বিআইএফসি’র চেয়ারম্যান ডিএসই’র সাবেক পরিচালক: সুদিন ফেরানোর প্রত্যাশা
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিন্যান্স কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফসি) নতুন পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান পদে ১ আগস্ট থেকে দায়িত্ব পালন করছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক পরিচালক রুহুল আমিন, এফসিএ। কোম্পানিটির পর্ষদে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন পর্যবেক্ষক দায়িত্ব পালন করছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই পর্যবেক্ষক জানান, কোম্পানিটির আর্থিক অবস্থা নাজুক। আর অনিয়ম দুর্নীতির কারণে ২০১৬ সালে কোম্পানিটির পর্ষদ ভেঙ্গে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে বর্তমানে নতুন পর্ষদে কিছু যোগ্য ব্যক্তি পরিচালক পদে যোগ দিয়েছেন। কোম্পানিটির দূরাবস্থা কাটিয়ে ভাল অবস্থায় নিয়ে আনা সম্ভব এমন প্রত্যাসা নতুন পর্ষদের প্রতি করা যায়।
জানা যায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহযোগিতায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সুকুজা ভেঞ্চার লিমিটেড ও কাঞ্চি ভেঞ্চার লিমিটেড নামক দুটি স্থানীয় প্রতিষ্ঠান বিআইএফসির পর্ষদের দায়িত্বে আসে। প্রথমে সুকুজা ভেঞ্চারের প্রতিনিধি হিসেবে ইরফান উদ্দীন আহমেদ পর্ষদ চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তবে পারিবারিক কারণ দেখিয়ে চার মাসের মাথায় তিনি পদত্যাগ করেন। ১ আগস্ট নতুন পর্ষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন ডিএসই’র সাবেক পরিচালক।
তবে গত এক বছরের মধ্যে বিআইএফসির পর্ষদে একাধিকবার পরিবর্তনের কারণে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারহোল্ডাররা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন।
এদিকে বিআইএফসি সূত্রে জানা গেছে, এখনো নামে বেনামে বিআইএফসি’র সাবেক চেয়ারম্যান ও উদ্যোক্তা আবদুল মান্নানের ৬০ শতাংশের বেশি শেয়ার আছে। স্বাভাবিকভাবেই কোম্পানিতে এখনো তার সবচেয়ে বেশি ভোট রয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হস্তক্ষেপে বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ব্যাংকার, পেশাদার হিসাববিদদের আনা হয়েছে। তাদের মাধ্যমে বিপর্যস্ত প্রতিষ্ঠানটিকে তলানি থেকে তুলে আনার চেষ্টা চলছে। এখনো আবদুল মান্নানের কাছে বিআইএফসির ৮০০ কোটি টাকার বেশি পাওনা রয়েছে, যা তিনি পরিশোধ করছেন না। তা আদায়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। তবে নতুন করে যাতে প্রতিষ্ঠানটির আর কোনো ঋণ খেলাপি না হয়, সে ব্যাপারে নতুন পর্ষদ সচেষ্ট রয়েছে। সেসঙ্গে কীভাবে প্রতিষ্ঠানটির অবস্থা ভালো করা যায়, সে চেষ্টা চলছে।
বিআইএফসির বর্তমান চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বলেন, প্রতিষ্ঠানটিকে আবার ভালো অবস্থায় নিয়ে আসতে আমরা কাজ করছি। অবশ্য এটা বেশ চ্যালেঞ্জিং একটা কাজ। তবে আমরা আশাবাদী যে আমরা পারব। নতুন পর্ষদ দায়িত্ব নেয়ার পরে ঋণ ব্যবস্থাপনার বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। যাতে করে নতুনভাবে আর কোনো ঋণ খেলাপি না হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্যবেক্ষক জানান, প্রতিষ্ঠানটিকে ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করার জন্য সুকুজা ভেঞ্চার ও কাঞ্চি ভেঞ্চার পর্ষদের দায়িত্ব নিয়েছে। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন দক্ষ লোক রয়েছেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকেও তাদেরকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেয়া হয়েছে। আশা করছি, তারা পেশাদারিত্বের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটিকে পরিচালনা করবেন।
বিআইএফসির পর্ষদে বর্তমানে সুকুজা ভেঞ্চারের ৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ ও কাঞ্চি ভেঞ্চারের ৩ দশমিক ৫২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। এর মধ্যে সুকুজার প্রতিনিধি হিসেবে রুহুল আমিন ও জামিল মাহমুদ এবং কাঞ্চির প্রতিনিধি হিসেবে নিয়াজ আহমেদ পর্ষদে রয়েছেন।
শেয়ারবাজারনিউজ/আ