবন্ধিত। এসএস-৭৫ মুক্তিযুদ্ধের আগে পাকিস্তান থেকে প্রবর্তিত ও ১৯৮১ সালে নিবন্ধিত। অন্য ২টি মিউটেশন ঘটিয়ে উৎপন্ন।
রাই-সরিষা (Brassica napus) বিশ শতকের সত্তরের দশকের মাঝামাঝি প্রবর্তিত। B. campestris ও B. napus এই দুই প্রজাতির অনুপ্রবিষ্ট (introgressive) সংকর থেকে বাংলাদেশে আগাম পরিপক্কতার জন্য নির্বাচিত।
সূর্যমুখী (Helianthus annuus) মুক্ত-পরাগায়িত বিমিশ্র জাত। সুঅভিযোজিত সংকর জাতের বীজ প্রতি বছর বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। চাষাধীন জমির পরিমাণ অত্যন্ত সীমিত।
তিল (Sesamum indicum) বাংলাদেশে প্রকৃতিজাত উৎস থেকে ১টি নির্বাচিত। অন্যটি সিরিয়া থেকে প্রবর্তনের পর বাছাইকৃত।
সয়াবিন (Glycine max) ২টি যুক্তরাষ্ট্র থেকে। ১টি শ্রীলঙ্কা থেকে ভারত হয়ে আগত।
চীনাবাদাম (Arachis hypogea) অস্ট্রেলিয়া, ফিলিপাইন ও ভারত থেকে ১টি করে প্রবর্তিত। অন্য ২টিও বিদেশী, তবে বিশ শতকের চল্লিশের দশক থেকে বাংলাদেশে চাষাধীন।
হলুদ (Curcuma domestica) বহু বছর ধরে চাষকৃত স্থানীয় জাত থেকে নির্বাচিত।
গোলমরিচ (Piper nigrum) মূলত মালয়েশিয়া থেকে প্রবর্তিত এবং জাত হিসেবে অবমুক্তির জন্য ক্লোন থেকে নির্বাচিত।
পেয়ারা (Psidium guajava) ২টি জাতের ১টি থাইল্যান্ড থেকে প্রবর্তিত এবং অন্যটি স্থানীয় জাত থেকে নির্বাচিত।
পেঁপে (Carica papaya)  স্থানীয় উৎস থেকে বাছাইকৃত জাতটি অবমুক্ত করা হয়েছে। কয়েকটি সংকরজাতও পাওয়া যায়।
কলা (Musa spp.) : স্থানীয় ও বিদেশী বসরাই নামে প্রবর্তিত একটি কলার জাত অবমুক্ত করা হয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে দেশের ২টি গুরুত্বপূর্ণ জাত – অমৃতসাগর ও সবরি। বাংলাদেশে বিভিন্ন শ্রেণীর লোকেরা কাঁচকলা, চাঁপা, গণসুন্দরি, বিচিকলার (ডিপ্লয়েড) জাতগুলি চাষ করে।
বাঁধাকপি (Brassica oleracea var. capitata) ১৬ এগুলির বীজ আমদানিকৃত এবং চাষের জন্য আমদানিকারকদের মাধ্যমে প্রতি বছর আমদানির জন্য জাতসমূহ জাতীয় বীজ-ব্যাঙ্কে নিবন্ধিত হয়। এগুলির অভিযোজিত জাতগুলির দেশের অঞ্চলভেদে ফলনে পার্থক্য ঘটে।
ফুলকপি (Brassica oleracea var. botrytis) ১১ ১১টি জাতের মধ্যে কৃষকদের বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মাত্র ১টি বাংলাদেশে উৎপন্ন যা টাঙ্গাইলে চাষ হচ্ছে। অন্য সবগুলি অন্যান্য দেশ থেকে বীজ হিসেবে আমদানিকৃত এবং অধিকাংশই বিভিন্ন ধরনের সংকর।
মূলা (Raphanus sativus) সবগুলিই আমদানিকৃত। অধিকন্তু আছে জাপান থেকে প্রবর্তিত ‘তাসাকিসান’ জাত। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ জাত লাল-বোম্বাই (Red Bombay)।
পিঁয়াজ (Allium cepa)  তাহেরপুরী ও ফরিদপুর ভাটি বাংলাদেশের ২টি বাছাইকৃত জাত। অন্যগুলি ভারতীয় এবং আমদানিকৃত বীজে চাষ।
টমেটো (Lycopersicon lycopersicum) ১০  ১০টি জাতের সবগুলি আমদানিকৃত। এসব জাতের অধিকাংশই দীর্ঘদিন থেকে চাষাধীন।
মটর (Pisum sativum) সবগুলিই আমদানিকৃত। মটরকলাই নামে একটি বাংলাদেশে উৎপন্ন এবং কৃষকদের দ্বারা নির্বাচিত; সরিষা বা খেসারির সঙ্গে অধিকাংশ নিচু জমিতে চাষ হয়।
মিষ্টিভুট্টা (Zea mays) উভয়ই আমদানিকৃত, সংকর জাত।
শশা (Cucumis sativus) ২টিই বিদেশ থেকে প্রবর্তিত।
বেগুন (Solanum melongena) প্রজনন প্রক্রিয়ায় BARI কর্তৃক ৩টি জাত উদ্ভাবিত। অন্য ৬টি অতীতে স্থানীয় লোকদের দ্বারা ভূমিজ জাত থেকে নির্বাচিত।
লাউ (Lagenaria vulgaris)  ২টিই আমদানিকৃত ও প্রবর্তিত। ৩টি স্থানীয় জাতও রয়েছে।

ফসলের ক্ষতিকর প্রাণী ও রোগবালাই ক্ষতিকর প্রাণী (Pest):  শস্য আক্রমণকারী ও অর্থনৈতিক ক্ষতিসাধক কীটপতঙ্গ, মাইট, নিমাটোড, ইঁদুর অথবা পাখিসহ যে কোনো জীব। বর্তমান হিসাব মতো বাংলাদেশে শুধু কীটপতঙ্গঘটিত বাৎসরিক ফসলহানির পরিমাণ ধান ১৬%, পাট ১৫%, গম ১১%, আখ ২০%, শাকসবজি ২৫% এবং ডাল শস্য ২৫%। শস্যভুক বিভিন্ন প্রজাতির পাখি আর ইঁদুর ছাড়াও গুদামজাত শস্য ও সামগ্রীর অনিষ্টকারী মোট ৭০০ প্রজাতির কীটপতঙ্গ ও মাইট এ পর্যন্ত দেশে তালিকাভুক্ত হয়েছে, এর মধ্যে দুই শতাধিক প্রজাতি ‘মুখ্য’ অনিষ্টকারী হিসেবে গণ্য। ‘মুখ্য’ বা ‘গৌণ’ হিসেবে ক্ষতিকর কীটপতঙ্গের অবস্থান সাধারণত কোনো নির্দিষ্ট বাস্ত্ততন্ত্রের বিদ্যমান পরিস্থিতির উপর নির্ভরশীল।

শস্য প্রধান কীটপতঙ্গের বর্গ/গোত্র প্রজাতি সংখ্যা
দানাশস্য (ধান, গম, ভুট্টা ইত্যাদি) Lepidoptera: Pyralidae, Noctuidae Coleoptera: Chrysomelidae Homoptera: Cicadellidae ৩৪
ডালশস্য (মটরকলাই, ছোলা, মুগ ইত্যাদি) Lepidoptera: Noctuidae, Pyralidae, Pterophoridae, Arctiidae, Lycaenidae Diptera: Agromyzidae Homoptera: Aphididae ১৩
তৈলবীজ (সরিষা, তিল, সয়াবিন, চীনাবাদাম, সূর্যমুখী ইত্যাদি) Homoptera: Aphididae, Cicadellidae Lepidoptera: Sphingidae, Arctiidae, Gelechiidae, Noctuidae, Lymantridae Hymenoptera: Tenthredinidae Diptera: Agromyzidae ১৯
আখ Lepidoptera: Pyralidae, Noctuidae Isoptera: Termitidae Coleoptera: Scarabaeidae Homoptera: Lophopidae, Aleyrodidae, Aphididae ১৬
পাট Lepidoptera: Arctiidae, Noctuidae Coleoptera: Apionidae Orthoptera: Gryllidae Acarina (mite): Tetranichidae,Tarsonemidae
তুলা Homoptera: Cicadellidae, aphididae, Aleyrodidae Hemiptera: Pyrrhocoridae Lepidoptera: Noctuidae, Pyralidae
কন্দজাতীয় ফসল (আলু, মিষ্টিআলু, কচু) Lepidoptera: Noctuidae, Pyralidae, Arctiidae Sphingidae Coleoptera: Coccinellidae, Curculionidae, Chrysomelidae Homoptera: Cicadellidae, Aphididae ১৭
শাকসবজি (লাউ-কুমড়া, শিম, ঢেঁড়স বেগুন, টমেটো, বাঁধাকপি, ফুলকপি ইত্যাদি) Coleoptera: Chrysomelidae, Coccinellidae Diptera: Tephritidae Lepidoptera: Noctuidae, Pyralidae, Yponomeutidae, Lycaenidae, Pieridae Homoptera: Aphididae, Cicade

 

বিসিএসের সিলেবাস অনুযায়ী দৈনিক পড়াশুনা: পর্ব-১ (বাংলা)

বিসিএসের সিলেবাস অনুযায়ী দৈনিক পড়াশুনা: পর্ব-২ (ইংরেজি)

 

শেয়ারবাজারনিউজ/ম.সা

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.