সামনে আরও ভাল হবে শেয়ারবাজার
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহের ৫ কার্যদিবসের মধ্যে ৪ দিনই বেড়েছে সূচক। আর উত্থানের মাত্রাও ছিলো অত্যধিক। আর প্রথম কার্যদিবসে চতুর্থ কার্যদিবসে ৩৯ পয়েন্ট কমে কিছুটা কারেকশন হয়েছে সূচকে। তাই গত সপ্তাহে (৯-১৩ জুলাই) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্য সূচক ও লেনদেন উভয় বেড়েছে। বাজারে সূচক ও লেনদেন পাশাপাশি বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। আলোচিত সপ্তাহটিতে লেনদেন বেড়েছে প্রায় ৭১ শতাংশ। আর প্রধান সূচক বেড়েছে ৭.০৫ শতাংশ।
ডিএসই জানায়, ভাল মুনাফা আসতে হলে প্রতিদিন গড়ে ৮০০ কোটি টাকা লেনদেন হওয়া দরকার। তবে চলতি নতুন (২০১৭-১৮) অর্থবছরের প্রথম সপ্তাহ শেষে ডিএসইতে গড় লেনদেন হয়েছে হাজার কোটি টাকারও বেশি। দ্বিতীয় সপ্তাহে একই ধারা অব্যাহত রয়েছে। যা বাজারের জন্য ইতিবাচক।
পুজিবাজার বিশ্লেষকরা আশাবাদ ব্যাক্ত করে বলেন, পুঁজিবাজারের সার্বিক পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক পর্যায়ে রয়েছে। “সামনে বাজার আরও ভালো হবে”, কারণ বাজার যে ভালো হবে তার সবগুলো লক্ষনই বিদ্যমান। মার্কেটের ক্রমাগত চাপের কারণে মার্কেট টাইম বৃদ্ধির চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিনিয়োগকারীদের সচেতন করতে শিক্ষামূলক প্রোগ্রাম করছে। আর আর্থিক বছর শেষ হওয়ার কারণে কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশের একটা ইতিবাচক প্রভাব অচিরেই বাজারে পড়বে বলেও মনে করছেন ওই বিশ্লেষকরা।
এ প্রসঙ্গে একাধিক মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দেশের পুঁজিবাজারে টানা উত্থান অব্যাহত থাকায় গত বৃহস্পতিবার নতুন রেকর্ড অবস্থানে চলে যায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্রড ইনডেক্স ডিএসইএক্স। অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে সেদিন সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছে সূচকটি। সূচক সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছে যাওয়ায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের একটি অংশের মধ্যে একধরনের মনস্তাত্ত্বিক ভীতি তৈরি হয়। পাশাপাশি কয়েক দিনের টানা মূল্যবৃদ্ধির কারণে বুধবার বিনিয়োগকারীদের একটি অংশের মধ্যে মুনাফা তুলে নেওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়। দুইয়ে মিলে বিক্রির চাপটা বেড়ে যায়। ফলে বুধবার দরপতন ঘটে শেয়ারের। যার নেতিবাচক প্রভাব গিয়ে পড়ে সূচক ও লেনদেনে। তবে সপ্তাহশেষে সার্বিক বাজারে এর কোন প্রভাব পড়ে নি।
এদিকে সাপ্তাহিক বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সব ধরণের সূচকের সঙ্গে বেড়েছে লেনদেন। গত সপ্তাহে ৫ কার্যদিবস লেনদেন মোট ৫ হাজার ৬৬৯ কোটি ১৪ লাখ ৮৭ হাজার ৮৩৯ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। তবে এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ৫ হাজার ২৯৫ কোটি ৫৬ লাখ ১২৫ টাকা। হিসাব ধরলে দেখা যায়, সমাপ্ত সপ্তাহে লেনদেন বেড়েছে ৩৭৩ কোটি ৫৮ লাখ ৫ হাজার ৭০৪ টাকা বা ৭.০৫ শতাংশ।
সপ্তাহশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স বা ডিএসইএক্স সূচক বেড়েছে ১.৪৮ শতাংশ বা ৮৫.২১ পয়েন্ট। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসই৩০ সূচক বেড়েছে ১.৩১ শতাংশ বা ২৭.৫৯ পয়েন্ট। অপরদিকে, শরীয়াহ বা ডিএসইএস সূচক বেড়েছে ১.৫৩ শতাংশ বা ২০.০২ পয়েন্টে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ৩৩৪টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৯৭টি কোম্পানির। আর দর কমেছে ১১৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৯টির। আর লেনদেন হয়নি ২টি কোম্পানির শেয়ার।
আর সমাপ্ত সপ্তাহে ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯১.৪২ শতাংশ। ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানির লেনদেন হয়েছে ৪.৩৭ শতাংশ। ‘এন’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২.৩৯ শতাংশ। ‘জেড’ ক্যাটাগরির লেনদেন হয়েছে ১.৮৩ শতাংশ।
এদিকে, সপ্তাহজুড়ে চট্টগ্রাম স্টক এক্সেচঞ্জের (সিএসই)সার্বিক সূচক বেড়েছে ১.৫১ শতাংশ বা ১৬৩ পয়েন্ট। সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ২৯১টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৭৮টি কোম্পানির, দর কমেছে ৯৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৭টির। এগুলোর ওপর ভর করে সপ্তাহশেষে লেনদেন হয়েছে ৩৫৫ কোটি ২০ লাখ ১৪ হাজার ১৯০ টাকার শেয়ার।
শেয়ারাবাজারনিউজ/মু