আজ: শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ইং, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২০ জুলাই ২০১৭, বৃহস্পতিবার |

kidarkar

আপেলের বিচিতে রয়েছে বিষ!

appleশেয়ারবাজার ডেস্ক: সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর ফল হিসেবে সবসময় আপেলের নাম সবার আগে উচ্চারিত হয়। কিন্তু এই পুষ্টিকর ফলেও রয়েছে ভয়াবহ বিষ। এতটাই ভয়াবহ যে, তা মানুষের জীবনও কেড়ে নিতে পারে। আপেলের বিচিতে রয়েছে সায়ানাইড। যা মানুষের হজম শক্তি নষ্ট করে দেয়।

পটাশিয়াম সায়ানাইড উচ্চমাত্রার বিষাক্ত পদার্থ যার অল্প মাত্রার ডোজই ডেকে আনতে পারে মৃত্যু। পটাশিয়াম সায়ানাইডের স্বাদ তিক্ত এলমন্ডের মত কিন্তু সবাই এই স্বাদ পায় না। KCN কে মূলত স্বর্ণ বিশোধনে,জৈব যৌগ সংশ্লেষে ও ইলেকট্রোপ্লেটিংএর কাজে ব্যবহার করা হয়। KCN কে হাইড্রোজেন সায়ানাইড (HCN) ও পটাশিয়াম হাইড্রক্সাইড থেকে তৈরি করা হয়।

HCN KOH → KCN H2O অন্যভাবে, ফর্মামাইড ও KOH এর বিক্রিয়ায় এটা তৈরি হয়। HCONH2 KOH → KCN 2H2O প্রতিবছর প্রায় 50000 টন KCN তৈরি হয়। স্বর্ণ শিল্পে স্বর্ণের সাথে, KCN, পানি ও অক্সিজেনের বিক্রিয়ায় তৈরি হয় পটাশিয়াম গোল্ড সায়ানাইড।

বিষক্রিয়া : পটাশিয়াম সায়ানাইড সরাসরি কোন বিষক্রিয়া ঘটায় না। এর ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য হাইড্রোজেন সায়ানাইড (HCN) গ্যাস তৈরি হতে হয়। এই HCN ই মারাত্মক। গুরুতর বিষক্রিয়া। সায়ানাইড বিষক্রিয়াকে হিসটোটক্সিক হাইপোক্সিয়া বলা হয় কারণ এই বিষের জন্য কোষের শ্বসনক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। সায়ানাইড এমন বাধাদানকারী বিষ যা মাইটোকন্ড্রিয়াল সাইটোক্রোম সি অক্সিডেজের উপর ক্রিয়া করে এবং অক্সিডেটিভ ফসফোরাইলেশন বন্ধ করে দেয়। এই কারণে শরীরে কোন শক্তি উৎপাদিত হতে পারে না। কোষে অক্সিজেনের অভাবে অবাত শ্বসন ঘটে এবং ল্যাকটিক এসিড তৈরি হয়

সায়ানাইডের কারণে আক্রান্তের শরীরে লাল হয়ে যায় কারণ শরীরের টিস্যুগুলো রক্তের অক্সিজেন ব্যবহার করতে পারে না। সায়ানাইড বিষক্রিয়া নানাভাবে ঘটতে পারে তবে HCN গ্যাস প্রশ্বাসের সময় নিলে এটা হয়। বিভিন্ন শিল্প কারখানা যেখানে নাইট্রাইল সমৃদ্ধ জিনিসের ধোয়া তৈরি হয় যেমন – উল,সিল্ক,পলিইউর ইথিন বা ভিনাইল তৈরি হয় সেখান থেকে সায়ানাইড নির্গত হয়। যদি প্রশ্বাসের সাথে সায়ানাইড নেওয়া হয় তবে মাথা ঝিমঝিম করে, দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে, শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, হৃৎপিন্ডর কাজ করার ক্ষমতা কমে যাওয়া বা নষ্ট হয়ে যাওয়া, সংজ্ঞাহীনহয়ে কোমায় চলে যাওয়া এবং পরিশেষে মৃত্যু ঘটে।

একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের মৃত্যুর জন্য 200-300 mg পটাশিয়াম বা সোডিয়াম সায়ানাইডই যথেষ্ট। অল্প মাত্রায় নিত্য গ্রহণ হিসেবে বিভিন্ন কীটনাশক ও তামাকের ধোয়ায় সায়ানাইড থাকে। বিভিন্ন খাবারেও অল্প মাত্রায় সায়ানাইড থাকে যেমন – এলমন্ড, এপরিকট কারনেল, আপেল ও কমলালেবুর বীজ, কাসাভা ইত্যাদি। অনেকদিন ধরে এসব খাবার গ্রহণ করলে(আফ্রিকার উষ্ণমন্ডলে কাসাভার মূলকে প্রধান খাবার হিসেবে অনেকে খেয়ে থাকে) দুর্বলতাসহ নানা উপসর্গ দেখা যায়। তাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ স্থায়ীভাবে অবশ হয়ে যায়, স্নায়ুর ক্ষতি হয় এবং অনেক নারীর গর্ভপাত ঘটে।

শেয়ারবাজারনিউজ/মু

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.